সারাংশ ┃জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

সারাংশ ┃ জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস সহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নিন্মবর্ণিত গুরত্বপূর্ণ ২৫+ সারাংশ দেওয়া হয়েছে। এই সারাংশগুলো অনুশীন করলেই পরীক্ষায় কমন আসবে।

Read More:

১. যে মরিতে জানে, সুখের অধিকার তাহারই। যে জয় করে, ভোগ করা তাহাকেই সাঝে। যে লোক জীবনের সঙ্গে · সুখকে,বিলাসকে দুই হাতে আঁকড়াইয়া থাকে, সুখ তাহার সেই ক্রীতদাসের কাছে নিজের সমস্ত ভাণ্ডার খুলিয়া দেয় না। তাহাকে উচ্ছিষ্ট মাত্র দিয়া দ্বারে ফেলিয়া রাখে। আর মৃত্যুর আহ্বান মাত্র যাহারা তুড়ি মারিয়া চলিয়া যায়, চির আদৃত সুখের দিকে একবার পিছন ফিরিয়া তাকায় না, সুখ তাহাদিগকে চায়। সুখ তাহারাই জানে। যাহারা সবলে ত্যাগ করিতে পারে, তাহারাই প্রবলভাবে ভোগ করিতে পারে।

সারাংশ: সুখ এবং ভোগ সর্বদা সাহসী, লড়াকু এবং মৃত্যুঞ্জয়ী মানুষের অধীনতা স্বীকার করে চলে এবং এরা কখনোই ভোগ-সুখের অনুগামী হয় না। অপরদিকে ভীরু এবং কাপুরুষ ব্যক্তি ভোগ-সুখের পেছনে নিজের সর্বস্ব সমর্পণ করে দেয়। কিন্তু প্রকৃত সুখের দেখা পায় না। সুখের সামান্য পরিত্যাক্ত অংশ লাভ করে এরা তার আজ্ঞাবহ হয়ে থাকে। প্রকৃত পক্ষে ত্যাগের ক্ষমতা যার যত বেশি ভোগ-সুখের অধিকার তার ততোধিক।

২) অভাব আছে বলিয়া জগৎ বৈচিত্র্যময় হইয়াছে। অভাব না থাকিলে জীব-সৃষ্টি বৃথা হইত। অভাব আছে বলিয়া অভাব পূরণের জন্য এত উদ্যোগ। সংসীর অভাবক্ষেত্র বলিয়াই কর্মক্ষেত্র। অভাব না থাকিলে সকলেই স্থাণু-স্থবির হইত, মনুষ্যজীবন বিড়ম্বনাময় হইত।মহাজ্ঞানীগণ অপরের অভাব দূর করিতে সর্বদা ব্যস্ত। জগতে অভাব আছে বলিয়াই মানুষ সেবা করিবার সুযোগ পাইয়াছে। সেবা মানবজীবনের পরম ধর্ম। সুতরাং, অভাব হইতেই সেবাধর্মের সৃষ্টি হইয়াছে। আর এই সেবাধর্মের দ্বারাই মানুষের মনুষ্যত্বসুলভ গুণ অর্জনের মাধ্যমে সার্থকতা লাভ করিয়াছে ।

সারাংশ: অভাব জগৎকে বৈচিত্র্যময়, জীবনকে কর্মময় ও মানুষকে উদ্যোগী করে তোলে। অভাব সেবাধর্মেরও উৎস। অপরের অভাব দূরীকরণের জন্য সহানুভূতিশীল হৃদয় মানবতাবোধে মহান হয়ে ওঠে।

সারাংশ ┃জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

৩) অমঙ্গলকে জগৎ হইতে হাসিয়া উড়াইয়া দিবার চেষ্টা করিও না।তাহা হইলে মঙ্গলসমেত উড়িয়া যাইবে। মঙ্গলকে যেভাবে গ্রহণ করিয়াছ, অমঙ্গলকেও সেইভাবে গ্রহণ করো। অমঙ্গলের উপস্থিতি দেখিয়া ভীত হইতে পারো, কিন্তু বিস্মিত হইবার হেতু নাই । অমঙ্গলের উৎপত্তির অনুসন্ধান করিতে যাইয়া অকূলে হাবুডুবু খাইবার দরকার নাই। যেদিন জগতে মঙ্গলের আবির্ভাব হইয়াছে, সেই দিনই অমঙ্গলের যুগপৎ উদ্ভব হইয়াছে।

