উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব অনুধাবনমূলক সাজেশন

উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব অনুধাবনমূলক সাজেশন এখানে উত্তরসহ দেওয়া হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা যাতে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে।

উদ্ভিদের খনিজ লবণ শােষণের বিক্রিয়া

প্রশ্ন ১। নিস্ক্রিয় পরিশােষণ বলতে কী বােঝায়? (ঢা, বাে, ‘২১)
উত্তর : বিপাকীয় শক্তি ব্যয় না করে, ব্যাপন পদ্ধতিতে কোষ কর্তৃক আয়ন (খনিজ) শােষণের পদ্ধতিকে নিষ্ক্রিয় পরিশােষণ বলা হয়। এতে শ্বসন হার স্বাভাবিক থাকে। নিষ্ক্রিয় শােষণে কোনাে বাহক আয়ন বা অণুর প্রয়ােজন হয় না। একই সাথে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের কোনাে শৌষণ ও ঘটে না। নিষ্ক্রিয় পরিশােষণে এনজাইমের কোনাে ভূমিকা নেই।

প্রশ্ন ২। সাইটোক্রোম পাম্প বলতে কী বুঝায়? [য, বাে, ‘২১; কু, বাে, ‘২১)
উত্তর : লুনডেগড় মতবাদ অনুযায়ী, অ্যানায়ন পরিশােষণ প্রকৃতপক্ষে সাইটোক্রোম সিস্টেমের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এ মতানুযায়ী, ভেতরের তল-এ ডিহাইড্রোজিনেজ বিক্রিয়ার ফলে প্রােটন (H’) এবং ইলেকট্রন (e) সৃষ্টি হয়। ইলেকট্রনটি সাইটোক্রোম চেইনের মাধ্যমে বাইরের দিকে চলে আসে এবং 0, এর সাথে মিলে প্রােটন সহযােগে পানি তৈরি করে। এর ফলে বাইরের তলে সাইটোক্রমের বিজারিত লৌহ ইলেকট্রন হারিয়ে জারিত হয় এবং একটি অ্যানায়ন গ্রহণ করে। এজন্য লুনডেগড়ের মতবাদকে সাইটোক্রোম পাম্প মতবাদ বলা হয়।

প্রশ্ন ৩। সক্রিয় পরিশােষণে বিপাকীয় শক্তির প্রয়ােজন কেন? ব্যাখ্যা কর। য, বাে, ‘১৯
উত্তর : বিপাকীয় শক্তির সহায়তায় ঘনত্ব ক্রমের বিরুদ্ধে আয়ন শােষণ প্রক্রিয়াকে সক্রিয় পরিশােষণ বলে । সক্রিয় পরিশােষণ প্রক্রিয়ায় ঘনত্ব নতিমাত্রার বিপরীতে আয়ন প্রবাহিত হয়। অর্থাৎ কম ঘনত্বের বহিঃস্থ দ্রবণ থেকে বেশি ঘনত্বের কোষ দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হয়। ঘনত্ব নতিমাত্রায় বিপরীত দিকে আয়ন শােষিত হওয়ার জন্য বিপাকীয় শক্তির প্রয়ােজন হয় ।

প্রশ্ন ৪। খনিজ লবণ পরিশােষণ সাধারণত সক্রিয় প্রক্রিয়ায় ঘটে কেন? [সি, বাে, ‘১৭)
উত্তর : মাটিস্থ দ্রবণে কোন আয়নের ঘনত্ব মূলের শােষণ অঞলের কোষরসে সেই আয়নের ঘনত্ব অপেক্ষা কম হলেও দেখা যায় মাটির দ্রবণ থেকে ঐ আয়ন কোষরসের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। ঘনত্বক্রমের বিরুদ্ধে এ পরিশােষণ বিপাকীয় শক্তির প্রত্যক্ষ প্রয়ােগে ঘটে থাকে। এ কারণেই এ জাতীয় শােষণকে সক্রিয় পরিশােষণ বলে। অধিকাংশ খনিজ লবণ সক্রিয় পরিশােষণ প্রক্রিয়ায় মূল কর্তৃক শােষিত হয়ে থাকে। কারণ খনিজ লবণের ঘনত্ব মূলের শােষণ অঞলের কোষরসে বিদ্যমান ঘনত্ব অপেক্ষা কম থাকে।

