জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সাজশন ও অনুশীলন ও পরীক্ষায় ভালো করার জন্য দিয়েছি উত্তরসহ। আশাকরি তোমাদের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে এই আর্টিকেলটি সহায়তা করবে।

মেন্ডেলিয়ান ইনহেরিট্যান্সসমূহ ও ক্রোমোজোম তত্ত্ব

প্রশ্ন-১. মেন্ডেলের পরীক্ষায় সফলতার কারণগুলো লেখো।
উত্তর: নিম্নলিখিত কারণে মেন্ডেল সাফল্য অর্জন করে মেন্ডেল তাঁর গবেষণার জন্য স্বপরাগী উদ্ভিদ মটরশুঁটি গাছ নির্বাচন করেছিলেন। ফলে এতে প্রাকৃতিক উপায়ে চারিত্রিক সংমিশ্রণ হয়নি।তিনি সাত জোড়া বৈসাদৃশ্যময় চরিত্র গ্রহণ করেন। সৌভাগ্যবশত এ সাত জোড়া জিনই পৃথক পৃথক ক্রোমোসোমে উপস্থিত ছিল। প্রতিটি পরীক্ষায় তিনি সংখ্যাতাত্ত্বিক হিসাবের মাধ্যমে ব্যাখ্যা দিতে সচেষ্ট ছিলেন। এছাড়াও তিনি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে তাঁর ক্রমের বংশধরগুলোর বিভিন্ন ফিনোটাইপ ও তাদের সংখ্যার হিসাব রাখেন এবং বিভিন্ন ফিনোটাইপের মধ্যে একটা অনুপাত নির্ণয় করতে সমর্থ হন। অর্থাৎ যথাযথভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে মেন্ডেল সাফল্য লাভ করেন।

প্রশ্ন-২. বিশুদ্ধ জীব বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কোনো জীবের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণের জিন বা অ্যালিল দুটি একই ধরনের হলে সংশ্লিষ্ট জাইগোটকে হোমোজাইগোট বলে। আর হোমোজাইগোট থেকে যে জীব উৎপন্ন হয় তাকে হোমোজাইগাস বা বিশুদ্ধ জীব বলে। যেমন-লম্বা বৈশিষ্ট্যের জন্য জিন যদি T হয়, তাহলে বিশুদ্ধ জীবের হোমোজাইগোটের প্রকৃতি হবে TT।

প্রশ্ন-৩. মেন্ডেলের ১ম ও ২য় সূত্রের মধ্যকার মূল পার্থক্য কী?

উত্তর: মেন্ডেলের ১ম সূত্রকে বলা হয় পৃথকীকরণ সূত্র। এক্ষেত্রে সংকর জীবের বিপরীত বৈশিষ্ট্যের জিনগুলো পরিবর্তিত না হয়ে পাশাপাশি অবস্থান করে এবং জননকোষ সৃষ্টির সময় পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায়। কিন্তু মেন্ডেলের ২য় সূত্রে সংকর জীবে জননকোষ সৃষ্টির সময় বিপরীত বৈশিষ্ট্য গুলো জোড়া ভেঙ্গে একে অপর থেকে স্বাধীনভাবে বিন্যস্ত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন জননকোষে প্রবেশ করে।

প্রশ্ন-৪. জিনোটাইপ বলতে কী বোঝায়? (ব.বো. ১৬)
উত্তর: কোন জীবের লক্ষণ নিয়ন্ত্রণকারী জিনযুগলের গঠনকে জিনোটাইপ বলে। একটি জীবের জিনোটাইপ তার পূর্ব বা উত্তর পুরুষ থেকে জানা যায়। একটি প্রজাতির লম্বা গাছের জিনোটাইপ হতে পারে TT বা Tt আর এক্ষেত্রে খাট গাছটির জিনোটাইপ হবে ।তা

প্রশ্ন-৫. ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ বলতে কী বোঝায়? চ. বো. ১৭: সি. বো,, য, বো, ১৫
উত্তর: জিনোটাইপ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত জীবের বাহ্যিক লক্ষণকে ফিনোটাইপ বলে। এটি জীবের আকার, আকৃতি, বর্ণ প্রভৃতি প্রকাশ করে। অন্যদিকে, কোনো জীবের লক্ষণ নিয়ন্ত্রণকারী জিন যুগলের গঠনকে জিনোটাইপ বলে। একটি জীবের জিনোটাইপ তার পূর্ব বা উত্তর পুরুষ থেকে জানা যায়।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

মেন্ডেলিয়ান ইনহেরিট্যান্সসমূহ ও ক্রোমোজোম তত্ত্ব

প্রশ্ন-৬. সংকর জীব বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: দুটি বিপরীত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন বিশুদ্ধ জীবের মধ্যে প্রজননে সৃষ্ট সন্তানদের সংকর জীব বলে। সংকর জীব সর্বদা হেটারোজাইগাস প্রকৃতির হয়। বিশুদ্ধ বিপরীত বৈশিষ্ট্যের জীবদের সংকরায়নে সৃষ্ট প্রথম সন্তানদের F1 জনু বা প্রথম সংকর পুরুষ বলে। F1 জনুর সংকর জীবদের মধ্যে আন্তঃপ্রজননে সৃষ্ট জীবদের F2 জনু বা দ্বিতীয় সংকর পুরুষ বলে।

প্রশ্ন-৭. প্রকট ও প্রচ্ছন্ন জিন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: বিপরীত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হোমোজাইগাস জীবে সংকরায়নের ফলে F1 বংশে সৃষ্ট হেটারোজাইগাস জীবে যে জিনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় তাকে প্রকট জিন এবং অপ্রকাশিত বৈশিষ্ট্যের জিনটিকে প্রচ্ছন্ন জিন বলে যেমন-F1 জনুর মটরগাছে লম্বা ও খাটো উভয় ধরনের বৈশিষ্ট্যের জন্য একটি করে জিন থাকলেও (T1) শুধুমাত্র লম্বা বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়। অতএব এখানে লম্বা বৈশিষ্ট্য প্রকট এবং খাটো বৈশিষ্ট্য প্রচ্ছন্ন জিন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

