নগ্নবীজী ও আবৃতবীজী উদ্ভিদ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশান্স

নগ্নবীজী ও আবৃতবীজী উদ্ভিদ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশান্স টি এইচএসসি শিক্ষার্থীদের অনুশীলন এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য দেওয়া হয়েছে।

নগ্নবীজী উদ্ভিদ বা জিমনােম্পার্ম

প্রশ্ন ১। নগ্নবীজী উদ্ভিদে ফল সৃষ্টি না হওয়ার কারণ কী? (ব, বাে, ‘২১; দি. বাে, ‘১৫)
উত্তর : নগ্নবীজী উদ্ভিদে গর্ভাশয় থাকে না, ডিম্বকগুলাে মেগাস্পােরােফিলের উপর নগ্ন অবস্থায় থাকে এবং নিষেকের পর তা ফলহীন নগ্নবীজে পরিণত হয় । তাই নগ্নবীজী উদ্ভিদে ফল সৃষ্টি হয় না।

Cycas

প্রশ্ন ২। জীবন্ত জীবাশ্ম বলতে কী বােঝায়? [ঢ়া, বাে, ‘২১; য. বাে, ‘১৭; চ, বাে, ‘১৯; সি, বো, ‘২১; ব. বাে. ‘২১, ‘১৭; ম. বাে, ‘২১]
উত্তর : বর্তমানকালের কোনাে জীবিত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য অতীতকালের কোনাে জীবাশ্ম উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলসম্পন্ন হলে তাকে জীবন্ত জীবাশ্ম বলা হয়। যেমন- Cycas একটি জীবন্ত জীবাশ্ম।

প্রশ্ন ৩। দুটি জীবন্ত জীবাশ্ম এর বৈজ্ঞানিক নাম লিখ। [য, বাে, ‘২১]
উত্তর : দুটি জীবন্ত জীবাশ্ম এর বৈজ্ঞানিক নাম হলাে-
১. Ginkgo biloba ও
২. Cycas circinalis.

প্রশ্ন ৪। Cycas কে হেটারােস্পােরিক উদ্ভিদ বলা হয় কেন?(ব, বাে, ‘২১)
উত্তর : Cycas উদ্ভিদ স্পােরােফাইটিক, বহুবর্ষজীবী
নগ্নবীজী উদ্ভিদ। এটি বৃক্ষ জাতীয় কাষ্ঠল উদ্ভিদ। Cycas একলিঙ্গ বা ভিন্নবাসী উদ্ভিদ। উদ্ভিদ অসমরেণুপ্রসূ অর্থাৎ হেটারােস্পােরিক। কারণ যৌন জননের সময় এরা অসম আকৃতির দুই ধরনের স্পাের তৈরি করে। পুং উদ্ভিদে ক্ষুদ্র সচল পুংরেণু বা মাইক্রোম্পাের এবং স্ত্রী উদ্ভিদ থেকে বৃহদাকার নিশ্চল স্ত্রীরেণু বা মেগাপাের উৎপন্ন হয়। দুটি ভিন্ন ধরনের স্পাের উৎপন্ন হওয়ার কারণে Cycas কে হেটারােস্পােরিক উদ্ভিদ বলা

প্রশ্ন ৫। Cycas ভিন্নবাসী কেন? (ব, বাে, ‘২১)
উত্তর : আমরা জানি, যখন দু’ধরনের জননকোষ আলাদা দেহে সৃষ্টি হয় তখন সেই উদ্ভিদকে ভিন্নবাসী উদ্ভিদ বলে। Cycas একটি ভিন্নবাসী এবং একলিজা নগ্নবীজী উদ্ভিদ। কারণ এদের দেহে দুই ধরনের পাের উৎপন্ন হয়। পুং উদ্ভিদ থেকে ক্ষুদ্রাকার, সচল পুংরেণু বা মাইক্রোম্পাের এবং স্ত্রী উদ্ভিদ থেকে বড়, নিশ্চল স্ত্রীরেণু বা মেগাম্পাের উৎপন্ন হয় ।

