আম আঁটির ভেঁপু গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

আম আঁটির ভেঁপু গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর এর বিস্তারিত নিচে দেওয়া হল যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হবে। তাই এই আর্টিকেলটি অনুসরণ করো এবং অনুশীলন অব্যাহত রাখো। তোমাদের জন্য শুভকামনা।

আম আঁটির ভেঁপু গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন ১। ‘হাবা একটা কোথাকার– যদি এতটুকু বুদ্ধি থাকে!’— কথাটি বুঝিয়ে লেখ। 

প্রশ্ন ২। হরিহর সদগোপদের প্রস্তাবে তাৎক্ষণিকভাবে রাজি হলো না কেন? 

প্রশ্ন ৩। ‘তখনি কি রাজি হতে আছে’— ব্যাখ্যা কর।

প্রশ্ন ৪। সদগোপ কথাটি হরিহর সুর নামাইয়া বলিল কেন?ব্যাখ্যা কর। [কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ। উত্তর : নিচু জাতের মানুষকে ‘মন্ত্র’ দেওয়ার কথা যেন কেউ না শুনতে পায় সে জন্য হরিহর সদগোপ কথাটি সুর নামিয়ে বলল। হরিহর দরিদ্র ব্রাহ্মণ। সংসারে অভাব লেগেই থাকে। সে একদিন দশঘরায় তাগাদার কাজে গিয়েছিল। সেখানে সদগোপ জাতের পয়সাওয়ালা একজন লোক হরিহরকে তাদের গ্রামে গিয়ে বাস করতে অনুরোধ করল এবং তার কাছে মন্ত্র নিতে চাইল। এই কথা স্ত্রী সর্বজয়াকে বলতে গেলে সে জানতে চায় লোকটি কোন জাতের। হরিহর জবাবে সদগোপ কথাটি বলতে গিয়ে সুর নামিয়ে ফেলে। কারণ এই কথা কেউ জানাতে পারলে সমাজে ছিঃ ছিঃ পড়ে যাবে। কারণ তখনকার সমাজে ব্রাহ্মণ হয়ে নিচু জাতের মানুষকে মন্ত্র দেওয়াকে অসম্মানের চোখে দেখা হতো। 

প্রশ্ন ৫। হরিহরের বসতভিটার আশপাশটা প্রকৃতির লীলাক্ষেত্র হয়ে উঠেছে কেন?
উত্তর : হরিহরের বসতভিটার আশপাশটা প্রকৃতির লীলাক্ষেত্র হয়ে উঠেছে সেখানে কেউ বসবাস না করার কারণে। 

‘আম-আঁটির ভেঁপু’ গল্পে হরিহরের বাড়ির চারদিকে জঙ্গল। হরিহর রায়ের জ্ঞাতিভাই নীলমণি রায় মারা যাওয়ায় সেই বাড়িতে কেউ থাকে না। নীলমণি রায়ের স্ত্রী সেই বাড়ি ফেলে রেখে পুত্রকন্যা নিয়ে তার পিতার বাড়িতে থাকেন। তাদের বাড়ি ছাড়া হরিহরের বাড়ির আশপাশটায় আর কোনো বাড়ি নেই। সেই বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এবং সেখানে নানা রকম গাছপালা জন্মে আবৃত হয়ে রয়েছে। তাই হরিহরের বসতভিটার আশপাশকে প্রকৃতির লীলাক্ষেত্র বলা হয়েছে। 

প্রশ্ন ৬। ‘আজকাল চাষাদের ঘরে লক্ষ্মী বাঁধা’- কথাটি ব্যাখ্যা [সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস হাই স্কুল, ঢাকা] উত্তর : “আজকাল চাষাদের ঘরে লক্ষ্মী বাঁধা”- কারণ চাষারা নিয়মিত জমিতে ফসল ফলায়, ফলে তাদের অন্নাভাব হয় না। চাষা মানেই চাষ করার সঙ্গে যার নিবিড় সম্পর্ক। আর চাষ করা মানেই ফসলের উৎপাদন। যারা ফসল উৎপাদন করে, তাদের থাকে গোলাভর্তি ধান, সে ধান তারা সারাবছর খায়। তাদের ঘরে খাবারের বিশেষ অভাব হয় না। অন্নের দেবী হিসেবে লক্ষ্মীকে গণ্য করা হয়। প্রশ্নোক্ত লাইনে চাষাদের ঘরে লক্ষ্মী বাঁধা বলতে খাবারের মজুদকেই বোঝানো হয়েছে। 

প্রশ্ন ৭। হরিহর দশঘরা গ্রামের মাতব্বর লোকটির পরিচয় গোপন রাখতে বলেছিল কেন? 