পাঠ পত্ররন্ধের গঠন

প্রশ্ন ৫। রক্ষীকোষ বলতে কী বােঝায়? রা, বাে, ‘২১
উত্তর : পত্ররন্ধুকে বেন্টন করে অর্ধচন্দ্রাকার বা বৃক্কাকার যে দুটি কোষ থাকে তাকে রক্ষীকোষ বলে। রক্ষীকোষের মধ্যে ঘন সাইটোপ্লাজম, একটি নিউক্লিয়াস ও বহু ক্লোরােপ্লাস্ট থাকে। রক্ষীকোষ দুটির স্ফীতি অথবা শিথিল অবস্থা পত্ররন্দ্রের খােলা বা বন্ধ হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রশ্ন ৬। পাতার যে রপথে পানি বাম্পাকারে বের হয় তার কাজ লেখ।
উত্তর : পাতার যে রন্দ্রপথে পানি বাম্পাকারে বের হয় তার নাম হলাে পত্ররন্দ্র। নিচে পত্ররন্ধের কাজ উল্লেখ করা হলাে-
১. উদ্ভিদের ভেতরে ও বাইরের পরিবেশের মধ্যে গ্যাসের আদান-প্রদান করাই এর কাজ।
২. সালােকসংশ্লেষণের সময় রপথে বায়ু হতে CO, গ্যাস গ্রহণ ও O, গ্যাস ত্যাগ করে।
৩. শ্বসনের সময় রন্দ্রপথে বায়ু হতে O, গ্যাস গ্রহণ করে ও CO, ত্যাগ করে।

উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব অনুধাবনমূলক সাজেশন

প্রশ্ন ৭। পত্ররন্ত্র ও পানি পত্ররন্ধের মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তর : পত্ররন্দ্র ও পানি পত্ররন্দ্রের পার্থক্য নিচে উল্লেখ করা হলাে—

পত্ররন্দ্র

পানি পত্ররন্দ্র

পাতার উর্ধ্ব নিম্নত্বকে ১, পাতার কিনারায় অবস্থান অবস্থান করে।
২. পানি বাম্পাকারে নির্গত হয় । ২. পানি তরলাকারে নির্গত হয় ।৩. পানি নির্গমন দিনের বেলায় ৩. পানি নির্গমন রাতের বেলায় বেশি হয়। ৪. রক্ষীকোষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ৪. রক্ষীকোষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়।

প্রশ্ন ৮। পত্ররন্ত্রের কাজ লিখ।
উত্তর : পত্ররন্ধের মাধ্যমে শ্বসন ও সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াকালীন সময়ে উদ্ভিদ অঙ্গ ও বায়ুমণ্ডলের মধ্যে গ্যাসীয় বিনিময় ঘটে । উদ্ভিদদেহ হতে অতিরিক্ত পানি প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বাম্পাকারে বের করা।পত্ররন্ত্রের অন্যতম প্রধান কাজ। পত্ররন্ধ্রের রক্ষী কোষগুলােতে। ক্লোরােপ্লাস্ট থাকায় এরা সালােকসংশ্লেষণে অংশগ্রহণ করে।