প্রশ্ন-৮, টেস্ট ক্লস ও ব্যাক ক্রস বলতে কী বোঝায়? (ঢা.বো. ১৭)
উত্তর: F1 বা F2 জনুর জীবের সাথে মাতৃবংশের বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন লক্ষণ বিশিষ্ট জীবের যে ক্রস করা হয় তাকে টেস্ট ক্লস বলে। F1 বা F2 জনুর বংশধরগুলো হোমোজাইগাস না হেটারোজাইগাস তা জানার জন্য টেস্ট ব্রুস করা হয়। F1 জনুর হেটারোজাইগাস জীবের সাথে পিতৃ-মাতৃ-বংশায় যে কোন সদস্যের ব্রুসকে ব্যাক ক্রস বলে।

প্রশ্ন-৯. টেস্ট ক্লসে অনুপাত ১:১ হয় কেন?

উত্তর: টেস্ট ক্রসে অপত্য বংশের জীবকে মাতৃবংশের বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন লক্ষণবিশিষ্ট জীবের সাথে ক্রস করানো হয় বলে সব সময় দুটি সংকর প্রকট বৈশিষ্ট্যের জীব এবং দুটি বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যের জীব পাওয়া যায়। আর এ কারণে টেস্ট ক্রসে অনুপাত সবসময় ১:১ হয়।

প্রশ্ন-১০. নিয়ন্ত্রক জিন কীভাবে প্রোটিন তৈরি নিয়ন্ত্রণ করে?
উত্তর: নিয়ন্ত্রক জিন চালক জিনকে নিয়ন্ত্রণ করে। নিয়ন্ত্রক জিন একটি নিয়ন্ত্রণকারী প্রোটিন তৈরি করে (repressor নামে পরিচিত) যা চালক জিনের সাথে যুক্ত হয় এবং চালক জিনের RNA পলিমারেজকে mRNA তৈরি সূচনা করতে বাধা দান করে। এর ফলে অপেরনসমূহ প্রোটিন তৈরি করতে পারে না অর্থাৎ কর্মক্ষম হয় না।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

প্রশ্ন-১১. জিনকে বংশগতির মৌলিক একক বলা হয় কেন?
উত্তর: জিনকে বংশগতির মৌলিক একক বলা হয়। কারণ, জিন DNA অণুর একটি খণ্ডাংশ যা বংশ থেকে বংশান্তরে জীবের বৈশিষ্ট্য বহনকরে বংশগতির ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে। তাই জিনকে বংশগতির মৌলিক একক বলা হয়।

মেন্ডেলিয়ান ইনহেরিট্যান্সসমূহ ও ক্রোমোজোম তত্ত্ব

প্রশ্ন-১২. মেন্ডেলের ১ম সূত্রটি লেখো।
উত্তর: মেন্ডেলের প্রথম সূত্র: সংকর জীবে বিপরীত বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী ফ্যাক্টর বা জিনগুলো একত্রে অবস্থান করলেও এরা মিশ্রিত বা পরিবর্তিত বা বিনষ্ট হয় না। জননকোষ তৈরির সময় এরা পরস্পর পৃথক হয়ে ভিন্ন ভিন্ন জননকোষে প্রবেশ করে।

প্রশ্ন-১৩. সকল টেস্ট ক্রসই ব্যাক ব্রুস কিন্তু সকল ব্যাক ক্লস টেস্ট ক্রস নয় কেন?

উত্তর: টেস্ট ক্রস এ F1 বা F2 জনুর বংশধরগুলো হোমোজাইগাস না হেটারোজাইগাস তা জানার জন্য মাতৃ বংশের বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন লক্ষণ বিশিষ্ট জীবের সাথে ক্রস করানো হয়। অপরদিকে ব্যাক ক্রস এ F1 জনুর একটি হেটারোজাইগাস জীবের সাথে পিতৃমাতৃ বংশীয় এক সদস্যের ক্রস করানো হয়। টেস্ট ক্রস এ F1 ওF2 জনুর বংশধরকে মাতৃবংশের বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন লক্ষণ বিশিষ্ট জীবের সাথে ব্রুস করানো হয় কিন্তু ব্যাক ক্রসে শুধুমাত্র F1 জনুর জীবের তার মূল পিতৃ অথবা মাতৃ জিনোটাইপ বহনকারী কোনো জীবের সাথে ক্রস সংঘটিত হবে। তাই সকল ব্যাক ক্রসই টেস্ট ক্রস কিন্তু সকল টেস্ট ক্রস, ব্যাক ক্রস নয়। “/কু.বো. ১৯/

প্রশ্ন-১৪, টেস্ট ক্লস বলতে কী বোঝ?

