অণুজীব অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশান্স

অণুজীব অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশান্স টি এইচএসসি শিক্ষার্থীদের অনুশীলন এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য দেওয়া হয়েছে।

ভাইরাস

প্রশ্ন ১। ভাইরাসকে অকোষীয় বলা হয় কেন? (ঢ়, বাে, ‘১৯; য, বাে, ‘১৭; ব, বাে, ‘১৭; কু, বাে, ‘১৫)
উত্তর : ভাইরাস দেহে কোষপ্রাচীর, কোষ ঝিল্লি, সাইটোপ্লাজম এবং নিউক্লিয়াস নেই। এরে দেহে কোনাে সাইটোপ্লাজমীয় অঙ্গাণু থাকে। এর দেহ রাসায়নিকভাবে প্রােটিন ও নিউক্লিক এসিড দ্বারা গঠিত।এ কারণে ভাইরাসকে অকোষীয় বস্তু বলা হয়।

প্রশ্ন ২। অণুজীব বলতে কী বুঝ? (কু, বাে, ‘১৯; কু, বাে, ‘১৬)
উত্তর : জীবজগতে অসংখ্য জীব আছে যাদের অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া খালি চোখে দেখা যায় না। এরূপ জীবদেহ সাধারণত অণুজীব নামে পরিচিত। যেমন— ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি।

প্রশ্ন ৩। Virus-কে জীব ও জড়ের সেতুবন্ধনকারী বলা হয় কেন- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ভাইরাসের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার কারণে একে জীব আবার এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যার কারণে এক জড় বলা হয়। অর্থাৎ ভাইরাসে জীবীয় ও জড় উভয় ধরনের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এজন্যই Virus কে জীব ও জীবের সেতুবন্ধনকারী বলা হয়।

প্রশ্ন ৪। ক্যাপসিড বলতে কী বুঝ?
উত্তর : নিউক্লিক এসিডকে ঘিরে অবস্থিত প্রােটিন আবরণটির নাম ক্যাপসিড । এ আবরণটি অসংখ্য প্রােটিন অণু দিয়ে গঠিত । ক্যাপসিড আবরণে এক একটি প্রােটিন অণুকে বলা হয় ক্যাপসােমিয়ার । ক্যাপসিড সাধারণত জৈবিক দিক দিয়ে নিষ্ক্রিয় তবে এরা নিউক্লিক এসিডকে রক্ষা করা ছাড়াও পােষক দেহে সংক্রমণে সাহায্য করে।

প্রশ্ন ৫। ভিরিয়ন ভিরয়েড কাকে বলে?
উত্তর : ভিরিয়ন ; নিউক্লিক এসিড ও একে ঘিরে অবস্থিত ক্যাপসিড সমন্বয়ে গঠিত এক একটি সংক্ৰমণক্ষম সম্পূর্ণ ভাইরাস কণাকে ভিরিয়ন বলে। ভিরয়েড : ভিরয়েড হলাে সংক্রামক RNA অর্থাৎ এক সূত্রক বৃত্তাকার RNA অণু যা কয়েক শত নিউক্লিওটাইড নিয়ে গঠিত এবং ক্ষুদ্রতম ভাইরাস থেকেও বহুগুণে ক্ষুদ্র। কেবলমাত্র উদ্ভিদেই ভিরয়েড পাওয়া যায় । উদ্ভিদ পােষকের এনজাইম ব্যবহার করে এরা সংখ্যা বৃদ্ধি করে।