পত্ররন্দ্র উন্মুক্ত ও বন্ধের কৌশল

প্রশ্ন ৯। হাইডাথােড বলতে কী বােঝায়? [রা, বাে. ‘২১; সি, বাে, ‘২১; ম, বাে, ‘২১
উত্তর : কিছু উদ্ভিদের পাতার কিনারা ও শীর্ষে তরল আকারে পানি নির্মোচনের যে বিশেষ ধরনের র থাকে তাকে পানি পত্ররন্দ্র বা হাইডাথােড বলে। হাইডাথােড দিয়ে পানি বের হওয়াকে নির্গমন বা চোয়ানাে বা গাটেশন বলে। এ শীর্ষে রক্ষীকোষ দ্বারা পরিবেষ্টিত একটি রন্দ্র থাকে, রন্দ্রের নিচে একটি পত্ররন্দ্রীয় গহ্বর ও গহ্বরের নিচে এপিথেলিয়াম নামক অনেকগুলাে অসংলগ্ন কোষ থাকে। কচুরিপানা, ঘাস, টমেটো, কচু, প্রিমুলা ইত্যাদি উদ্ভিদে এটি দেখা যায়।

পত্ররন্দ্রীয় প্রস্বেদন প্রক্রিয়া

প্রশ্ন ১০। প্রস্বেদন বলতে কী বুঝায়? (দি, বাে, ‘২১)

উত্তর : যে শারীরতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদদেহের বায়বীয় অঙ্গ। (সাধারণত পাতা) হতে পানি বাম্পাকারে বের হয়ে যায় তাকে প্রস্বেদন বলে। প্রস্বেদন সকল স্থলজ উদ্ভিদের একটি স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া। প্রস্বেদন সাধারণত তিন প্রকার। যথা— পত্ররন্দ্রীয় প্রস্বেদন, ত্বকীয় প্রস্বেদন এবং লেন্টিকুলার প্রস্বেদন। উদ্ভিদের ৯০-৯৫ ভাগ প্রস্বেদনই হয় পাতায় অবস্থিত পত্ররন্ত্রের মাধ্যমে।

প্রশ্ন ১১। পত্ররন্দ্রীয় প্রস্বেদন কেন দিনের বেলাতেই সংঘটিত হয়?
উত্তর : দিনের বেলায় রক্ষীকোষের রসস্ফীতির ফলে পত্ররন্দ্র খুলে যায় এবং বাইরের বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা কম থাকলে আন্তঃকোষীয় অবকাশ ও পত্ররন্দ্রের নিচের গহ্বরে সঞ্জিত গ্যাস ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে। পত্ররন্ধ্র কেবল আলাের উপস্থিতিতেই খােলা থাকে। এজন্যই পত্ররন্দ্রীয় প্রস্বেদন কেবল দিনের বেলায়ই সংঘটিত হয় ।

সালােকসংশ্লেষণ

প্রশ্ন ১২। পানির আলােক বিভাজন বলতে কী বুঝ? [সি, বাে, ‘৫)
উত্তর : সালােকসংশ্লেষণের আলােকে নির্ভর পর্যায়ের অচক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় সূর্যালােক দ্বারা PS-II উত্তেজিতে হলে এর দুটি ইলেকট্রন উৎক্ষিপ্ত হয়ে ফিয়ােফাইটিনের মাধ্যমে PQ তে গমন করে। এ সময় Mn ও CT-এর উপস্থিতিতে পানির ভাঙন ঘটে এবং এর ফলে সৃষ্ট ইলেকট্রন এসে P-680 এর ইলেকট্রন ঘাটতি পূরণ করে। পানির এরূপ ভাঙনকে ফটোলাইসিস বা পানির আলােক বিভাজন বলে ।

উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব অনুধাবনমূলক সাজেশন

সালােকসংশ্লেষণ পদ্ধতি

প্রশ্ন ১৩। ফটোফসফোরাইলেশন বলতে কী বােঝায়? রা, বে. ‘২১]
উত্তর : আমরা জানি, কোনাে যৌগের সাথে অজৈব ফসফেট যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ফসফোরাইলেশন বলে। আলাের উপস্থিতিতে ফসফোরাইলেশন ঘটলে তাকে ফটোফসফোরাইলেশন বলে। অর্থাৎ সালােকসংশ্লেষণের সময় আলােক শক্তির সহায়তায় ADP ও অজৈব ফসফেট (ip)-এর সমন্বয়ে ATP সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে ফটোফসফোরাইলেশন বলে। বিজ্ঞানী আরনন (Arnon) ও তার সহকর্মীবৃন্দ ১৯৫৭ সালে ফটোফসফোরাইলেশন আবিষ্কার করেন। ফটোফসফোরাইলেশন দুই প্রকার যথা— অচক্রীয় এবং চক্ৰীয় ফটোফসফোরাইলেশন ।

প্রশ্ন ১৪। ATP-কে জৈবিক মুদ্রা বলা হয় কেন?কু. বাে, ‘২১;

উত্তর : ATP অণুতে প্রচুর শক্তি মজুদ থাকে, এটি রাসায়নিক শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। কোনাে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শক্তির প্রয়ােজন হলে ATP তা সরবরাহ করে। এজন্য ATP-কে কোষের জৈবিক মুদ্রা বা শক্তি মুদ্রা (Biological coin বা Energy coin) বলা হয়।

প্রশ্ন ১৫। হিল বিক্রিয়া বলতে কী বুঝ? কু, বাে, ‘১৯;
উত্তর : ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে রবিন হিল নামক চজন ইংরেজ প্রাণ রসায়নবিদ একটি পরীক্ষা করেন। তিনি CO, এর অনুপস্থিতিতে পৃথককৃত ক্লোরােপ্লাস্ট, পানি ও কিছু অজৈব জারক তথা হাইড্রোজেন গ্রাহক , একত্রে আলােতে রাখেন। ফলে CO, এর অনুপস্থিতিতে কোনাে শর্করা তৈরি হয় না, কিন্তু অক্সিজেন নির্গত হয়। রবিন হিলের নামানুসারে একে হিল বিক্রিয়া বলে। এ পরীক্ষা হতে প্রমাণিত হয় যে, সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নির্গত অক্সিজেনের উৎস পানি। হিল বিক্রিয়াটি নিম্নরূপ :

আলাে A (অজৈব জারক) + HO ক্লোরােফিল

প্রশ্ন ১৬। ফটোলাইসিস বলতে কী বুঝ? [সি, বাে, ‘১৯;
উত্তর : সালােকসংশ্লেষণের আলােক নির্ভর পর্যায়ের অচক্রীয় ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় সূর্যালােক দ্বারা PS – II উত্তেজিত হলে এর দুটি ইলেকট্রন উৎক্ষিপ্ত হয়ে ফিয়ােফাইটিনের মাধ্যমে PQ তে গমন করে। এ সময় Mn ও CI এর উপস্থিতিতে পানির ভাজন ঘটে এবং এর ফলে ইলেকট্রন (2e), প্রােটন (2H’) এবং অক্সিজেন (30) সৃষ্টি হয়। পানির এরূপ ভাঙ্গনকে ফটোলাইসিস বা পানির সালােক বিভাজন বা ফটোলাইসিস অব ওয়াটার বলে। পানির সালােক বিভাজনে সৃষ্ট ইলেকট্রন এসে P-680 এর ইলেকট্রন ঘাটতি ’ AH2 + 30,

আলােক দশা বা আলােক নির্ভর অধ্যায়

প্রশ্ন ১৭। চক্ৰীয় ফটোফসফোরাইলেশন বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : যে ফটোফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় ফটোসিস্টেম-১ হতে উৎক্ষিপ্ত ইলেক্ট্রন বিভিন্ন বাহকে ঘুরে একটি ATP তৈরি করে পুনরায় ফটোসিস্টেম-১ এ ফিরে আসে তাকে চক্ৰীয় ফটোফসফোরাইলেশন বলে। এ প্রক্রিয়ায় কেবল ফটোসিস্টেম-১ (PS -1) অংশগ্রহণ করে।