একই দিনে, একই ক্ষণে, একই উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে উভয়ের উৎপত্তি। এক-কে ছাড়িয়া অন্যের অস্তিত্ব নাই, এক-কে ছাড়িয়া অন্যের অর্থ নাই। যেখান হইতে মঙ্গল, ঠিক সেখান হইতেই অমঙ্গল। সুখ ছাড়িয়া দুঃখ নাই, দুঃখ ছাড়িয়া সুখ নাই। একই প্রয়োজনে, একই নির্ঝরের ধারাতে উভয় স্রোতস্বিনী জন্মলাভ করিয়াছে, একই সাগরে উভয়ে গিয়া মিশিয়াছে ।

সারাংশ: পৃথিবীতে মঙ্গল-অমঙ্গল, সুখ-দুঃখ একে-অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত । এদের একটিকে বাদ দিলে অন্যটি অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে। পৃথিবীতে অমঙ্গল আর দুঃখ আছে বলেই মঙ্গল ও সুখের মূল্য আমরা অনুধাবন করতে পারি।

৪) অপরের জন্য তুমি তোমার প্রাণ দাও, আমি বলতে চাইনে।অপরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দুঃখ তুমি দূর করো। অপরকে একটুখানি সুখ দাও। অপরের সঙ্গে একটুখানি মিষ্টি কথা বলো। পথের অসহায় মানুষটির দিকে একটা করুণ কটাক্ষ নিক্ষেপ করো। তাহলেই অনেক হবে। চরিত্রবান, মনুষ্যত্বসম্পন্ন মানুষ নিজের চেয়ে পরের অভাবে বেশি অধীর হন, পরের দুঃখকে ঢেকে রাখতে গৌরববোধ করেন।

সারাংশ: অন্যের দুঃখে প্রাণ দিতে হবে এমন নয়, সামান্য চেষ্টাতেই মানুষকে সুখী করা যায়। সুন্দর ব্যবহার ও সহানুভূতির মাধ্যমেই অনেক উপকার হতে পারে। প্রকৃত মানুষ পরের দুঃখে ব্যথিত হন এবং তা দূর করতে সাধ্যানুসারে সচেষ্ট হন।

৫) অভ্যাস ভয়ানক জিনিস। একে হঠাৎ স্বভাব থেকে তুলে ফেলা কঠিন। মানুষ হবার সাধনাতেও তোমাকে সহিষ্ণু হতে হবে। সত্যবাদী হতে চাও? তাহলে ঠিক করো, সপ্তাহে অন্তত এক দিন মিথ্যা বলবে না। ছয় মাস ধরে এমনই করে নিজে সত্য কথা বলতে অভ্যাস করো। তারপর এক শুভদিনে আর একবার প্রতিজ্ঞা করো, সপ্তাহে তুমি দুদিন মিথ্যা বলবে না। এক বছর পরে দেখবে সত্য কথা বলা তোমার কাছে অনেকটা সহজ হয়ে পড়েছে। সাধনা করতে করতে এমন একদিন আসবে যখন ইচ্ছে করলেও মিথ্যা বলতে পারবে না। নিজেকে মানুষ করার চেষ্টায় পাপ ও প্রবৃত্তির সঙ্গে সংগ্রামে তুমি হঠাৎ জয়ী হতে কখনো ইচ্ছা করো না, তাহলে সব পণ্ড হবে।

সারাংশ: অভ্যাসের আকস্মিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন লক্ষ্যস্থির করে সে লক্ষ্য অর্জনে ক্রমাগত সাধনা করে যাওয়া। এক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো ব্যর্থতাকেই নিশ্চিত করে।

সারাংশ ┃জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

৬) অনেকের ধারণা এই যে, মহৎ ব্যক্তি শুধু উচ্চ বংশেই জন্মগ্রহণ করিয়া থাকেন; নিচকুলে মহত্ত্বের জন্ম হয় না। কিন্তু প্রকৃতির দিকে দৃষ্টিপাত করিলেই দেখা যায় যে, মানুষের ধারণা অতিশয় ভ্রমাত্মক। পদ্মফুল ফুলের রাজা। রূপ-গন্ধে সে অতুলনীয়। কিন্তু ইহার জন্ম হয় পানের অযোগ্য পানিভরা এঁদো পুকুরে। পক্ষান্তরে, বটবৃক্ষ বৃক্ষকুলের মধ্যে বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন বটে, অথচ বহু বৃক্ষের ফল আমরা আস্বাদন করি, এত খ্যাতনামা যে বটগাছ তাহার ফল আমাদের অখাদ্য।

সারাংশ: উঁচু-নিচু তথা সমাজের যেকোনো স্তর থেকেই মহৎ ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটতে পারে। তাই কর্মই পৃথিবীতে মানুষের সাফল্য অর্জনের চাবিকাঠি।