উত্তর: F1 বা F2 জনুর বংশধরগুলো খাঁটি না সংকর, তা জানার জন্য তাদেরকে মাতৃবংশের বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবের সাথে সংকরায়ন বা ক্রস করা হলে একে টেস্ট ক্রস বলা হয়। যেমন- কোন সংকর লম্বা গাছ (Tt) এর সাথে বিশুদ্ধ খাটো গাছ (it) এর সংকরায়ন ঘটালে ফিনোটাইপিক ও জিনোটাইটিক অনুপাত হবে ১ : ১।

প্রশ্ন-১৫, মেন্ডেলের ২য় সূত্রটি লেখো।
উত্তর: মেন্ডেলের ২য় সূত্রকে স্বাধীনভাবে মিলনের সূত্র বলে। সূত্রটি হলো— দুই বা ততোধিক জোড়া বৈসাদৃশ্যময় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন দুটি জীবের মধ্যে ক্রস ঘটালে প্রথম বংশধরে (F1) কেবল প্রকট বৈশিষ্ট্যগুলোই প্রকাশিত হবে কিন্তু পরবর্তীতে জননকোষ উৎপাদনকালে বৈশিষ্ট্যগুলো জোড়া ভেঙে পরস্পর থেকে স্বতন্ত্র বা স্বাধীনভাবে বিন্যস্ত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন জননকোষে প্রবেশ করবে।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

■ মেন্ডেলের সূত্রের ব্যতিক্রম ও পলিজেনিক ইনহেরিট্যান্স

প্রশ্ন-১৬. অসম্পূর্ণ প্রকটতা বলতে কী বোঝায়? (সি. বো. ১৯ রা., বো. ১৫. চ.বো, ১৬)
উত্তর: কোনো মনোহাইব্রিড ক্রসে যখন পরস্পর বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী জিন দু’টির কোনটিই সম্পূর্ণভাবে প্রকট না হয়ে সংকর জীবে হেটারোজাইগাস অবস্থায় উভয় বৈশিষ্ট্যের মাঝামাঝি একটি নতুন বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটায় তখন জিনের এ ধরনের স্বভাবকে অসম্পূর্ণ প্রকটতা বলে।

প্রশ্ন-১৭. সন্ধ্যামালতির লাল ফুল ও সাদা ফুলের সংক্রায়নে F1 জনুতে গোলাপি ফুল পাওয়ার কারণ কী?
উত্তর: সন্ধ্যামালতিতে লাল বর্ণের ফুল প্রকট এবং সাদা বর্ণের ফুল প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য। এদের সংকরায়ণে F1 জনুতে লাল বর্ণের ফুল পাওয়ার কথা কিন্তু অসম্পূর্ণ প্রকটতার কারণে প্রকট অ্যালিল প্রচ্ছন্ন অ্যালিলের ক্রিয়াকে সম্পূর্ণভাবে দমন করতে পারে না। ফলে উভয় অ্যালিল নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য আংশিক ভাবে প্রকাশ করে এবং গোলাপি বর্ণের ফুল পাওয়া যায়।

প্রশ্ন-১৮. লিথাল জিন কীভাবে কাজ করে?
উত্তর: লিথাল জিন প্রকট ও প্রচ্ছন্ন এ দু’প্রকার হতে পারে। যদি প্রকট লিথাল জিন হয় তবে হোমোজাইগাস প্রকট দশায় লিথাল নিজের উপস্থিতিতে এবং প্রচ্ছন্ন লিথাল জিন হলে হোমোজাইগাস প্রচ্ছন্ন দশায় লিথাল জিনের উপস্থিতিতে জীবের মৃত্যুর ঘটে। যেমন— দুটি হলুদ বর্ণের ইঁদুরের সাথে ক্রস করানোর সময় প্রকট লিথাল জিনের কারণে ১ম বংশধরে হোমোজাইনাস বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ইঁদুরটি মারা যায়।

প্রশ্ন-১৯. এক সংকরবিশিষ্ট সকল যৌন প্রজননে ৩:১ অনুপাত পাওয়া যায় না কেন?
উত্তর: এক সংকর বিশিষ্ট সকল যৌন প্রজননে ৩:১ অনুপাত পাওয়া যায় না কারণ হোমোজাইগাস অবস্থায় কোনো জিন বহনকারী জীবের মৃত্যু হলে সে জিনটি লিথাল জিন। এ জিনের কারণেই ফিনোটাইপিক অনুপাত ৩:১ এর পরিবর্তে ২:১। অর্থাৎ সকল যৌন প্রজননের ক্ষেত্রে ৩ : ১ অনুপাতটি পাওয়া যায় না।

■ মেন্ডেলের সূত্রের ব্যতিক্রম ও পলিজেনিক ইনহেরিট্যান্স

প্রশ্ন -২০. Lathyrus odoratus উদ্ভিদের ক্ষেত্রে জিনের পরিপূরক ক্রিয়ার উদাহারণ দাও।
উত্তর: Lathyrus odoratus উদ্ভিদের AAbb ও aaBB জিনোটাইপের দুটি সাদা ফুলের সংকরায়নে F1 জনুতে ৯:৭ অনুপাতে বেগুনি ও সাদা ফুল পাওয়া যায়। A ও B জিন পরিপূরক জিন হওয়ায় যখন এরা উভয়েই প্রকট দশায় উপস্থিত থাকে তখনই পরিপূরক ক্রিয়ার দরুন বেগুনি রঙের প্রকাশ ঘটায়।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

প্রশ্ন-২১ এপিস্ট্যাসিস বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: একটি জিন যখন অন্য একটি নন-অ্যালিলিক জিনের কার্যকারিতা প্রকাশে বাধা দেয় তখন এ প্রক্রিয়াকে এপিস্ট্যাসিস বলে। যে জিনটি অপর জিনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশে বাধা দেয় তাকে এপিস্ট্যাটিক জিন এবং বাধাপ্রাপ্ত জিনটিকে হাইপোস্ট্যাটিক জিন বলে।

প্রশ্ন-২২ এপিস্ট্যাটিক জিন ও হাইপোস্ট্যাটিক জিন বলতে কী বোঝ?
উত্তর: এপিস্ট্যাসিস প্রক্রিয়ায় যে জিনটি অপর জিনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশে বাধা দেয় তাকে এপিস্ট্যাটিক জিন বলে এবং যে জিনটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশে বাধা পায় তাকে হাইপোস্ট্যাটিক জিন বলে।