ভাইরাসের গুরুত্ব

প্রশ্ন ৬। অন্তরেণু সৃষ্টির মাধ্যমে ভাইরাসের কোন জনন সম্পন্ন হয় বুঝিয়ে বল।
উত্তর : প্রতিকূল পরিবেশে এককোষী ব্যাকটেরিয়া কোষের অভ্যন্তরে অন্তরেণু নামক এক ধরনের প্রতিকূলজীবী রেণু উৎপন্ন করে। অন্তরেণু গােলাকার বা ডিম্বাকার এবং অত্যন্ত পুরু প্রাচীরে আবৃত থাকে। অনুকূল পরিবেশে অন্তরেণু অঙ্কুরিত হয়ে একটি ব্যাকটেরিয়া কোষ সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন ৭। COVID-19-এর লক্ষণসমূহ লেখ।
উত্তর : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উল্লেখ অনুযায়ী COVID-19-এর লক্ষণসমূহ নিচে উল্লেখ করা হলাে-

১. প্রথম প্রকাশ পায় জ্বর।
২. এরপর শুকনাে কাশি এবং কিছুদিন পর শ্বাসকষ্ট।
৩. এছাড়া সর্দি, গলাব্যথা, মাথা ব্যথা, দূর্বলবােধ, পাতলা পায়খানা,এমন কি মাংসপেশিতে ব্যথা হয়।
৪, শেষ পর্যন্ত নিউমােনিয়ার মতাে জটিলতা, একাধিক অঙ্গের বৈকল্য, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে ।

প্রশ্ন ৮। COVID-19 কীভাবে ছড়ায়?

উত্তর : রােগীর হাঁচি, কাশি, থুথু ও কথার সময় নির্গত জলকণার (Droplet) মাধ্যমে ছড়ায়, তাই রােগী থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে অবস্থান করতে হয়। ধূলিকণার মাধ্যমে কিছুটা ছড়াতে পারে। কোনাে বস্তুর সাথে লেগে থাকা ড্রপলেটের স্পর্শে আসলেও ছড়াতে পারে ।

প্রশ্ন ৯। COVID-19 সংক্রমণ পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : COVID-19 সংক্রমণ পরীক্ষা পদ্ধতির ক্ষেত্রে RT-PCR পরীক্ষা উত্তম। Reverse Transcription Polymerase Chain Reaction হলাে RT-PCR। এই পরীক্ষায় পজেটিভ হলে অবশ্যই সেই ব্যক্তি করােনা ভাইরাস আক্রান্ত। নেগেটিভ হলে আক্রান্ত থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে। কারণ ন্যাসােফ্যারিঞ্জিয়াল সােয়াব সেম্পল নেওয়া সঠিক মতাে না হলে আক্রান্ত ব্যক্তিও নেগেটিভ আসতে পারে। বুকের এক্স-রে নিউমােনিয়া নিশ্চিত করে ।

প্রশ্ন ১০। মানুষের রােগ সৃষ্টিতে ভাইরাসের ভূমিকা উল্লেখ কর।
উত্তর : বিভিন্ন প্রকার virus মানুষের দেহে বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক সংক্রামক রােগ সৃষ্টি করে থাকে। যেমন— HIV (AIDS), ফ্লাভি ভাইরাস-ডেঙ্গু, H1N1 ভাইরাস-সােয়াইন ফ্লু, ভ্যারিওলা-বসন্ত, রুবিওলা-হাম, হেপাটাইটিস বি, রেবিস-জলাতঙ্ক ইত্যাদি।

চতুর্থ অধ্যায়ঃ অণুজীব অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর সাজেশান্স

ব্যাকটেরিওফায (T, ফায) এর জীবন চক্র

প্রশ্ন ১১। লাইটিক চক্র বলতে কী বুঝায়? (চ, বাে, ‘১৭; ব, বাে, ‘১৫)
উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় ফাজ ভাইরাস পােষক ব্যাকটেরিয়া কোষে প্রবেশ করে সংখ্যাবৃদ্ধি সম্পন্ন করে ও অপত্য ভাইরাসগুলাে পােষক দেহের বিদারণ বা লাইসিস (lysis) ঘটিয়ে নির্গত হয় তাকে লাইটিক চক্র বলে । E.coli নামক ব্যাকটেরিয়ায় T2 ফাজ লাইটিক চক্রের মাধ্যমে সংখ্যাবৃদ্ধি সম্পন্ন করে।