৭. আজকের দুনিয়াটা আশ্চর্যভাবে অর্থের বা বিত্তের ওপর নির্ভরশীল লাভ ও লোভের দুর্নিবার গতি কেবল আগে যাবার নেশায় লক্ষ্যহীন প্রচণ্ডবেগে শুধু আত্মবিনাশের পথে এগিয়ে চলেছে। মানুষ যদি এই মূঢ়তাকে জয় না করতে পারে তবে মনুষ্যত্ব কথাটাই হয়তো লোপ পেয়ে যাবে। মানুষের জীবন আজ এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে সেখান থেকে আর হয়তো নামবার উপায় নেই, এবার উঠবার সিঁড়ি না খুঁজলেই নয়। উঠবার সিঁড়িটা না খুঁজে পেলে আমাদের আত্মবিনাশ যে অনিবার্য তাতে আর কোনো সন্দেহ থাকে না

সারাংশ: বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ নেশাগ্রস্তের মতো ধন সম্পদের পেছনে ধাবমান। অর্থের এ অন্ধ নেশা মানুষের আত্মবিনাশের পথকেই প্রশস্ত করছে। অথচ এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এখনই এ নেশা পরিত্যাগ করা প্রয়োজন।

৮) আমরা ছেলেকে স্কুল-কলেজে পাঠিয়ে ভাবি যে, শিক্ষা দেওয়ার সমস্ত কর্তব্য পালন করলাম। বৎসরের পর বৎসর পাস করে গেলেই অভিভাবকরা যথেষ্ট তারিফ করেন। কিন্তু তলিয়ে দেখেন না যে, কেবল পাস করলেই বিদ্যার্জন হয় না। বাস্তবিক পক্ষে ছাত্রের বা সন্তানের মনে জ্ঞানানুরাগ বা জ্ঞানের প্রতি আনন্দজনক শ্রদ্ধার উদ্রেক হচ্ছে কি না, তা-ই দেখবার জিনিস। জ্ঞানচর্চার মধ্যে যে এক পরম রস ও আত্মপ্রসাদ আছে, তার স্বাদ কোনো কোনো শিক্ষার্থী একবিন্দুও পায় না।

সারাংশ: শিক্ষা শুধু সার্টিফিকেট অর্জনের বিষয় নয়। আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষালাভ করে জ্ঞানচর্চার রস উপলব্ধি করতে পারলেই শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য অর্জিত হয়।

সারাংশ ┃জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

৯) এটা স্মরণ রাখা কর্তব্য যে, পৃথিবীতে যেখানে এসে তুমি থামবে,সেখান থেকেই তোমার ধ্বংস আরম্ভ হবে। কারণ তুমিই কেবল একলা থামবে, আর কেউ থামবে না। জগৎ-প্রবাহের সঙ্গে সমগতিতে যদি না চলতে পার তো প্রবাহের সমস্ত সচল বেগ তোমার ওপর এসে আঘাত করবে একেবারে বিদীর্ণ, বিপর্যস্ত হবে কিংবা অল্পে অল্পে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে কাল স্রোতের তলদেশে অন্তর্হিত হয়ে যাবে। হয় অবিরাম চল এবং জীবনচর্চা কর, নয় বিশ্রাম কর এবং বিলুপ্ত হও, পৃথিবীর নিয়ম এই রকমই।

সারাংশ: পৃথিবীতে কারও থেমে থাকার সুযোগ নেই, কারণ পৃথিবীর সবকিছুই চলমান। গতিময় এ বিশ্বে থেমে থাকী মৃত্যুরই নামান্তর। কাজেই বাঁচতে হলে প্রত্যেককে বিশ্বের প্রবহমানতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে অথবা মৃত্যুকে বরণ করতে হবে।

১০. কাব্যরস নামক অমৃতে যে আমাদের অরুচি জন্মেছে তার জন্য দায়ী এযুগের স্কুল এবং তার মাস্টার। কাব্য পড়বার ও বোঝবার জিনিস কিন্তু স্কুলমাস্টারের কাজ হচ্ছে বই পড়ানো ও বোঝানো। লেখক ও পাঠকের মধ্যে এখন স্কুলমাস্টার দণ্ডায়মান। এই মধ্যস্থদের কৃপায় আমাদের সঙ্গে কবির মনের মিলন দূরে থাক, চার চক্ষুর মিলনও ঘটে না। স্কুলঘরে আমরা কাব্যের রূপ দেখতে পাইনে, শুধু তার গুণ শুনি। টীকা-ভাষ্যের প্রসাদে আমরা কাব্য সমসৎ সফল নিগূঢ় তত্ত্ব জানি। কিন্তু সে যে কী বস্তু তা চিনিনে। আমাদের শিক্ষকদের প্রসাদে আমাদের এ জ্ঞান লাভ হয়েছে যে, পাথুরে কয়লা হীরার সবর্ণ না হলেও সগোত্র; অপর পক্ষে হীরক ও কাচ যমজ হলেও সহোদর নয়।