উত্তর : লোকে জানলে নিন্দা করতে পারে বলে হরিহর দশঘরা গ্রামের মাতব্বর লোকটির পরিচয় গোপন রাখতে বলেছিল। দশঘরা গ্রামে কোনো বামুন নেই। তাই সে গ্রামের মানুষের খুব ইচ্ছে, গ্রামে তারা এক ঘর ব্রাহ্মণ বাস করাবে। তাই দশঘর গ্রামের মাতব্বর হরিহরকে প্রস্তাব দিল সেই গ্রামে গিয়ে বাস করতে। হরিহর তার স্ত্রীকে এই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলে সে যাতে এ কথা কাউকে না বলে। কারণ ব্যাপারটি তার আত্মমর্যাদায় আঘাত হানতে পারে। 

প্রশ্ন ৮। ‘একটুখানি কুটোগাছটা দু খানা করা নেই।’ সর্বজয়া একথা বলেছেন কেন? 

উত্তর : মায়ের কোনো কাজে সাহায্য না করায় মা দুর্গাকে উদ্দেশ করে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেন। 

অপু আর দুর্গা দুই ভাই-বোন। তারা দুজনই দুরন্ত শিশু। তারা সবসময় প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে হাসি-আনন্দে মেতে থাকে। সারা দিন গ্রামের ঝোপঝাড়ে ছোটাছুটি করে। অভাবের সংসারে ফলমূল সংগ্রহ করে খায়। মায়ের বারণ সত্ত্বেও পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়ায়। মায়ের কোনো কাজে তারা সাহায্য করে না। তাই তাদের মা সর্বজয়া দুর্গার ওপর বিরক্ত হয়ে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেন। 

প্রশ্ন ৯। “আমার এমন হয়েছে যে ইচ্ছে যাই”– কেন সর্বজয়া এ কথা বলেছে? 

উত্তর : নিজ সংসারের দারিদ্র্যের কারণে সর্বজয়া প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছে। হরিহর- সর্বজয়ার সংসারে দারিদ্র্য নিত্যসঙ্গী। হরিহর অন্নদা রায়ের বাড়িতে গোমস্তার কাজ করে মাসে আট টাকা পায়। তাতে সংসার ঠিকমতো চলে না। ফলে অনেক ধার-দেনা হয়েছে। পাওনাদাররা প্রতিনিয়ত তাকে তাগাদা দেয়। ছেলের কাপড় নেই— যেটা আছে সেটারও দু-তিন জায়গায় সেলাই করা। দারিদ্র্যজর্জরিত সংসারে সর্বজয়া যেন হাঁপিয়ে উঠেছে। তাই সে রাগে-দুঃখে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছে।

প্রশ্ন ১০। মায়ের ডাকে দুর্গার উত্তর না দিতে পারার কারণ বুঝিয়ে দাও।

উত্তর : মায়ের ডাকে দুর্গার উত্তর না দিতে পারার কারণ তার মুখভর্তি জারানো আমের চাকলা ছিল। 

দুর্গা পটলিদের বাগান থেকে আম কুড়িয়ে এনে তার ছোট ভাই অপুকে নিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে খাচ্ছিল। কারণ তাদের মা সর্বজয়া যদি এটা দেখে ফেলে, তবে রাগ করবে। খাওয়া শেষ না হতেই হঠাৎ মায়ের ডাক শুনে দুর্গা বাকি আম তাড়াতাড়ি মুখে পুরল। মা পর পর কয়েকবার ডাকল। কিন্তু মুখভর্তি আম থাকায় দুর্গা ভয়ে উত্তর দিতে পারল না। কারণ উত্তর দিলে আম খাওয়ার ব্যাপারটা মায়ের কাছে 201 প্রকাশ হয়ে পড়বে। 

Read More:

Leave a Comment

You cannot copy content of this page