■ মেন্ডেলের সূত্রের ব্যতিক্রম ও পলিজেনিক ইনহেরিট্যান্স

প্রশ্ন- ২৩, Dominant epistasis বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: যখন একটি প্রকট জিন অন্য একটি নন অ্যালিলিক প্রকট জিনের কার্যকারিতা প্রকাশে বাধা দেয় তখন এ প্রক্রিয়াকে Dominant Epistasis বলে। উদাহরণস্বরূপ, সাদা লেগহর্ন গোষ্ঠীর মোরগ-মুরগিতে রঙিন পালক সৃষ্টির জন্য দায়ী একটি প্রকট জিন (C) থাকলেও এপিস্ট্যাটিক জিন (I)-এর কারণ রঙিন পালক সৃষ্টি না হয়ে তা সাদা রঙের হয়।

প্রশ্ন-২৪. সাদা লেগহর্ন জাতের মোরগ মুরগির ক্রসে রঙিন পালকের প্রজন্মের আবির্ভাব ঘটে কীভাবে?
উত্তর: সাদা লেগহর্ন জাতের মোরগ-মুরগিতে রঙিন পালক সৃষ্টির জন্য দায়ী প্রকট জিন C থাকে কিন্তু প্রকট এপিস্ট্যাটিক জিন। এর উপস্থিতি C কে বৈশিষ্ট্য প্রকাশে বাধা দেয় ফলে পালক সাদা বর্ণের হয়। যখন প্রচ্ছন্ন দশায় এবং C প্রকট দশায় কোনো জিনোটাইপে উপস্থিত থাকে তখনই রঙিন পালকের মোরগ-মুরগি পাওয়া যায়।

প্রশ্ন-২৫. কখন একজন মানুষ মূক ও বধির হয়?
উত্তর: মানুষের স্বাভাবিক বাক ও স্বাভাবিক শ্রবণক্ষমতার জন্য দায়ী জিনের মধ্যে দ্বৈত প্রচ্ছন্ন এপিস্ট্যাসিস বিদ্যমান। যখন এদের যেকোনো একটি অথবা উভয়ই হোমোজাইগাস প্রচ্ছন্ন দশায় উপস্থিত থাকে তখনই দ্বৈত প্রচ্ছন্ন এপিস্ট্যাসিসের কারণে মূক-বধির মানুষের জন্ম হয়। শুধুমাত্র উভয় জিনের প্রকট দশার উপস্থিতিতে স্বাভাবিক বাক ও শ্রবণক্ষম মানুষের জন্ম হয়।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

প্রশ্ন-২৬. পলিজেনিক ইনহেরিট্যান্সের ক্ষেত্রে মেন্ডেলের সূত্র সমর্থিত হয় না কেন?
উত্তর: মেন্ডেলের মতে জীবের প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের জন্য একজোড়া ফ্যাক্টর বা জিন নির্দিষ্ট। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে একাধিক জিন দ্বারা জীবের একটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। যেমন- মানুষের গায়ের রঙ, উচ্চতা, ওজনের ক্ষেত্রে একাধিক জিনের সমন্বিত প্রয়োগের ওপর নির্ভরশীল হয়। পলিজেনিক ইনহেরিটেন্স এর ক্ষেত্রে একাধিক জিন দ্বারা একটি মাত্রা বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রিত হয় বলে এক্ষেত্রে মেন্ডেলের বংশগতির সূত্র সমর্থিত হয় না।

■ মেন্ডেলের সূত্রের ব্যতিক্রম ও পলিজেনিক ইনহেরিট্যান্স

প্রশ্ন-২৭. নন-মেন্ডেলিয়ান ইনহেরিট্যান্স বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: বাস্তবে অনেক বংশগতিয় পরীক্ষায় দেখা গেছে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী জিন এসব মেন্ডেলিয় নিয়ম মেনে চলে না। ফলে সব ধরনের জিনতাত্ত্বিক পরীক্ষা থেকে মেন্ডেলিয়ান 3:1 এবং 9:3:3:1 অনুপাত সঠিকভাবে পাওয়া যায় না। এ ধরনের ব্যতিক্রম বংশগতীয় বৈশিষ্ট্যগুলোকে নন-মেন্ডেলিয়ান ইনহেরিট্যান্স বলে।

প্রশ্ন-২৮. লিথাল জিন বলতে কী বোঝায়? রা. বো. ২০১৯
উত্তর: লিথাল জিন হলো সেই সমস্ত জিন যারা হোমোজাইগোস অবস্থায় সংশ্লিষ্ট জীবের মৃত্যু ঘটায়। এছাড়া এসব জিনের উপস্থিতি জীবের জীবনীশক্তি কমিয়ে দেয়। লিথাল জিন প্রকট ও প্রচ্ছন্ন হতে পারে। লিথাল জিন প্রকট হলে হোমোজাইগাস অথবা হেটারোজাইগাস যে কোন অবস্থায় জীবের মৃত্যু হতে পারে। অপরদিকে প্রচ্ছন্ন হলে হোমোজাইগাস অবস্থায় মৃত্যু হয়। লিথাল জিনের প্রভাবে মানুষের থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়া, ক্রীপার মুরগি, পা বিহীন বাহুড় ইত্যাদি হতে পারে।

■ লিঙ্গ নির্ধারণে নীতি ও সেক্স লিঙ্কড ডিসঅর্ডার

প্রশ্ন-২৯. পুরুষ প্রাণীদের হেটারোগ্যামিটিক বলা হয় কেন?
উত্তর: পুরুষ প্রাণীর সেক্স ক্রোমোসোম দুটি হলো X ও Y অর্থাৎ এদের জিনোটাইপ XY যার ফলে এরা দুধরনের গ্যামিট উৎপন্ন করে। তাই পুরুষ প্রাণীদের হেটেরোগ্যামিটিক বলা হয়।