সারাংশ: কাব্য গড়ার ও বোঝার জিনিস। তাকে শিক্ষকের ব্যাখ্যায় তত্ত্বের বিষয়রূপে জানা যায় বটে কিন্তু তাতে কাব্যরসের আস্বাদন সম্ভব হয় না।

১১. কীসে হয় মর্যাদা? দামি কাপড়, গাড়ি, ঘোড়া ও ঠাকুরদাদার কালের উপাধিতে? না— মর্যাদা এইসব জিনিসে নাই। আমি দেখতে চাই তোমার ভিতর, তোমার মাথা দিয়ে কুসুমের গন্ধ বেরোয় কি না। তোমায় দেখলে দাসদাসী দৌড়ে আসে। প্রজারা তোমায় দেখে সন্ত্রস্ত হয়, তুমি মানুষের ঘাড়ে চড়ে হাওয়া খাও, মানুষকে দিয়ে জুতা খোলাও, তুমি দিনের আলোতে মানুষের টাকা আত্মসাৎ করো। বাপ-মা-শ্বশুর-শাশুড়ি তোমায় আদর করেন। আমি তোমায় অবজ্ঞায় বলব— যাও।

সারাংশ: ধনসম্পদ আর প্রতাপ-প্রতিপত্তির প্রাচুর্যে ও আভিজাত্যে সমাজে মানুষের মর্যাদা বাড়ে না। দুশ্চরিত্র ও মিথ্যা আভিজাত্য আর অহমিকায় বিভোর ব্যক্তি অবজ্ঞার পাত্র।

সারাংশ ┃জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

১২. কোনো সভ্য জাতিকে অসভ্য করার ইচ্ছা যদি কারও থাকে,তাহলে তাদের সব বই ধ্বংস করতে হবে এবং সকল পণ্ডিতকে হত্যা করতে হবে। এতে উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে। লেখক, সাহিত্যিক ও পণ্ডিতরাই জাতির আত্মা। এই আত্মাকে যারা অবহেলা করে,তারা বাঁচে না। দেশ বা জাতিকে উন্নত করতে হলে জ্ঞান ও সাহিত্যের বিকল্প নেই: পণ্ডিত ও সাহিত্যিক ছাড়া উপায় নেই।

সারাংশ: বই ও পণ্ডিতজনেরাই হলো একটা জাতির প্রাণশক্তি। দেশ ও জাতির প্রাণকে জাগাতে হলে এ দুয়ের প্রতি ভক্তি ও অনুশীলন বৃদ্ধি করতে হবে। সাহিত্যের বিকাশ এবং বিজ্ঞজনের সংখ্যা যত বিকশিত হবে জাতি তত বেশি উন্নত হবে।

১৩. খুব ছোট ছিদ্রের মধ্য দিয়ে যেমন সূর্যকে দেখা যায়, তেমনি ছোট ছোট কাজের ভেতর দিয়েও কোন ব্যক্তির চরিত্র ফুটে উঠে। বস্তুত মর্যাদাপূর্ণভাবে ও সুচারুরূপে সম্পন্ন ছোট ছোট কাজেই চরিত্রের পরিচয়। অন্যের প্রতি ব্যবহার কিরূপ তাই হচ্ছে আমাদের চরিত্রের শ্রেষ্ঠ পরীক্ষা। বড়, ছোট ও সমতুল্যের প্রতি সুশোভন ব্যবহার আনন্দের নিরবচ্ছিন্ন উৎস।

সারাংশ: মানুষের সত্যিকার পরিচয় তার চরিত্র । ছোট বড় প্রতিটি কাজে তার চরিত্রের স্বরূপ প্রকাশ পায়। মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহারের মধ্যেই নিহিত থাকে চরিত্র গুণ।

১৪. চরিত্র ছাড়া মানুষের গৌরব করার আর কিছুই নেই। মানুষের শ্রদ্ধা যদি মানুষের প্রাপ্য হয়, মানুষ যদি মানুষকে শ্রদ্ধা করে, সে শুধু তার চরিত্রের জন্য। অন্য কোনো কারণে মানুষের মাথা মানুষের সামনে নত হওয়ার দরকার নেই। জগতে যে সকল মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁদের গৌরবের মূলে এই চরিত্রশক্তি। তুমি চরিত্রবান ব্যক্তি— এ কথার অর্থ এই নয় যে, তুমি শুধু লম্পট নও। তুমি সত্যবাদী, বিনয়ী এবং জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করো। তুমি পরদুঃখকাতর, ন্যায়বান এবং স্বাধীনতাপ্রিয় চরিত্রবান মানে এই।