প্রশ্ন ১৮। সালােকসংশ্লেষণকে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া বলা হয় কেন?
উত্তর : সালােকসংশ্লেষণ পদ্ধতিটিকে জারণ-বিজারণ পদ্ধতি বলা হয়। কারণ এ পদ্ধতিতে পানি জারিত হয়ে অক্সিজেন নির্গত হয় এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড বিজারিত হয়ে শর্করা তৈরি করে।

উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব অনুধাবনমূলক সাজেশন

ক্যালভিন চক্র বা C, চক্র

প্রশ্ন ১৯। C3 উদ্ভিদ বলতে কী বােঝায়? [চ, বাে, ‘১৫)
উত্তর : যেসব উদ্ভিদের আলােক নিরপেক্ষ অধ্যায়ে শুধু C3 তথা ক্যালভিন চক্র চলে তাদেরকে C3 উদ্ভিদ বলা হয়। এদের পাতার বান্ডলশীথকে ঘিরে মেসােফিল কোষের পৃথক কোনাে স্তর থাকে না।C3 উদ্ভিদ উচ্চতাপমাত্রায় খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম। অধিকাংশ আবৃতবীজী উদ্ভিদে বিশেষ করে দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদে C3 চক্র চলে। বেশ কিছু একবীজপত্রী উদ্ভিদেও C3 চক্র দেখা যায়।

প্রশ্ন ২০। ক্যালভিন চক্রকে C, চক্র বলা হয় কেন?
উত্তর : ক্যালভিন ও তার সহযােগীরা কার্বন বিজারনের যে চক্রাকার গতিপথ আবিষ্কার করেন তা ক্যালভিন চক্র নামে পরিচিত। ক্যালভিন চক্রে উৎপন্ন প্রথম স্থায়ী পদার্থ ৩-কার্বন বিশিষ্ট বলে এ চক্রকে C3 চক্র বলা হয় ।

হ্যাচ এন্ড স্ন্যাক চক্র বা C. ক্র

প্রশ্ন ২১। ক্রাঞ্জ অ্যানাটমি বলতে কী বুঝ? [সি, বাে, ‘২১; ব. বাে, ‘২১]
উত্তর : C4 উদ্ভিদের পাতার বান্ডলসিথের চারদিকে ঘিরে ক্ষুদ্র ক্লোরােপ্লাস্টযুক্ত মেসসাফিল কোষের পৃথক এক বা একাধিক স্তর মালার মতাে অবস্থান করে। এ ধরনের অন্তর্গঠনকে ক্র্যাঞ্জ অ্যানাটমি (Kranz anatomy) বলে। “Kranz” জার্মান শব্দ, এর অর্থ হচ্ছে মালা। এরা উদ্ভিদকে অল্প পরিমাণ CO2 এর উপস্থিতিতে সালােকসংশ্লেষণে সহায়তা করে।

প্রশ্ন ২২। ইক্ষুকে C, উদ্ভিদ বলা হয় কেন? (ব, বাে, ‘১৯)
উত্তর : যেসব উদ্ভিদ হ্যাচ ও ব্ল্যাক গতিপথ বা C4 চক্রের মাধ্যমে CO2 বিজারণ সম্পন্ন করে তাদেরকে C4 উদ্ভিদ বলা হয় । ইক্ষুকে C4 উদ্ভিদ বলা হয়। কারণ ইক্ষু C4 চক্রের মাধ্যমে CO2 এর বিজারণ ঘটিয়ে প্রথম স্থায়ী পদার্থ হিসেবে অক্সালাে এসিটিক এসিড উৎপন্ন করে।