প্রশ্ন ১২। ব্যাকটেরিওফায বলতে কী বুঝ? (য, বাে, ‘১৬)
উত্তর : যে সকল ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার কোষাভ্যন্তরে বংশবৃদ্ধি ঘটিয়ে ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে সেগুলােকে ব্যাকটেরিওফায বা T2 ফায় বলে। T2 ফায, একটি ব্যাঙাচি বা শুক্রাণু আকৃতির ভাইরাস। এটি একটি দ্বিসূত্ৰক DNA ভাইরাস।

ভাইরাসজনিত রােগ : হেপাটাইটিস ও ডেঙ্গু

প্রশ্ন ১৩। হেমোেরজিক ডেঙ্গু বলতে কী বুঝ? (কু, বাে, ‘১৭)
উত্তর : ডেঙ্গ একটি মশাবাহিত সংক্রামক রােগ। এ রােগের ভাইরাস হলাে ফ্লাভি ভাইরাস। লক্ষণ অনুসারে এ রােগ ৩ প্রকার যথা : (ক) সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর (খ) হেমােরেজিক ডেঙ্গুজ্বর (গ) ডেঙ্গ শক সিন্ড্রোম। সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের জটিলতা থেকে হেমােরেজিক ডেঙ্গু দেখা দেয়। এ অবস্থায় কয়েকদিন পরপর রােগীর নাক, মুখ, দাতের মাড়ি ও ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। রক্তের প্লাটিলেট খুব কমে যায়, রক্ত বমি হতে পারে, চোখে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে ।

প্রশ্ন ১৪। ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণসমূহ লেখ। (য, বাে, ‘১৫)
উত্তর : ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণসমূহ হলাে—
১. হঠাৎ প্রচণ্ড জ্বর, ২. তীব্র মাথা ব্যথা, ৩, চোখের পেছনে ব্যথা, ৪.কোমড়, মাংসপেশি ও জয়েন্টে প্রচন্ড ব্যথা, ৫, বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব, ৬. চামড়ায় ছােট ছােট লাল ফুসকুড়ি।

ব্যাকটেরিয়া

প্রশ্ন ১৫। ব্যাকটেরিয়া কেন আদিকোষী জীব ব্যাখ্যা কর। (য, বাে, ‘১৯)
উত্তর : ব্যাকটেরিয়া মনেরা কিংডমের অন্তর্ভুক্ত একটি এককোষী আণুবীক্ষণিক অণুজীব। এই অণুজীবের দেহে সুগঠিত নিউক্লিয়াস অর্থাৎ নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ও নিউক্লিওলাস নেই। আমরা জানি, যেসব জীবকোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না তাদেরকে আদিকোষী জীব বলে। যেহেতু ব্যাকটেরিয়াতে সুগঠিত নিউক্লিয়াস নেই তাছাড়া সাইটোপ্লাজমে বিভিন্ন অঙ্গাণু বিদ্যমান থাকে না একারণে ব্যাকটেরিয়াকে আদিকোষী জীব বলা হয় ।

প্রশ্ন ১৬। এককোষী প্রাককেন্দ্রিক জীবের ২টি প্রধান বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর : এককোষী এককেন্দ্রিক জীবের ২টি প্রধান বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :
১. এদের কোষপ্রাচীরের প্রধান উপাদান, পেপটিডােগ্লাইকান বা মিউকোপেপটাইড; সাথে পলিস্যাকারাইড মুরাসিক এসিড এবং টিকোয়িক এসিড থাকে।
২. এদের বংশগতীয় উপাদান হলাে একটি দ্বিসূত্রক, বৃত্তাকার DNA অণু।

জীববিজ্ঞান চতুর্থ অধ্যায়ঃ অণুজীব অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর সাজেশান্স