Cycas

প্রশ্ন ৬। Cycas-কে পামফার্ন বলা হয় কেন? (রা, বাে, ‘১৯)
উত্তর : Cycas স্পােরােফাইটিক, বৃক্ষ জাতীয় কাষ্ঠল উদ্ভিদ। উদ্ভিদ বহুবর্ষজীবী এবং দেহ মূল, কাণ্ড ও পাতায় বিভক্ত। এটি দেখতে অনেকটা পাম জাতীয় উদ্ভিদ বা বৃক্ষ ফার্নের মতাে বলে একে পামফার্ন বলা হয় ।

প্রশ্ন ৭। Cycas কে জীবন্ত জীবাশ্ম বলা হয় কেন? (চ, বাে, ‘২১; ঢা, বাে, ‘১৭; দি, বাে, ‘১৭; ঢা, বাে, ‘১৫ )
উত্তর : অতীতে বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ যার নিদর্শন একমাত্র জীবাশ্মে পাওয়া যায় এর সাথে জীবন্ত কোনাে প্রজাতির সাদৃশ্য থাকলে উক্ত প্রজাতিকে জীবন্ত জীবাশ্ম বলে । Cycadales বর্গের অন্তর্গত বেশ কিছু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে যা পৃথিবীতে মেসােজোয়িক যুগে বর্তমান ছিল। কিন্তু বর্তমানকালে জীবিত নগ্নবীজী উদ্ভিদ Cycas এর অতীতে বিলুপ্ত সাইকাডােফিলিকেলিস ও বেনিটাইটেলিস বর্গের অন্তর্গত উদ্ভিদ প্রজাতির সাথে অনেক মিল থাকায় সাইকাসকে (Cycas) জীবন্ত জীবাশ্ম বলা হয়।

বায়োলজিঃ নগ্নবীজী আবৃতবীজী উদ্ভিদ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশান্স

প্রশ্ন ৮। সাইকাসের মূলকে কোরালয়েড মূল বলা হয় কেন? [য, বাে, ‘২১; চ. বে. ‘১৫; ব, বাে, ‘১৫)
উত্তর : Cycas এর প্রধান মূল ক্ষণস্থায়ী। প্রধানমূল বিনষ্ট হওয়ার পর সেখান থেকে অস্থানিক মূল উৎপন্ন হয়। এসব অস্থানিক মূল খাড়াভাবে বর্ধিত ছােট ছােট মূল উপরের দিকে উঠে আসে এবং ক্রমাগত দ্ব্যর্গ শাখান্বিত হতে থাকে। মাটির উপরিতলে মূলগুলাে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং এদের শীর্ষে স্ফীত হয়। এসময় Nostoc, Anabaena নামক নীলাভ সবুজ শৈবাল মূলে প্রবেশ করে। যার ফলে মূলের আকৃতি পরিবর্তিত হয়ে প্রবাল বা কোরালের রূপ ধারণ করে। আকৃতিগত কারণে Cycas এর এ মূলকে কোরালয়েড মূল বলে।

প্রশ্ন ৯। Cycas এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব লিখ।
উত্তর : Cycas-এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব নিম্নরূপ-
Cycas কে শােভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ হিসেবে প্রায় সব বাগানেই লাগানাে হয়। এর পাতা ঘর সাজানাের কাজে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘর সাজানাের কাজে ব্যবহার করা হয়। Cycas এর পাতা দিয়ে সুন্দর মাদুর তৈরি করা হয় । ফুলের ডালি ও তােরন সাজাতেও Cycas-এর কচি পাতা ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

প্রশ্ন ১০। Cycas একটি নগ্নবীজী উদ্ভিদ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : Cycas একটি নগ্নবীজী উদ্ভিদ। কারণ এ উদ্ভিদের বীজ নগ্ন অবস্থায় থাকে। এদের ফুল হয়, বীজও হয় কিন্তু ফল হয় না। ফল, হয় না বলে এদের বীজ নগ্ন অবস্থায় থাকে। এদের দেহ মূল, কাণ্ড ও পাতায় বিভক্ত। দেহের ভিতর পরিবহন টিস্যু আছে তাই Cycas নগ্নবীজী উদ্ভিদ।

জীববিজ্ঞানঃ নগ্নবীজী ও আবৃতবীজী উদ্ভিদ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশান্স