সারাংশ: চরিত্রবান বলতে বোঝায় কামপ্রবৃত্তির ক্ষেত্রে সংযমী, সত্যবাদী, জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও পরোপকারী, স্বাধীনতাপ্রিয়, বিনয়ী এক সৎ ব্যক্তিত্বকে। যে ঐ গুণাবলি অর্জন করতে পারে মানুষ তাকে শ্রদ্ধা করে।

সারাংশ ┃জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

১৫. জীবন বৃক্ষের শাখায় যে ফুল ফোটে তা-ই মনুষ্যত্ব। বৃক্ষের গোড়ায় জল ঢালতে হবে এই ফুলের দিকে লক্ষ রেখে। শুধু শুধু মাটির রস টেনে গাছটা মোটা হয়ে উঠবে, এই ভেবে কোনো মালী গাছের গোড়ায় জল ঢালে না। সমাজব্যবস্থাকেও ঠিক করতে হবে মানুষকে খাইয়ে-দাইয়ে মোটা করে তোলবার জন্য নয়, মানুষের অন্তরে মূল্যবোধ তথা সৌন্দর্য, প্রেম ও আনন্দ সম্বন্ধে চেতনা জাগিয়ে তোলবার উদ্দেশে। যখন এই চেতনা মানুষের চিত্তে জাগে তখন এক আধ্যাত্মিক সুষমায় তার জীবন পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং তারই প্রতিফলনে সমস্ত জগৎ আলোময় হয়ে দেখা দেয়। ফলে মানুষ ইতর জীবনের গুরুভার থেকে মুক্তি পেয়ে নিজেকে লঘুপক্ষ প্রজাপতির মতো হালকা মনে করে

সারাংশ: মানুষের জীবন তখনই সফল হয় যখন তার মধ্যে মনুষ্যত্বের জাগরণ ঘটে। সৌন্দর্য, প্রেম, আনন্দ প্রভৃতি যে সকল মূল্যবোধ মানুষের অন্তরে বিরাজমান, সেসবের জাগরণে তার জীবনে প্রশান্তি আসে।

১৬. জ্ঞানের স্পৃহা ছাড়া শিক্ষা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। তখন পরীক্ষা পাসটাই বড় হয়। এতে পরীক্ষায় পাস করা লোকের অভাব না থাকলেও জ্ঞানীর অভাব দেখা দেয়। পরীক্ষা পাসের মোহ যদি ছাত্রছাত্রীদের উৎকণ্ঠিত রাখে, তবে জ্ঞান নির্বাসনে চলে যায়। পৃথিবীতে অক্ষয় আসন লাভের জন্য তরুণ সমাজকে জ্ঞানের প্রতি উৎসাহী করে তুলতে হবে। পরীক্ষা পাসের মোহ থেকে মুক্ত না হলে তরুণ সমাজের সামনে কখনোই জ্ঞানের দিগন্ত উন্মোচিত হবে না।

সারাংশ: শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য জ্ঞানার্জন। উদ্দেশ্যবিহীন শিক্ষা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। জ্ঞানের পিপাসা ব্যতীত প্রকৃত জ্ঞানী তৈরি হয় না। পরীক্ষার শৃঙ্খল প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করে। পরীক্ষার মোহ থেকে মুক্ত করে তরুণদের জ্ঞানচর্চায় উৎসাহিত করতে হবে।

১৭. স্বাধীন হবার জন্যে যেমন সাধনার প্রয়োজন, তেমনই স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রয়োজন সত্যনিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়ণতার। সত্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধহীন জাতি যতই চেষ্টা করুক, তাদের আবেদন-নিবেদনে ফল হয় না। যে জাতির অধিকাংশ ব্যক্তি মিথ্যাচারী, সেখানে দু-চারজন সত্যনিষ্ঠকে বহু বিড়ম্বনা সহ্য করতে হয়, দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কিন্তু মানুষ জাতি হিসেবে মাথা তুলে ২১. দাঁড়াতে হলে সে কষ্ট সহ্য না করে উপায় নেই।

সারাংশ: স্বাধীনতা অর্জন ও রক্ষা উভয়ই খুব কঠিন কাজ। স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য যেমন ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সাধনার প্রয়োজন তেমনই তা রক্ষার জন্য সত্যনিষ্ঠা, ন্যায়পরায়ণতা, কঠোর পরিশ্রম ও সাধনার প্রয়োজন। যে জাতির অধিকাংশ মানুষ অন্যায়কারী ও মিথ্যাচারী সেখানে সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তিকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

