কোষ বিভাজন সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

কোষ বিভাজন সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

alt=”কোষ বিভাজন সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর” class=”wp-image-10536″/>
কোষ বিভাজন সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

দিনাজপুর বোর্ড ২০২১

প্রশ্ন। ১ একটি কোষ বিভাজনের কয়েকটি ধারাবাহিক পর্যায় হচ্ছে, A →B→ C → D→E। এর ফলে যে কোষের মাতৃসমগুণ সম্পন্ন সৃষ্টি হয় তা

ক. বাইভ্যালেন্ট কী?
খ. মায়োসিসকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের C ও D পর্যায়ের বৈশিষ্ট্য চিত্রসহ লেখো।
ঘ. উদ্দীপকের উল্লিখিত প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন না হলে যে সমস্যা সৃষ্টি হয় তা বিশ্লেষণ করো।

১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক প্রতিটি জোড়বাঁধা ক্রোমোসোমের জোড়াই হলো বাইভ্যালেন্ট।

মায়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি প্রকৃতকোষ বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভক্ত হয়ে চারটি অপত্য কোষে পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়ায় কোষের নিউক্লিয়াস দুই বার এবং ক্রোমোসোম একবার বিভাজিত হয়।ফলে, অপত্য কোষের ক্রোমোসোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোসোম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে যায়। অপত্য কোষে ক্রোমোসোম সংখ্যা অর্ধেক হ্রাস পায় বলে এ বিভাজনকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয়।

গ  উদ্দীপকে মাইটোসিস কোষ বিভাজনের পাঁচটি পর্যায়কে A, B, C,D ও E দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানে C ও D হলো যথাক্রমে মেটাফেজ ও অ্যানাফেজ পর্যায়। নিচে চিত্রসহ এদের বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলো-

চিত্র: মেটাফেজ

এ ধাপের শুরুতে নিউক্লিওপর্দা ও নিউক্লিওলাসের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে এবং স্পিন্ডল যন্ত্রের গঠন সম্পন্ন হয়। স্পিন্ডল যন্ত্রের দু’মেরুর মধ্যবর্তী অংশকে নিরক্ষীয় অঞ্চল বলে। ক্রোমোসোমগুলোর সেন্ট্রোমিয়ারের নিরক্ষীয় অঞ্চল বরাবর আসে এবং ক্রোমোসোমাল তন্তুর সাথে সংযুক্ত থাকে। প্রতিটি ক্রোমোসোমের সেন্ট্রোমিয়ার অঞ্চল বিপরীত মেরু থেকে আগত দুটি ট্র্যাকশন তন্তুর সাথে যুক্ত হয়। এ পর্যায়ে ক্রোমোসোমগুলো সর্বাধিক কুণ্ডলিত থাকায় বেশি খাটো এবং মোটা দেখায়। শেষ পর্যায়ে সেন্ট্রোমিয়ারের বিভাজন শুরু হয়।

চিত্র: অ্যানাফেজ

এ ধাপে প্রতিটি ক্রোমোসোমের সেন্ট্রোমিয়ার দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়, ফলে ক্রোমাটিড দুটি আলাদা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় প্রতিটি ক্রোমাটিডকে অপত্য ক্রোমোসোম বলে এবং এতে একটি করে সেন্ট্রোমিয়ার থাকে। অপত্য ক্রোমোসোমগুলির মধ্যে বিকর্ষণ শক্তি বৃদ্ধি পায়, ফলে এরা বিষুবীয় অঞ্চল থেকে পরস্পর বিপরীত মেরুর দিকে

অগ্রসর হতে থাকে। অপত্য ক্রোমোসোমের মেরু অভিমুখী চলনে সেন্ট্রোমিয়ার অগ্রগামী থাকে এবং বাহুদ্বয় অনুগামী থাকে। সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুযায়ী ক্রোমোসোমগুলো V, L, J বা I এর মতো আকার ধারণ করে। এদেরকে যথাক্রমে মেটাসেন্ট্রিক, সাব-মেটাসেন্ট্রিক, অ্যাক্রোসেন্ট্রিক বা টেলোসেন্ট্রিক বলে।

ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি হলো মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া। কোষের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিভিন্ন ফ্যাক্টর দ্বারা মাইটোসিস কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রিত হয়। কোনো কারণে এই নিয়ন্ত্রন অকার্যকর হলে অনিয়ন্ত্রিত মাইটোসিস ঘটে, ফলে টিউমার ও ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি, চারটি থেকে আটটি এভাবে কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কিন্তু কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে সম্পন্ন না হলে বা নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে গেলে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন চলতে থাকে। এর ফলে টিউমার সৃষ্টি হয়।

ক্যান্সার কোষও এই নিয়ন্ত্রণহীন অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনেরই ফসল। গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রকার প্যাপিলোমা ভাইরাস ক্যান্সার কোষ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। এ ভাইরাসের ই৬ ও ই৭ নামের দুটি জিন এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ সৃষ্টি করে, যা কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রক দুটি প্রোটিন অণুকে স্থানচ্যুত করে। এর ফলে কোষ বিভাজনের নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে যায় এবং অর্বুদ সৃষ্টি হয়। অনেক সময় এ দুটি জিন পোষক কোষের জিনের সাথে একীভূত হয়ে কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী প্রোটিন অণুসমূহের কাজ বন্ধ করে দেয়। ফলে ক্যান্সার কোষ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন না হলে জীবের দৈহিক বৃদ্ধি, বংশবৃদ্ধি, কোষের স্বাভাবিক আকার-আকৃতি রক্ষা, ক্রোমোসোমের সমতা রক্ষা, ক্রমাগত ক্ষয়পূরণসহ অন্যান্য কার্যাবলিতে ব্যাঘাত ঘটবে।

Read more

Leave a Comment

You cannot copy content of this page