ব্যাকটেরিয়া কোষের গঠন

প্রশ্ন ১৭। E.coli একটি আদিকোষী অণুজীব- ব্যাখ্যা কর। (চ. বাে, ‘১৭)
উত্তর : আদিকোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস, মাইটোকন্ড্রিয়া, এন্ডােপ্লাজমিক রেটিকুলাম, গলগি বডি ইত্যাদি থাকে না। এদের DNA চক্রাকার। কোষ বিভাজন অ্যামাইটোসিস ধরনের। E.coli অণুজীবে সুগঠিত নিউক্লিয়াস, মাইটোকন্ড্রিয়া, এন্ডােপ্লাজমিক রেটিকুলাম, গলগি বড়ি অনুপস্থিত। এদের DNA বৃত্তাকার এবং কোষ বিভাজন অ্যামাইটোসিস ধরনের। সুতরাং E.coli একটি আদিকোষী অণুজীব।

প্রশ্ন ১৮। ব্যাকটেরিয়া কোন কোষীয় অণুজীব?
উত্তর : ব্যাকটেরিয়া এককোষীয় অণুজীব। এরা প্রােক্যারিয়টিক। এদের কোষে সংগঠিত নিউক্লিয়াস নেই। এদের ঝিল্লিহীন নিউক্লিয়য়েড, যাদের মধ্যে রৈখিক ক্রোমােসােম নেই। এদের বৃত্তাকার DNA বিদ্যমান। এদের কোনাে সাইটোকঙ্কাল নেই।

ব্যাকটেরিয়ার জনন

প্রশ্ন ১৯। দ্বি-বিভাজন প্রক্রিয়া বলতে কী বােঝ?
উত্তর : দ্বিবিভাজন হলাে আদি কোষের অযৌন জনন প্রক্রিয়া যেখানে নিউক্লিয়াস বস্তু (DNA) সমান দুইভাগে বিভক্ত হয়। দ্বি-বিভাজন পদ্ধতি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান উপায় যেখানে একটি ব্যাকটেরিয়াম কোষ বিভক্ত হয়ে সমআকারের দুটিতে পরিণত হয় এবং এভাবেই দুত সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটতে থাকে।

প্রশ্ন ২০। ‘রেস্টিং স্পাের’ বলতে কী বুঝ?
উত্তর : এন্ডােস্পােরের সাহায্যে ব্যাকটেরিয়াম কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি হয় কাজেই একে বংশবৃদ্ধির অন্যতম উপায় হিসেবে বিবেচনা করামমাটেই যুক্ত নয়। বরং এন্ডােম্পােরকে প্রতিকূল এড়ানাের কৌশল হিসেবে নতুন ধরনের রেস্টিং স্পাের নামে অভিহিত করা অধিকতর যুক্তিসংগত।

ব্যাকটেরিয়ার অর্থনৈতিক গুরুত্ব

প্রশ্ন ২১। দুধ থেকে দই উৎপন্ন হয় কীভাবে?
উত্তর : দই একটি দুগ্ধজাত দ্রব্য। দুধের সাথে Lactobacillus বা Streptococcus নামক ব্যাকটেরিয়ার জৈবনিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে দুধ থেকে দই উৎপন্ন হয়। এরা দুধের ল্যাকটোজকে ভেঙে ল্যাকটিক এসিড উৎপন্ন করে যা দুধকে দইতে পরিণত করে।

প্রশ্ন ২২। চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা উল্লেখ কর।
উত্তর : ব্যাকটেরিয়া থেকে সাবটিলিন পলিমিক্সিন, স্টেপটোমাইসিন হতে ইত্যাদি জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিবায়ােটিক তৈরি হয়। ব্যাকটেরিয়া থেকে কলেরা, টাইফয়েড, যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া প্রভৃতি রােগের প্রতিষেধক তৈরি হয়। ডি.পি.টি (ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি ও ধনুষ্টংকার) রােগের প্রতিষেধক ব্যাকটেরিয়া হতে তৈরি হয়।