সারাংশ ┃জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

১৮. শ্রেষ্ঠ বলিয়া অহংকার করিতে যে লজ্জাবোধ করে না, যে মানুষকে নিম্নাসনে বসাইয়া রাখিতে আনন্দবোধ করে, যে দরিদ্র ও ছোটকে ছোট করিয়া রাখিতে কষ্ট অনুভব করে না, যে মানুষের শক্তি- স্বাধীনতা হরণ করিতে ব্যস্ত, যে মানুষের হাত দিয়া নিজের পায়ের জুতা খুলাইয়া লয়, তোমরা তাহাদিগকে সালাম করিও না। সে ‘সারারাত্রি প্রার্থনা করুক, মানুষ তাহার পদধূলি লইয়া মাথায় মাখুক, সে প্রথম শ্রেণির গাড়িতে চড়ুক, সে রাজদরবারের সদস্য হউক,তোমরা তাহাকে আত্মীয় মনে করিও না। লক্ষ নরনারী মুক্তির আশায় করুণ নেত্রে তোমাদের দিকেই চাহিয়া আছে। লক্ষ, কোটি মানবাত্মা তোমাদের আগমনের অপেক্ষা করিতেছে। যে দুর্বৃত্তের দল সত্যকে চূর্ণ করিয়া মহান সৃষ্টিকর্তার বাণীকে অবমাননা করিতেছে, তাহাদিগকে দেখিয়া আর তোমরা শ্রদ্ধায় আসন ছাড়িয়া দাঁড়াইও না।

সারাংশ: অন্যের সেবা ও আনুগত্য পাওয়ার জন্য যারা ক্ষমতার দাপট দেখায়, তারা কখনোই মহৎ বলে বিবেচিত হতে পারে না। এমন প্রকৃতির লোক যতই বিত্তবান বা প্রভাবশালী হোক না কেন তারা সম্মানিত হতে পারে না। প্রকৃত সম্মান ও মর্যাদা পেতে হলে বঞ্চিত-লাঞ্ছিত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে অগ্রসর হতে হবে।

১৯, সমাজের কাজ কেবল টিকে থাকার সুবিধা দেওয়া নয়, মানুষকে বড় করে তোলা, বিকশিত জীবনের জন্য মানুষের জীবনে আগ্রহ জাগিয়ে দেওয়া। স্বল্পপ্রাণ, স্থূলবুদ্ধি ও জবরদস্তিপ্রিয় মানুষে সংসার পরিপূর্ণ। তাদের কাজ নিজের জীবনকে সার্থক ও সুন্দর করা নয়, অপরের সার্থকতার পথে অন্তরায় সৃষ্টি করা। প্রেম ও সৌন্দর্যের স্পর্শে অন্তরায় সৃষ্টি করা। প্রেম ও সৌন্দর্যের স্পর্শ লাভ করেনি বলে এরা নিষ্ঠুর ও বিকৃতবুদ্ধি। এদের একমাত্র দেবতা অহংকার। তারই চরণে এরা নিবেদিতপ্রাণ। ব্যক্তিগত অহংকার, পারিবারিক অহংকার, জাতিগত অহংকার এসবের নিশান ওড়ানোই এদের কাজ। মাঝে মাঝে মানবপ্রেমের কথাও তারা বলে কিন্তু তাতে নেশা ধরে না; মনে হয় আন্তরিকতাশূন্য উপলব্ধিহীন বুলি।

সারাংশ: কেবল টিকিয়ে রাখা নয়, বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন বিকশিত মানসিকতা গড়ে তোলাই সমাজের কাজ। প্রেম ও সৌন্দর্য বিবর্জিত অহংকারী মানুষ নিজের কল্যাণের চেয়েও অন্যের অকল্যাণেই বেশি আগ্রহী। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, জাতীয় জীবনে অহংকার চর্চাই তাদের বৈশিষ্ট্য। তাদের দেশপ্রেমের কথা যে কেবলই উপলব্ধিহীন বুলি সেটাও খুব সহজেই ধরা পড়ে।

সারাংশ ┃জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

২০. স্বাধীন হবার জন্যে যেমন সাধনার প্রয়োজন, তেমনই স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রয়োজন সত্যনিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়ণতার। সত্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধহীন জাতি যতই চেষ্টা করুক, তাদের আবেদন-নিবেদনে ফল হয় না। যে জাতির অধিকাংশ ব্যক্তি মিথ্যাচারী, সেখানে দু-চারজন সত্যনিষ্ঠকে বহু বিড়ম্বনা সহ্য করতে হয়, দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কিন্তু মানুষ জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে হলে সে কষ্ট সহ্য না করে উপায় নেই।

সারাংশ: স্বাধীনতা অর্জন ও রক্ষা উভয়ই খুব কঠিন কাজ। স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য যেমন ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সাধনার প্রয়োজন তেমনই তা রক্ষার জন্য সত্যনিষ্ঠা, ন্যায়পরায়ণতা, কঠোর পরিশ্রম ও সাধনার প্রয়োজন। যে জাতির অধিকাংশ মানুষ অন্যায়কারী ও মিথ্যাচারী সেখানে সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তিকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