৩০, স্ত্রী প্রাণীদের হোমোগ্যামেটিক বলার কারণ কী?
উত্তর: স্ত্রী প্রাণীদের সেক্স ক্রোমোসোমে একজোড়া X ক্রোমোসোম থাকে। অর্থাৎ এদের জিনোটাইপ XX। এরা শুধুমাত্র এক ধরনের গ্যামিট উৎপন্ন করে। তাই এদের হোমোগ্যামিটিক বলা হয়।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

প্রশ্ন-৩১, সেক্স লিঙ্কড ইনহেরিট্যান্স বলতে কী বোঝ? দিবো. ১৯ সি. বো. ১৬
উত্তর: সেক্স লিঙ্কড ইনহেরিট্যান্স হলো সেক্স ক্রোমোসোমের মাধ্যমে বংশপরম্পরায় লিঙ্গ জড়িত বৈশিষ্ট্য সঞ্চারিত হওয়া। মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলো সেক্স ক্রোমোসোমে বিদ্যমান জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এসব বৈশিষ্ট্য হলো সেক্স লিঙ্কড বৈশিষ্ট্য। যেমন— বর্ণান্ধতা,হিমোফিলিয়া, মায়োপিয়া ইত্যাদি সেক্স লিঙ্কড ডিসঅর্ডার পিতা-মাতা থেকে সন্তানে সঞ্চারিত হওয়া হলো সেক্স লিঙ্কড ইনহেরিট্যান্স।

প্রশ্ন-৩২. বর্ণান্ধতা দেখা যায় কেন? ক. বো, ১৯
উত্তর: মানুষের X ক্রোমোসোমে দুইটি জিন আছে। এ জিনগুলো চক্ষুর রেটিনায় বর্ণ-সংবেদী কোষগুলো গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ কোষগুলো না থাকলে লাল ও সবুজ বর্ণ পৃথকভাবে চেনা যায় না। এ জিনের প্রচ্ছন্ন অ্যালিল বর্ণসংবেদী কোষ গঠন ব্যাহত করে। তখন লাল সবুজ বর্ণান্ধতা রোগের সৃষ্টি হয়। এজন্যই মানুষের বর্ণান্ধতা দেখা যায়।

লিঙ্গ নির্ধারণে নীতি ও সেক্স লিঙ্কড ডিসঅর্ডার

প্রশ্ন-৩৩, বর্ণান্ধ পুরুষ ও স্বাভাবিক মহিলার বিয়ে হলে তাদের সকল সন্তানই স্বাভাবিক দৃষ্টি সম্পন্ন হয় কেন?
উত্তর: বর্ণান্ধতা মানুষের একটি সেক্স লিঙ্কড ইনহেরিট্যান্স । বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী জিন X ক্রোমোসোমে থাকে। বর্ণান্ধ পুরুষ (XY) এবং স্বাভাবিক নারীর (XX) বিয়ে হলে তাদের সন্তানদের জিনোটাইপ হবে-
XX, XX, XY এবং XY। পুরুষের ক্ষেত্রে X জিন একটি এবং নারীর ক্ষেত্রে দুটি। নারীর বর্ণান্ধ হবার জন্য দুটি X ক্রোমোসোমে বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী জিন (X) থাকতে হবে। এজন্য বর্ণান্ধ পুরুষ ও স্বাভাবিক নারীর মধ্যে বিয়ে হলে তাদের সন্তানরা স্বাভাবিক দৃষ্টি সম্পন্ন হবে।

প্রশ্ন-৩৪. বর্ণান্ধতার কারণে সৃষ্ট অসুবিধাগুলো লেখো।
উত্তর: বর্ণান্ধতার কারণে সৃষ্ট অসুবিধাসমূহ নিম্নরূপ-
লাল ও সবুজ বর্ণ পৃথকভাবে দেখতে ও বুঝতে না পারার জন্য বর্ণান্ধতা হয়। রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পছন্দের রঙিন ফুল উপহার দিতে বিব্রত অবস্থায় পড়তে হয়। বাজার থেকে কাঁচা পাকা ফল কিনতে বিব্রত হতে হয়। রঙিন জামা-কাপড় কেনার ক্ষেত্রেও বর্ণান্ধ মানুষ ঝামেলায় পড়েন।

লিঙ্গ নির্ধারণে নীতি ও সেক্স লিঙ্কড ডিসঅর্ডার

প্রশ্ন-৩৫. হিমোফিলিয়া রোগ নারীদের থেকে পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায় কেন?
উত্তর: হিমোফিলিয়া রোগের জন্য দায়ী জিন X ক্রোমোসোমে উপস্থিত।পুরুষদের ক্ষেত্রে মাত্র একটি প্রচ্ছন্ন জিনের উপস্থিতিতেই রোগটি প্রকাশ প্রায় কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে হোমোজাইগাস প্রচ্ছন্ন দশায় রোগটি প্রকাশ পায়। হেটারোজাইগাস দশায় নারী হিমোফিলিয়া রোগের বাহক হয় কিন্তু নিজেরা স্বাভাবিক থাকে। তাই হিমোফিলিয়া নারীদের থেকে পুরুষদের মাঝে বেশি দেখা যায়।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

প্রশ্ন-৩৬. হিমোফিলিয়া বলতে কী বোঝ?