লিমিটিং ফ্যাক্টর বা সীমা নির্ধারণকারী প্রভাবক

প্রশ্ন ২৩। লিমিটিং ফ্যাক্টর বলতে কী বােঝায়? [ঢা, বাে, ‘২১; রা, বাে, ‘১৯; সি, বাে, ‘২১]
উত্তর : 1905 সালে Blackman, Law of minimum এর উপর ভিত্তি করে সীমাবদ্ধতার ফ্যাক্টর সূত্র প্রস্তাব করেন। তার মতে কোনাে বিক্রিয়া একাধিক প্রভাবক দ্বারা প্রভাবিত হলে সর্বাপেক্ষা কম মাত্রার প্রভাবক দ্বারা বিক্রিয়াটির হার নির্ধারিত হয় । Blackman কম মাত্রার প্রভাবকটিকে Limiting Factor বা সীমা নির্ধারণকারী প্রভাবক নামে অভিহিত করেছেন। যেমন, তাপমাত্রা সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণকারী একটি ফ্যাক্টর।

শ্বসন

প্রশ্ন ২৪। সবাত ও অবাত শ্বসন বলতে কী বুঝ? (ঢা, বাে, ‘১৭)
উত্তর : সবাত শ্বসন : যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় মুক্ত অক্সিজেনের প্রয়ােজন হয় এবং শ্বসনিক বস্তু সম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে CO2, H2O ও বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে তাকে সবাত শ্বসন বলে।
অবাত শ্বসন : যে শ্বসন প্রক্রিয়া অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় তাকে অবাত শ্বসন বলে। এ প্রক্রিয়ায় শ্বসনিক বস্তু আংশিক জারিত হয়ে অল্প পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করে।

উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব অনুধাবনমূলক সাজেশন

সবাত শ্বসন।

প্রশ্ন ২৫। অক্সিডেটিভ ফটোফসফোরাইলেশন বলতে কী বুঝ? কু, বাে, ‘১৯; ব. বাে, ‘১৯;
উত্তর : সবাত শ্বসনে ইলেকট্রন ট্রান্সপাের্ট সিস্টেমের (ETS) মাধ্যমে এক জোড়া ইলেকট্রন উচ্চ শক্তিমাত্রা হতে নিম্ন শক্তিমাত্রায় ক্রমান্বয়ে স্থানান্তরিত হয়। ইলেকট্রনের এ স্থানান্তরের সময় যে শক্তি নির্গত হয় তা দিয়ে ADP এর সাথে ইনঅর্গানিক ফসফেট (Pi) সংযুক্ত হয়ে ATP তৈরি করে। ETS-এ ATP তৈরির এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন।

গ্লাইকোলাইসিস

প্রশ্ন ২৬। গ্লাইকোলাইসিসকে EMP পথ বলা হয় কেন?
উত্তর : যে পর্যায়ক্রমিক রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এক অণু গ্লুকোজ বিভিন্ন প্রকার এনজাইমের কার্যকারিতায় ভেঙে দুই অণু পাইভিক এসিডে পরিণত হয় তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে। জার্মান বিজ্ঞানী Gustave George Embden, OHO Meyerhof 478 Jakob Karol Parnas কর্তৃক গ্লাইকোলাইসিসের বিক্রিয়াগুলাে আবিষ্কৃত হয়েছিল। এজন্য তাদের নামানুসারে গ্লাইকোলাইসিসকে সংক্ষেপে EMP পথ বলা হয়।

ক্রেবস চক

প্রশ্ন ২৭। TCA-চক্র বলতে কী বােঝায়? [রা. বাে, ‘২১; ম. বাে, ‘২১; ব, বাে, ‘১৯;]
উত্তর : ক্রেবস চক্রকে TCA চক্র বলা হয়। কারণ-এই চক্রের প্রথম উৎপাদিত যৌগটি সাইট্রিক এসিড হওয়ায় একে সাইট্রিক এসিড চক্রও বলা হয় । সাইট্রিক এসিডে তিনটি কার্বক্সিল (- COOH) গ্রুপ থাকায় একে বর্তমানে ট্রাই কার্বোক্সিলিক এসিড চক্র বা TCA চক্র বলা হয় ।