আবৃতবীজী উদ্ভিদ বা অ্যানজিওম্পার্ম

প্রশ্ন ১১। সহবাসী উদ্ভিদ বলতে কী বোেঝায়? (ম, বাে, ‘২১)
উত্তর : উন্নত উদ্ভিদে যখন দুই ধরনের জনন কোষ যেমন- শুক্রাণু বা পুংজনন কোষ এবং ডিম্বাণু বা স্ত্রীজনন কোষ একই ফুলে বা একই দেহে সৃষ্টি হয় তখন তাকে সহবাসী উদ্ভিদ বলে। যেমন— জবা, ধুতুরা ।

প্রশ্ন ১২। দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ সর্বাপেক্ষা উন্নত কেন?
উত্তর : দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
১. দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের দুটি বীজপত্র থাকে।
২. দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ বীরুৎ গুল্ম বা বৃক্ষ জাতীয় সব রকমেরই হয়ে থাকে।
৩. ফল গঠিত হয়, বীজ ত্বক ও ফলত্বক আলাদা।
উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলাের জন্য দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ সর্বাপেক্ষা উন্নত।

বিভিন্ন ধরনের পুম্প

প্রশ্ন ১৩। গর্ভপাদ পুষ্প বলতে কী বােঝ?
উত্তর : গর্ভপাদ পুষ্প হলাে এক ধরনের সন্নিবেশ যেখানে পুম্পাক্ষ উত্তলাকার, মােচাকৃতির বা চ্যাপ্টা হয়। গর্ভাশয়টি সবচেয়ে উপরে থাকে এবং এর নিচে পুংস্তবক, দলমণ্ডল ও বৃত্তি পর্যায়ক্রমে সন্নিবিষ্ট থাকে। এ ধরনের ফুলের গর্ভাশয়কে অধিগর্ভ গর্ভাশয় বলে। যেমন- জবা, ধুতুরা, ধান, সরিষা ইত্যাদি।

পুষ্পবিন্যাস বা পুষ্পমঞ্জরী

প্রশ্ন ১৪। মঞ্জরীপত্র বলতে কী বুঝ?
উত্তর : যেকোনাে একটি উদ্ভিদ লক্ষ করলে দেখা যাবে এক বা একাধিক পুষ্প’ একটি বিশেষ শাখা বা অক্ষের উপর সাজানাে আছে। এ অক্ষটিকে মঞ্জরীদণ্ড বলে। বিশেষ ধরনের পরিবর্তিত পাতার কক্ষে মঞ্জরীদণ্ড উৎপন্ন হয়। এ বিশেষ ধরনের পরিবর্তিত পাতাকেই মঞ্জরীপত্র বলে।

অমরাবিন্যাস

প্রশ্ন ১৫। অমরাবিন্যাস বলতে কী বুঝায়? (চ, বাে, ‘২১; সি, বাে. ‘২১)
উত্তর : গর্ভাশয়ের ভেতরে যে টিস্যু থেকে ডিম্বক সৃষ্টি হয় সে টিস্যুকে অমরা বলে। গর্ভাশয়ের ভেতরে অমরা বিন্যাস পদ্ধতিকে বলা হয় অমরাবিন্যাস। অমরাবিন্যাস, বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যেমন। একপ্রান্তীয়, অক্ষীয়, বহুপ্রান্তীয়, গাত্রীয়, শীর্ষক, মূলীয় এবং মুক্তমধ্য।

ফল

প্রশ্ন ১৬। সাইজোকাৰ্প বলতে কী বােঝ?
উত্তর : সাইজোকার্প ফল বিদারী ও অবিদারী ফলের মধ্যবর্তী। এ ধরনের ফল একাধিক অবিদারী খণ্ডে বিদীর্ণ হয় এবং প্রতিটি অবিদারী খণ্ড সাধারণত একটি বীজযুক্ত হয়। সাইজোকাকে ভেদক ফল বলে।

জীববিজ্ঞান ১মপত্রঃ নগ্নবীজী ও আবৃতবীজী উদ্ভিদ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশান্স