উত্তর: মানুষের যে বংশগত রোগের কারণে আঘাতপ্রাপ্ত স্থান (ক্ষত,কাটা স্থান) থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না অর্থাৎ রক্ত জমাট বাঁধে না। তাকে হিমোফিলিয়া বলে। এটি একটি বিশেষ বংশগত রোগ যা ‘x’ ক্রোমোসোমের একটি প্রচ্ছন্ন মিউট্যান্ট জিনের মাধ্যমে বাহিত হয়। যেহেতু হিমোফিলিয়া প্রচ্ছন্ন জিন, তাই এই রোগ স্ত্রীলোকদের সাধারণত হয় না। হিমোফিলিয়া প্রধানত দু প্রকারের হয়ে থাকে। যথা- হিমোফিলিয়া A বা ক্ল্যাসিক্যাল হিমোফিলিয়া এবং হিমোফিলিয়া B বা খ্রিস্টমাস রোগ।

ABO গ্রুপ ও RH ফ্যাক্টরের কারণে সৃষ্ট সমস্যা

প্রশ্ন-৩৭. AB ব্লাড গ্রুপ সব গ্রুপের রক্ত নিতে পারলেও অন্য কোনো গ্রুপকে রক্ত দিতে পারে না কেন?
উত্তর: AB ব্লাড গ্রুপে কোনো প্রকার অ্যান্টিবডি নেই ফলে অন্য কোনো গ্রুপের রক্ত AB ব্লাড গ্রুপের ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করালেও তার বিপরীতে কোনো অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না। অন্যদিকে, AB ব্লাড গ্রুপের অ্যান্টিজেন A ও B দুটোই উপস্থিত। ফলে AB গ্রুপের রক্ত অন্য ব্লাড গ্রুপের ব্যক্তির শরীরে দিলে তার বিপরীতে অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয়। তাই AB ব্লাড গ্রুপের ব্যক্তি যেকোনো গ্রুপের রক্ত নিতে পারলেও শুধুমাত্র নিজ গ্রুপকে রক্ত দিতে পারে।

প্রশ্ন-৩৮. O ব্লাড গ্রুপ যেকোনো ব্লাড গ্রুপকে রক্ত দিতে পারে কিন্তু নিজ গ্রুপ ব্যাতীত অন্য কোনো গ্রুপের রক্ত নিতে পারে না কেন?

উত্তর: O ব্লাড গ্রুপে কোনো অ্যান্টিজেন নেই যার ফলে অন্য কোনো গ্রুপের মানুষের শরীরে O গ্রুপের রক্ত প্রবেশ করালেও তার বিপরীতে কোনো অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না। কিন্তু অ্যান্টিবডি a ও b দুটোই উপস্থিত থাকার ফলে অন্যকোনো গ্রুপের রক্ত O ব্লাড গ্রুপের মানুষের শরীরে প্রবেশ করালে তার বিপরীতে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। ফলে গ্রুপের রক্ত সবাইকে দেয়া গেলেও সে নিজে সব গ্রুপের রক্ত নিতে পারে না।

প্রশ্ন-৩৯. সর্বজনীন দাতা বলতে কী বোঝায়? [রা. বো. ১৬)

উত্তর: O ব্লাড গ্রুপে কোনো অ্যান্টিজেন নেই যার ফলে অন্য কোনো গ্রুপের মানুষের শরীরে O গ্রুপের রক্ত প্রবেশ করালেও তার বিপরীতে কোনো অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না। কিন্তু অ্যান্টিবডি a ও b দুটোই উপস্থিত থাকার ফলে অন্য কোনো গ্রুপের গ্রুপের মানুষের শরীরে প্রবেশ করালে তার বিপরীতে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। ফলে গ্রুপের রক্ত সবাইকে দেয়া গেলেও সে নিজে সব গ্রুপের রক্ত নিতে পারে না। এজন্য O ব্লাড গ্রুপকে সর্বজনীন দাতা বলা হয়।

ABO গ্রুপ ও RH ফ্যাক্টরের কারণে সৃষ্ট সমস্যা

প্রশ্ন ৪০. Rh ফ্যাক্টর বলতে কী বোঝায়? সকল বোর্ড ১৮; রা. বো. ১৭
উত্তর: রেসাস বাননের লোহিত রক্তকণিকায় প্রাপ্ত এক বিশেষ ধরনের অ্যান্টিজেনকে Rh ফ্যাক্টর বলে। কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার এবং এ.এম. উইনার ১৯৪০ সালে ইহা আবিষ্কার করেন। পৃথিবীর ৮৫% মানুষের লোহিত রক্তকণিকায় এই অ্যান্টিজেন পাওয়া যায়। এর উপর ভিত্তি করে রক্তের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

প্রশ্ন-৪১. Rh+ পুরুষ ও Rh নারীর বিবাহ হলে তাদের সন্তানের সমস্যা হয় কেন?
উত্তর: Rh+ প্রকট ও Rh প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য হওয়ায় Rh পুরুষ ও Rh নারীর সন্তান হবে Rh। সন্তানের Rh রক্ত অমরার মাধ্যমে মায়ের Rh রক্তে এসে Rh অ্যান্টিবডি তৈরি করবে। পরবর্তী Rh অ্যান্টিবডি যুক্ত রক্ত অমরার মাধ্যমে সন্তানের Rh’ রক্তে আসে এবং সন্তানের ভ্রূণের লোহিত কণিকাকে ধ্বংস করবে এবং গর্ভপাত ঘটাবে। এ অবস্থায় সন্তান জীবিত থাকলেও প্রচণ্ড রক্তস্বল্পতা এবং জন্মের পর জন্ডিস দেখা দেয়।

প্রশ্ন-৪২. এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস বলতে কী বোঝায়? য. বো: ১৭; কু, ৰো, ১৬

উত্তর: এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস হলো ” Rh ফ্যাক্টরজনিত , গর্ভাবস্থাকালীন একটি জটিলতা। Rh+ ফ্যাক্টরবিশিষ্ট পুরুষ ও Rh- ফ্যাক্টরবিশিষ্ট নারীর বিয়ের হলে তাদের প্রথম সন্তান Rh+ হবে। এই Rh+ যুক্ত লোহিত রক্তকণিকা অমরার মাধ্যমে মায়ের রক্তে পৌঁছে অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর তৈরি করে। যার ফলে ভ্রূণের রক্তকণিকা ধ্বংস হয়ে যায় এবং সন্তান রক্তস্বল্পতায় ভোগে। এতে গর্ভপাত ঘটতে পারে অথবা সন্তান জন্মের পর জন্ডিস দেখা দেয়। এই অবস্থাই হলো এরিথ্রোরাস্টোসিস ফিটালিস।