অনুশীলনঃ অণুজীব অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর সাজেশান্স

ব্যাকটেরিয়াজনিত রােগ (ধানের ব্লাইট)

প্রশ্ন ২৩। ধান গাছের ব্লাইট রােগের লক্ষণগুলাে লেখ।
উত্তর : ধান গাছের ব্লাইট রােগের লক্ষণগুলাে হচ্ছে-
১. গাছগুলাে ক্রমান্বয়ে হলুদ ও পরে ধূসর হয়ে যায়।
২. পাতায় ভেজা, অর্ধস্বচ্ছ ও লম্বা লম্বা দাগের সৃষ্টি হয় ।
৩, আক্রান্ত অংশ অনেকটা ঢেউ খেলানাের মতাে মনে হয়।
৪. আক্রান্ত গাছের অধিকাংশ ধান চিটায় পরিণত হয় ।

প্রশ্ন ২৪। ব্লাইট রােগ নিরাময়ে বীজ শােধন করতে হয় কেন?

উত্তর : ব্লাইট রােগটি সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে ঘটে। এ ব্যাকটেরিয়া বীজ ও মাটির মধ্যে অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। যেহেতু এ রােগ বীজ ধানের মাধ্যমে ছড়াতে পারে, তাই বীজ শােধন এ রােগ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম প্রধান উপায় । আর এজন্যই ব্লাইট রােগ নিরাময়ে বীজ শােধন করতে হয়।

কলেরা

প্রশ্ন ২৫। কলেরা আক্রান্ত রােগীর ডিহাইড্রেশন দেখা দেয় কেন? (ব, বাে, ‘১৯)
উত্তর : কলেরা একটি ব্যাকটেরিয়াঘটিত মারাত্মক পানিবাহিত সংক্রামক রােগ। Vibrio cholerae নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে মানুষের কলেরা রােগ হয়। আক্রান্ত রােগীর মলের মাধ্যমে এ রােগ ছড়ায়। পায়খানার প্রথম দিকে মল থাকলেও পরে চাল ধােয়া পানির মতাে নির্গত হয়। রােগীর দেহে জ্বর থাকে এবং বমি হয়। জ্বর এবং ঘন ঘন পানির ন্যায় পায়খানার ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও লবণ বের হয়ে যায়। শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও লবণ বের হওয়ার কারণেই কলেরা রােগীদের ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়।

ম্যালেরিয়া জীবাণু

প্রশ্ন ২৬। ম্যালেরিয়া জীবাণুর দুটি পােষকের প্রয়ােজনীয়তা কেন?
উত্তর : ম্যালেরিয়া জীবাণুর তথা Plasmodium Vivax এর জীবনচক্র সম্পন্ন করতে দুইটি পােষকের প্রয়ােজন হয়।
মানুষ : এ পরজীবির মাধ্যমিক পােষক কারণ মানুষের যকৃত ও লােহিত রক্ত কণিকায় এ জীবাণুর অযৌন জনন ঘটে।
মশকীঃ Anopheles গণভুক্ত মশকীর দেহে জীবাণুর যৌন জনন সম্পন্ন হয় বলে মশকী এ পরজীবির মুখ্য পােষক। সুতরাং বলা যায় ম্যালেরিয়া জীবাণুর জীবনচক্র সম্পন্ন করতে ২টি পােষকের প্রয়ােজন।

প্রশ্ন ২৭। সাইজন্ট বলতে কী বুঝ? (রা. বাে. ‘১৯; চ. বাে, ‘১৯;)
উত্তর : ম্যালেরিয়া পরজীবী যকৃত কোষে প্রবেশের পর স্পােরােজয়েট খাদ্য গ্রহণ করে আকৃতিতে বড় হয় এবং গােলাকৃতি ধারণ করে। এই দশাকে বলা হয় ক্রিপ্টোজয়েট। অতঃপর প্রতিটি ক্রিপ্টোজয়েটের নিউক্লিয়াস বারবার বিভাজিত হয়ে অসংখ্য নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি করে । বহু নিউক্লিয়াসবিশিষ্ট এই দশাকে সাইজন্ট বলে ।