২১. মানুষের সুন্দর মুখ দেখে আনন্দিত হয়ো না। স্বভাবে যে সুন্দর নয়,দেখতে সুন্দর হলেও তার স্বভাব, তার স্পর্শ, তার রীতিনীতিকে মানুষ ঘৃণা করে। দুঃস্বভাবের মানুষ মানুষের হৃদয়ে জ্বালা ও বেদনা দেয়, তার সুন্দর মুখে মনুষ্য তৃপ্তি পায় না। অবোধ লোকেরাই মানুষের রূপ দেখে মুগ্ধ হয় এবং তার ফল ভোগ করে। যার স্বভাব মন্দ, সে নিজেও দুষ্ক্রিয়াশীল, মিথ্যাবাদী দুর্মতিকে ঘৃণা করে। মানুষ নিজে স্বভাবে সুন্দর না হলেও সে স্বভাবের সৌন্দর্যকে ভালোবাসে।স্বভাব গঠনে কঠিন পরিশ্রম ও সাধনা চাই।

সারাংশ: মানুষের জীবনে সুন্দর মুখের চেয়ে স্বভাবের সৌন্দর্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ স্বভাবের সৌন্দর্যই প্রকৃত সুন্দর। নিজের স্বভাব ভালো না হলেও মানুষ অপরের স্বভাবের ভালো দিক ভালোবাসে। তাই প্রত্যেকের উচিত পরিশ্রম ও সাধনার মাধ্যমে সুন্দর স্বভাব গড়ে তোলা।

সারাংশ ┃জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

২২. নিষ্ঠুর ও কঠিন মুখ শয়তানের। কখনও নিষ্ঠুর বাক্যে প্রেম ও কল্যাণের প্রতিষ্ঠা হয় না। কঠিন ব্যবহারে ও বৃঢ়তায় মানবাত্মার অধঃপতন হয়। সাফল্য কিছু লাভ হইলেও যে আত্মা দরিদ্র হইতে থাকে, সুযোগ পাইলেই সে আপন পশু স্বভাবের পরিচয় দেয়। যে পরিবারের কর্তা ছোটদের সঙ্গে অতিশয় কদর্য ব্যবহার করে, সে পরিবারের প্রত্যেকের স্বভাব অতিশয় মন্দ হইতে থাকে । শিশুর প্রতি একটি নিষ্ঠুর কথা, এক একটি মায়াহীন ব্যবহার, তাহার মনুষ্যত্ব অনেকখানি কমাইতে থাকে। অতএব, শিশুকে নিষ্ঠুর কথা বলিয়া তাহার সঙ্গে প্রেমহীন ব্যবহার করিয়া তাহার সর্বনাশ করিও না।একটা মধুর ব্যবহার অনেকখানি রক্তের মতো শিশুর মনুষ্যত্বকে সঞ্জীবিত করে। পরিবারের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উন্নতির জন্য সকলের চেষ্টা করা উচিত। ইহাই পরিবারের প্রতি প্রেম।

সারাংশ: নিষ্ঠুর এবং কঠিন বাক্য মোটেও উন্নত চরিত্রের পরিচায়ক নয়। নিষ্ঠুর ও কঠিন আচরণে শিশুর মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়। এ ধরনের আচরণ মনুষ্যত্বের অন্তরায়। তাই পারিবারিক প্রেম ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য একে-অপরের সঙ্গে রূঢ় ও কঠিন ব্যবহার পরিহার করা উচিত।

২৩. নিরবচ্ছিন্ন এক বিদ্যা আলোচনা দ্বারা যদিও সেই বিদ্যায় পারদর্শিতা লাভ হইতে পারে, কিন্তু মনের সাধারণ শক্তি তার দ্বারা বৃদ্ধি না হইয়া বরং হ্রাস হইয়া যায়; এবং এই রূপে পণ্ডিতমূর্খ বলিয়া যে এক শ্রেণির বিচিত্র লোক আছে, তাহার সৃষ্টি হয়। বিদ্যা শিক্ষা করিয়াও যদি মানসিক শিক্ষার অভাবে লোকে এইরূপ পরিহাস ভাজন হইতে পারে, তবে সেই অত্যাবশ্যক মানসিক শিক্ষা কী এবং কীরূপে তাহা লাভ করা যায়— উৎসুক হইয়া সকলেই এই প্রশ্ন করিবেন।