প্রশ্ন-৪৩. ABO রক্তগ্রুপ বলতে কী বোঝ? (য. বো. ১৯
উত্তর: লোহিত রক্তণিকার প্লাজমামেমব্রেনে অবস্থিত কতকগুলো অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির উপর নির্ভর করে বিজ্ঞানী।ল্যান্ডস্টেইনার মানুষের রক্তের যে শ্রেণিবিন্যাস করেন তাকে ABO ব্লাড গ্রুপ বলে। মানুষের রক্তে A ও B এই দুইরকম অ্যান্টিজেন থাকতে পারে। A অ্যান্টিজেন থাকলে তাকে A ব্লাড গ্রুপ, B অ্যান্টিজেন থাকলে তাকে B ব্লাড গ্রুপ, A ও B উভয়ই থাকলে তাকে AB ব্লাড গ্রুপ আর কোনো অ্যান্টিজেন না থাকলে তা O ব্লাড গ্রুপ বলে। সুতরাং মানুষেররক্তের চারটি সুনির্দিষ্ট রক্ত গ্রুপ রয়েছে। এ চারটি গ্রুপ হচ্ছে A, B, AB এবং O। এই চারটি রক্ত গ্রুপের সমন্বিত গ্রুপ হচ্ছে ABO ব্লাড গ্রুপ।

প্রশ্ন-৪8. AB রক্তগ্রুপকে সর্বজনীন গ্রহীতা বলা হয় কেন?
উত্তর: AB রক্ত গ্রুপের লোহিত রক্তকণিকায় অ্যান্টিজেন A ও B উভয়ই বিদ্যমান। কিন্তু কোনো অ্যান্টিবডি নেই। ফলে যেকোনো রক্ত গ্রুপের রক্ত যদি AB-রক্ত গ্রুপ গ্রহণ করে তবে অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডির ক্রিয়া তেমন সক্রিয় হয় না। ফলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। তাই AB রক্ত গ্রুপকে সর্বজনীন গ্রহীতা বলা হয়।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

■ বিবর্তন তত্ত্ব, ল্যামার্কিজম, ডারউইনিজম

প্রশ্ন-৪৫. ল্যামাকিজম বলতে কী বোঝায়? /য, নো, ১৯/
উত্তর: বিবর্তনের উপর ল্যামার্কের মতবাদকে ল্যামাকিজম বলে।
মতবাদের ভিত্তিগুলো হলো-

i জীবনের অন্তর্নিহিত শক্তির প্রভাবে জীবের সামগ্রিক আকার এবং প্রতিটি অঙ্গ একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রবণতা প্রদর্শন করে।
ii. নতুন চাহিদা অথবা ক্রমাগত প্রয়োজনের ফলে জীবের প্রতিটি অঙ্গের উদ্ভব ঘটে
iii. প্রতিটি অঙ্গের বিকাশ-বিলুপ্তি তার ব্যবহার ও অব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল।
iv. জীবদ্দশায় অর্জিত বৈশিষ্ট্যসমূহ দেহে সংরক্ষিত হয় এবং পরবর্তী বংশে তা সঞ্চারিত হয়

প্রশ্ন-৪৬. ল্যামার্কের মতবাদ বিজ্ঞানী মহলে গ্রহণযোগ্য হয়নি কেন? /সি. বো. ১৭/
উত্তর: কিছু ত্রুটি বিচ্যুতির কারণে ল্যামার্ক এর মতবাদ বিজ্ঞানী মহলে গ্রহণযোগ্য হয়নি। ল্যামার্কের মতে, অর্জিত গুণাবলী উত্তরাধিকার সূত্রে প্রবাহিত হয়। কিন্তু বিজ্ঞানী ভাইজম্যান কয়েক পুরুষ ইঁদুরের লেজ কেটে পরীক্ষা চালিয়ে লেজহীন ইঁদুর উৎপাদন করতে পারেনি। তাই ল্যামার্কের মতবাদ বিজ্ঞানীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

প্রশ্ন-৪৭. জীবন সংগ্রাম বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ডারউইনের মতে যেহেতু প্রতিটি জীব অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি পরিমাণ সন্তান-সন্ততির জন্ম দেয় সেহেতু বেঁচে থাকার জন্য তাদের মধ্যে সংগ্রাম অবধারিত। এ সংগ্রাম ঘটে মূলত খাদ্য, বাসস্থান ও প্রজননকে কেন্দ্র করে। প্রতিটি জীবকে এ তিনটি মৌলিক উপাদান লাভের জন্য প্রতিনিয়ত বহুমুখী সংগ্রামে লিপ্ত হতে হয়। এ সংগ্রাম অন্তঃপ্রজাতিক বা সমপ্রজাতিক অথবা আন্তঃপ্রজাতিক বা বিসম প্রজাতিক হতে পারে।

■ বিবর্তন তত্ত্ব, ল্যামার্কিজম, ডারউইনিজম

প্রশ্ন-৪৮. ‘যোগ্যতম উদ্বর্তন’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: যোগ্যতম উদ্বর্তন বলতে বোঝায় যে জীব জীবন সংগ্রামে যোগ্য ও অনুকূল প্রকরণ গ্রহণ করতে সমর্থ হবে শুধু সেই জীবন সংগ্রামে টিকে থাকবে। পক্ষান্তরে, জীবন সংগ্রামে যে অযোগ্য সে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। অনুকূল প্রকরণের ফলে জীব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে টিকে যায় এবং প্রকরণ সৃষ্টিকারী বৈশিষ্ট্যসমূহ ক্রমশ সন্তান-সন্তুতিতে সঞ্চারিত হয়।