বায়োলজিঃ অণুজীব অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর সাজেশান্স

প্রশ্ন ২৮। পরজীবী বলতে কী বুঝ? (য, বাে, ‘১৭; ব. বাে, ‘১৭)

উত্তর : যেসব জীব জীবনধারণের জন্য আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে অন্যপ্রজাতির জীবের উপর নির্ভরশীল হয় তাদেরকে পরজীবী বলে । পরজীবী স্বাধীন জীবনযাপনে অক্ষম, পােষক দেহ থেকে পুষ্টি ও আশ্রয় লাভ করে এবং পােষকের কিছু না কিছু ক্ষতি করে। যেমন-ম্যালেরিয়া পরজীবী।।

প্রশ্ন ২৯। কোনাে জীবের জীবনে জনুক্রম গুরুত্বপূর্ণ কেন বুঝিয়ে লিখ।
উত্তর : কোনাে জীবের জীবনে জনুক্রম গুরুত্বপূর্ণ কারণ-
১. জনুক্রম জীবের প্রজাতির ধারাকে অক্ষুন্ন রাখে।
২. জনুক্রম জীবের জীবনীশক্তিকে ফিরিয়ে আনে।
৩. জীবের বিস্তৃতিতে সহায়তা করে।
৪. জনুক্রম জীবের জীবন প্রবাহকে সহজতর করে।

প্রশ্ন ৩০। এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি বলতে বােঝায়?
উত্তর : মানুষের রক্তের লােহিত কণিকায় ম্যালেরিয়া জীবাণুর অযৌন জননকে এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি বলে। হেপাটিক সাইজোগনিতে সৃষ্ট মাইক্রো-মেটাক্রিপ্টোমেরােজয়েট রক্তের লােহিত কণিকাকে আক্রমণ করার পর এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি শুরু হয়।

প্রশ্ন ৩১। সিগনেট রিং সৃষ্টি হওয়ার কারণ কী?
উত্তর : হেপাটিক সাইজোগনি সম্পন্নের পর সৃষ্ট মেরােজয়েটগুলাে, লােহিত রক্ত কণিকার ভেতরে খাদ্য গ্রহণ করে স্ফীত গােল হয়ে ট্রফোজয়েটে পরিণত হয় । ট্রফোজয়েটের অভ্যন্তরে একটি গােল স্তর সৃষ্টি ; হয়ে ক্রমশ তা বড় হয়ে সাইটোপ্লাজমকে পরিধির দিকে সরিয়ে দেয়।নিউক্লিয়াসও এক পাশে অবস্থান নেয়। পরজীবীকে তখন পাথর বসানাে আংটির মতাে দেখায়। একে সিগনেট রিং বলে । অর্থাৎ সাইটোপ্লাজমকে পরিধির দিকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যই সিগনেট রিং সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন ৩২। রােজেট দশা বলতে কী বুঝ?
উত্তর : ম্যালেরিয়া ও পরজীবীর সাইজন্ট দশার নিউক্লিয়াস সাইটোপ্লাজমাসহ প্লাজমা মেমব্রেন বিভক্ত হয়ে ১২-১৮ টি মেরােজয়েন্ট উৎপন্ন করে তখন একে গােলাপের পাপড়ির ন্যায় সজ্জিত থাকে একে রােজাট দশা বলে ।

প্রশ্ন ৩৩। কেবল অ্যানােফিলিস মশকীই ম্যালেরিয়া জীবাণু বহন করে কেন?