সারাংশ ┃জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস

পূর্বেই বলা হইয়াছে মানসিক শিক্ষা কেবল বিষয়বিশেষের জ্ঞানলাভ নহে,সকল বিষয়েই জ্ঞানলাভের শক্তিবর্ধন হইবার মূল লক্ষণ। সেই শক্তিবর্ধনের উপায়, নানা বিষয়ের যথাসম্ভব শিক্ষা এবং সকল বিষয়ই যথাসম্ভব আয়ত্ত করিবার অভ্যাস। সকল বিষয় সকলের সম্যকরূপে আয়ত্ত হইতে পারে না, কিন্তু সকল বিষয়েরই সহজ কথা কিয়ৎ পরিমাণে আয়ত্ত করার শক্তি সকল প্রকৃতিস্থ ব্যক্তিরই থাকা উচিত এবং একটু যত্ন করিলেই সে শক্তি পাওয়া যায়। প্রকৃত মানসিক শিক্ষা না হইলে জ্ঞান লাভ হয় না।

.সারাংশ: সকল বিষয়ে জ্ঞান আহরণে মনকে উৎসুক ও উপযুক্ত করে তোলাই মানসিক শিক্ষার উদ্দেশ্য। বিষয় বিশেষে বিশেষজ্ঞ হওয়ার চেয়ে সকল বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা ও জ্ঞান লাভের উপর মানসিক শিক্ষা গুরুত্ব আরোপ করে থাকে। তাই জ্ঞান লাভের জন্য মানসিক শিক্ষা চর্চার বিকল্প নেই ।

২৪. নীরব ভাষায় বৃক্ষ আমাদের সার্থকতার গান গেয়ে শোনায়। অনুভূতির কান দিয়ে সে গান শুনতে হবে। তাহলে বুঝতে পারা যাবে জীবনের মানে বৃদ্ধি, ধর্মের মানেও তাই। প্রকৃতির যে ধর্ম মানুষেরও সে ধর্ম। পার্থক্য কেবল তরুলতা ও জীবজন্তুর বৃদ্ধির ওপর তাদের নিজেদের কোনো হাত নেই, মানুষের বৃদ্ধির ওপরে তার নিজের হাত রয়েছে। আর এখানেই মানুষের মর্যাদা। মানুষের বৃদ্ধি কেবল দৈহিক নয়, আত্মিকও। মানুষকে আত্মা-সৃষ্টি করে নিতে হয়, তা তৈরি পাওয়া যায় না। সুখ-দুঃখ বেদনা উপলব্ধির ফলে অন্তরের যে পরিপক্কতা, তাই তো আত্মা।

সারাংশ: প্রকৃতি ও মানুষের অভিন্ন ধর্মের নাম বৃদ্ধি। প্রকৃতির বৃদ্ধির ওপরে নিজস্ব কোনো হাত নেই কিন্তু মানুষের বৃদ্ধির ওপরে মানুষের নিজের হাত রয়েছে। প্রকৃত শিক্ষা ও ন্যায় বোধ অর্জনের মাধ্যমে মানুষকে আত্মিক বৃদ্ধি সাধন করতে হয়।

২৫. পৃথিবীতে যাহার দিকে তাকাও, দেখিবে সে নিজের অবস্থায় অসন্তুষ্ট। দরিদ্র কিসে ধনী হবে সে চিন্তায় উদ্বিগ্ন, ধনী চোর-ডাকাতের ভয়ে ত্রস্ত। রাজা শত্রুর ভয়ে ভীত। এক কথায় পৃথিবীতে এমন কেহ নেই, যে পূর্ণ সুখে সুখী। অথচ কৌতুকের বিষয় এই, পৃথিবী ছেড়ে যেতেও কেহ প্রস্তুত নয়। মৃত্যুর নাম শুনলেই দেখি। মানুষের মুখ শুকিয়ে যায়। মানুষ যতই দরিদ্র হোক, সপ্তাহের পর সপ্তাহ তাকে অনাহারে কাল কাটাতে হোক, পৃথিবীর কোনো আরাম যদি তার ভাগ্যে না থাকে তবু সে মৃত্যুকে চায় না। সে যদি কঠিন পীড়ায় পীড়িত হয়, শয্যা হতে উঠিবার শক্তিও না থাকে তবু সে মৃত্যুর প্রার্থী হবে না। কে না জানে যে, শত বছরের পরমায়ু থাকলেও তাকে এক দিন না এক দিন মরতে হবে।

সারাংশ: পৃথিবীতে কোনো মানুষই নিজ নিজ অবস্থায় সন্তুষ্ট নয়। সবাই কোনো না কোনো সমস্যায় জর্জরিত। কিন্তু এত সমস্যার পরও এই পৃথিবী ছেড়ে কেউ যেতে চায় না। অনিবার্য মৃত্যুকে সবাই ভুলে থাকতে চায় ।

এই সারাংশ ┃ জেসএসসি , এসএসসি , এইচএসসি , ডিগ্রি, অনার্স, মাস্টার্স, বিসিএস ছাড়াও আরো জানুন

Leave a Comment

You cannot copy content of this page