প্রশ্ন ২৮। ক্রেবস চক্রকে TCA চক্র বলা হয় কেন?
উত্তর : ক্রেবস চক্রের প্রথম উৎপাদিত যৌগটি সাইট্রিক এসিড হওয়ায় একে সাইট্রিক এসিডচক্র বলা হয়। সাইট্রিক এসিডে তিনটি কার্বক্সিল (-COOH) গ্রুপ থাকায় একে ট্রাইকার্বক্সিলিক এসিড চক্র বা TCA চক্র বলা হয়।

উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব অনুধাবনমূলক সাজেশন

অবাত শ্বসন

প্রশ্ন ২৯। শ্বসনিক হার বলতে কী বুঝ?(চ, বাে, ‘২১; ম. বাে. ‘২১)
উত্তর : শ্বসন প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ যে পরিমাণ CO2 ত্যাগ করে এবং যে পরিমাণ O2 গ্রহণ করে তার অনুপাতকে শ্বসন হার বলে। বিভিন্ন শ্বসনিক বস্তুর শ্বসন হার বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় শ্বসনিক বস্তু যদি গ্লুকোজ হয় তবে এটি সবাত শ্বসনের মাধ্যমে ছয় অণু CO2 ত্যাগ করে এবং ছয় অণু গ্রহণ করে কাজেই এর

6CO,

শনিক বা শ্বসন হার (R.Q) =

602

C6H12O% + 60, → 6CO2 + 6H0

CO, 6.

. শ্বসনিক হার (R.Q)

O, = 6

= 1

প্রশ্ন ৩০। আদিকোষী জীবে গ্লুকোজ হতে কত কিলােক্যালরী শক্তি উৎপন্ন হয়?
উত্তর : আদিকোষী জীবে অবাত শ্বসন সংঘটিত হয়। অবাত শ্বসনের গ্লাইকোলাইসিস ধাপে এক অণু গ্লুকোজ হতে ২ অণু ATP ও ২ অণু NADPH + H+ উৎপন্ন হয়। পরবর্তীতে ২ অণু NADPH + H+ খরচ হয়ে যায়। ফলে ২টি ATP ই অবাত শ্বসনের শক্তির একমাত্র উৎস। ২টি ATP হতে শেষ পর্যন্ত ১০ X ২ = ২০ কিলােক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়।

গাজন বা ফার্মেন্টেশন

প্রশ্ন ৩১। গাজন বলতে কী বােঝায়? [টা, বাে, ‘২১]
উত্তর : কোষের বাইরে অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে গ্লুকোজ অণু অসম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে অ্যালকোহল বা ল্যাকটিক এসিড সৃষ্টি ও অল্প পরিমাণ শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ফার্মেন্টেশন বা গাজন বলে। ফার্মেন্টেশনের ফলে ইথানল অথবা ল্যাকটিক এসিড উৎপন্ন হয়। ফার্মেন্টশনে কোষের মধ্যে সৃষ্ট বিভিন্ন এনজাইম কোষের বাইরে নিঃসৃত হয়ে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।

প্রশ্ন ৩২। ফার্মেন্টেশন বলতে কী বুঝ?
উত্তর : কোষের বাইরে অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে গুকোজ অণু অসম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে অ্যালকোহল বা ল্যাকটিক এসিড সৃষ্টি অল্প পরিমাণ শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ফার্মেন্টেশন বা গাঁজন বলে।ফার্মেন্টেশনের ফলে ইথানল অথবা ল্যাকটিক এসিড উৎপন্ন হয়। ফার্মেন্টশনে কোষের মধ্যে সৃষ্ট বিভিন্ন এনজাইম কোষের বাইরে নিঃসৃত হয়ে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। [সি, বাে, ‘২১]

এই উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব অনুধাবনমূলক সাজেশন ছাড়াও আরো জানতে ক্লিকঃ

Leave a Comment

You cannot copy content of this page