উত্তর : অ্যানােফিলিস মশকীই ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে। কারণ-দংশনের সময়কাল, পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা ও মশকীদেহে স্পােরােগনি ঘটানাের সমস্ত উপাদান Plasmodiun-এর অনুকূলে থাকায় কেবল Anopheles মশকীর দেহেই জীবাণুর পরিস্ফুটন ও বহন সম্পন্ন হয়। তাছাড়া অন্য প্রজাতীর মশকীর দেহে এমন বিষাক্ত উপাদান থাকে যা Plasmodiun এর জন্য ধংসাত্মক। তাই কেবল Anopheles মশকীই ম্যালেরিয়া জীবাণু বহন করে এবং রােগ ছড়ায়।

প্রশ্ন ৩৪। হেপাটিক সাইজোগনি বলতে কী বােঝায়? (রা, বাে, ‘১৫)
মানুষের যকৃতকোষে সংঘটিত ম্যালেরিয়ার পরজীবীর বহুবিভাজন প্রক্রিয়ার যৌন জননকে হেপাটিক সাইগােজনি বলে । এটি মানবদেহের যকৃত কোষে দুটি পর্যায়ে ঘটে যথা (ক) প্রি-এরিথ্রোসাইটিক সাইগােজনি (খ) এ্যাক্সো-এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি। মানবদেহে প্রবেশের পর ম্যালেরিয়ার পরজীবীর প্রথম অযৌন প্রজননকে প্রি-এরিথ্রোসাইটিক সাইগােজনি বলে। আর প্রি-এরিথ্রোসাইটিক চক্রে উৎপন্ন ক্রিপ্টোমেরােজয়েটগুলাে নতুন যকৃতকোষকে আক্রমণের মাধ্যমে এক্সো-এরিথ্রোসাইটিক পর্যায়ের সূচনা করে।

প্রশ্ন ৩৫। ম্যালেরিয়া রােগে রক্তশূন্যতা সৃষ্টি হয় কেন?

উত্তর : ম্যালেরিয়া রােগে লােহিত কণিকা থেকে মেরােজয়েট বের হওয়ার সময় কণিকা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এছাড়া আক্রান্ত প্লীহা থেকে লাইসাে লেসিথিন নামক এক প্রকার রস নিঃসৃত হয় যা লােহিত কণিকাকে ধ্বংস করে এবং ম্যালেরিয়াগ্রস্ত রােগীর যকৃত আক্রান্ত হওয়ায় লােহিত কণিকা সৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে দেহে রক্তশূন্যতা সৃষ্টি হয় ।

প্রশ্ন ৩৬। ম্যালেরিয়া জ্বরের কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : Anopheles মশকীবাহিত এক ধরনের মারাত্বক জ্বররােগ এর নাম ম্যালেরিয়া । Plasmodium গণভূক্ত এককোষী পরজীবী এ রােগ সৃষ্টি করে। এ রােগে লােহিত রক্ত কণিকা ধ্বংস হয় বলে ম্যালেরিয়া জ্বরের সৃষ্টি হয়। মানুষসহ বিভিন্ন মেরুদণ্ডী প্রাণী এ রােগে আক্রান্ত হতে পারে।

প্রশ্ন ৩৭। প্রি-এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি পর্যায়ে স্পােরােজয়েটগুলাে যকৃতে এসে আশ্রয় নেয় কেন?
Anopheles মশকীর লালাগ্রন্থিতে Plasmodium-এর স্পােরােজয়েট দশাটি পরিণত অবস্থায় সঞ্চিত থাকে। এ জাতীয় মশকীর দংশনের ফলে স্পােরােজয়েটগুলাে লালারসের সাথে মানুষের দেহে প্রবেশ করে এবং রক্তস্রোতের মাধ্যমে বাহিত হয়ে কেমােট্যাক্সিস (Chemotaxis) এর কারণে যকৃতে এসে আশ্রয় নেয়।

এই অণুজীব অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর সাজেশান্স ছাড়াও ক্লিকঃ

Leave a Comment

You cannot copy content of this page