প্রশ্ন-৪৯, প্রকরণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিটি জীব প্রজাতির মধ্যেই চেহারা, আকৃতি বা জীবন ব্যবস্থায় কিছুটা তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। জীবের এসব অমিল বা বৈসাদৃশ্যকে প্রকরণ বলে। বিভিন্ন জীবে এসব প্রকরণ বিভিন্নভাবে ও বিভিন্ন মাত্রায় প্রকাশ পেতে পারে।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

প্রশ্ন-৫০. নিওডারউইনিজম কী?
উত্তর: ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচনের মতবাদের বিশ্লেষণকে মেন্ডেলের জিনতত্ত্ব নতুন রূপে সংজ্ঞায়িত করে, যা নব্য ডারউইনিজম বা নিওডারউইনিজম নামে পরিচিত। এ মতবাদের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, প্রাকৃতিক নির্বাচন ঘটে পপুলেশন পর্যায়ে। এছাড়াও এ মতবাদেরপ্রকরণের ব্যাখ্যা স্বরূপ বলা হয় যে, জননকোষে অভ্যন্তরীণ উদ্দাপনার ফলেই পরবর্তী বংশধরে প্রকরণের উদ্ভব ঘটে, এর ফলে নতুন প্রজাতির সৃষ্টি হয়।

■ বিবর্তনের প্রমাণাদি

প্রশ্ন-৫১. সংযোগকারী যোগসূত্র বলতে কী বোঝ?
উত্তর: দুটি নিকটবর্তী পর্ব বা শ্রেণির মধ্যবর্তী দশার জীবাশ্মকে সংযোগকারী যোগসূত্র বলা হয়। আর্কিওপটেরিক্সে ধরনের একটি জীবাশ্ম। এতে পাখি ও সরিসৃপ উভয় শ্রেণির বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান তাই একে সরিসৃপ থেকে পাখি উদ্ভবের সংযোগকারী যোগসূত্র বলা হয়।

প্রশ্ন-৫২. Archaeopteryx-কে কেন সংযোগকারী যোগসূত্র বলা হয়? ব. বো. ১৯
উত্তর: সংযোগকারী জীবাশ্মে দুটি গ্রুপের মধ্যবর্তী দশার বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। Archaeopteryx হলো এক ধরনের সরিসৃপ জাতীয় পাখির জীবাশ্ম যাতে পাখি ও সরীসৃপ উভয়ের বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যেমন— এদের দেহে পাখির ন্যায় ডানা, পালক ও চঞ থাকলেও এদের সরিসৃপের ন্যায় দাঁতযুক্ত চোয়াল, শুষ্ক আঁশ ও ভারী কঙ্কাল রয়েছে। এ জন্য Archaeopteryx কে সংযোগকারী জীবাশ্ম বলা হয় ।

জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন | HSC

প্রশ্ন-৫৩. “পাখি একটি মহিমান্বিত সরিসৃপ”– ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: আর্কিওপটেরিক্স হলো সরিসৃপ ও পাখি উভয় শ্রেণির সংযোগকারী জীব। অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন পাখিদের উৎপত্তি ঘটে সরিসৃপ থেকে। কারণ আদিপাখি আর্কিওপটেরিক্সের সরিসৃপ ও পাখির উভয় শ্রেণির বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। এজন্য বলা হয়- ‘পাখি একটি মহিমান্বিত সরিসৃপ’।

■ বিবর্তনের প্রমাণাদি

প্রশ্ন-৫৪. সমবৃত্তীয় অঙ্গ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: বিভিন্ন প্রাণীতে বিদ্যমান যেসব অঙ্গ কাজের দিক থেকে অনুরূপ কিন্তু গঠন ও উৎপত্তির দিক থেকে ভিন্নতর হয় তাদেরকে সমবৃত্তীয় অঙ্গ (Analogous organ) বলে। যেমন- পাখির ডানা ও প্রজাপতির ডানা সমবৃত্তীয় অঙ্গ। উভয়ই প্রাণীকে উড়তে সাহায্য করে কিন্তু এদের গঠন ও উৎপত্তিতে কোনো মিল নেই।

প্রশ্ন-৫৫. সমসংস্থ ও সমবৃত্তি অঙ্গের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর: নিচের সমসংস্থ ও সমবৃত্তি অঙ্গের মধ্যে পার্থক্য লেখা হলো-

সমসংস্থ অঙ্গসমবৃত্তি অঙ্গ
i. যে সব অঙ্গ উৎপত্তি ও অন্তর্গঠনের দিক থেকে এক হলেও হলেও, বাহ্যিক গঠন এবং কাজের ধরনের দিক থেকে আলাদা তাদের সমসংস্থ অঙ্গ বলে।i. যে সব অঙ্গ কার্যগতভাবে একই ধরনের কিন্তু উৎপত্তি ও গঠনগতভাবে পৃথক তাদের সমবৃত্তি অঙ্গ বলে।
ii. মানুষের হাত, বাদুড়ের ডানা, ঘোড়ার অগ্রপদ ইত্যাদি।ii. পাখি ও প্রজাপতির ডানা।

প্রশ্ন-৫৬. অর্থোপটেরা এবং হেটেরোপটেরা শ্রেণিতে কীভাবে লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায়?
পর উত্তর: অর্থোপটেরা এবং হেটেরোপটেরা পতঙ্গ শ্রেণিতে XX-Xo বা পদ্ধতিতে লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে স্ত্রী সদস্য হোমোগ্যামেটিক অর্থাৎ XX সেক্স ক্রোমোসোম বিশিষ্ট। কিন্তু পুরুষেY ক্রোমোসোম দর অনুপস্থিত থাকে ও মাত্র একটি X ক্রোমোসোম থাকে।

এই জিনতত্ত্ব বিবর্তন অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন ছাড়াও আরো জানতে ক্লিকঃ

You cannot copy content of this page