এস্টিভেশন বা পুস্পমুকুল পত্রবিন্যাস

প্রশ্ন ১৭। পুষ্পপত্রবিন্যাস বলতে কী বুঝ?
উত্তর : মুকুলাবস্থায় বৃত্যাংশগুলাে (অথবা পাপড়িগুলাে) পরস্পরের সাথে কিভাবে বিন্যস্ত থাকে তাকে বলা হয় এস্টিভেশন বা পুষ্পপত্রবিন্যাস। পুষ্পপত্রবিন্যাস কয়েক প্রকার হতে পারে। যেমন-ওপেন, ভালভেট, টুইস্টেড, ইথ্রিকেট, কুইনকানসিয়াল, ভেকসিলারি।

পুষ্প সংকেত বা ফ্লোরাল ফর্মুলা

প্রশ্ন ১৮। পুষ্প প্রতীক বলতে কী বুঝ? [রা, বাে, ‘২১; দি, বাে, ‘২১; য, বাে, ‘১৭; ব, বাে, ‘১৭; ঢা, বাে, ‘১৬]
উত্তর : যে প্রতীকের সাহায্যে একটি পুষ্পের মাতৃঅক্ষের তুলনায় এর বিভিন্ন স্তবকের পুষ্পপত্রগুলাের অবস্থান, সংখ্যা, সমসংযােগ, অসমসংযােগ, পুষ্পপত্র বিন্যাস, অমরাবিন্যাস প্রভৃতি বৈশিষ্ট্য দেখানাে হয় তাকে পুষ্প প্রতীক বলে। পুষ্প প্রতীক মােটামুটিভাবে বৃত্তাকার দেখানাে হয়।

প্রশ্ন ১৯। পুষ্প সংকেত বলতে কী বুঝায়? [য, বাে, ‘১৭; কু, বাে, ‘২১; ব. বাে, ‘১৭]
উত্তর : যে সংকেতের মাধ্যমে ফুলের বিভিন্ন স্তবকের বর্ণনা যেমন-স্তবকের সংখ্যা, স্তবকের সদস্য সংখ্যা, স্তৰকের বিভিন্ন সদস্যের বিন্যাস প্রভৃতি জটিল আঙ্গিক বৈশিষ্ট্যগুলােকে সরল রূপরেখায় প্রদর্শন করা হয় তাই পুষ্প সংকেত। পুষ্প সংকেত লিখতে হলে কতকগুলাে নির্দিষ্ট বর্ণমালা সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করতে হয় ।

প্রশ্ন ২০। পুষ্প সংকেতটি ব্যাখ্যা কর। (য. বাে, ‘১৫)

উত্তর : পুষ্প সংকেতটির ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলাে :
পুষ্পটি বহুপ্রতিসম, উভলিঙ্গ, পুষ্পপুট ২টি—৩টি, পুংস্তবকে পুংকেশর ৩টি, স্ত্রীস্তবকে গর্ভাশয় একপ্রকোষ্ঠী, গর্ভপত্র ১টি, গর্ভদণ্ড ১টি এবং অধিগর্ভ।

গােত্র-Poaceae (Gramineae)

প্রশ্ন ২১। ধান পুস্পের পুম্প সংকেত ব্যাখ্যা কর। (চ. বাে, ‘২১)
উত্তর : ধান পুস্পের পুষ্পসংকেত হলাে-

প্রশ্ন ২৪। স্পাইকলেট বলতে কী বুঝ? [দি, বাে, ‘১৭]
উত্তর : এক প্রকার বিশেষ সজ্জারীতি সম্পন্ন পুস্পমঞ্জরি হলাে স্পাইকলেট। এক্ষেত্রে পুস্পের সংখ্যা এক বা একাধিক থাকে। মঞ্জরীদণ্ডের নিচের দিকে কয়েকটা বিশেষ ধরনের মঞ্জরিপত্র থাকে। এদের ঘুম বলে। ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদিতে স্পাইকলেট হয়ে থাকে।

প্রশ্ন ২২। পুষ্পপুট বলতে কী বুঝ? [কু, বাে, ‘১৭]
উত্তর : বৃতি এবং দলকে যখন আকৃতি ও বর্ণে পৃথক করা যায় না অর্থাৎ দেখতে এরা একই রকম দেখায় তখন এদেরকে একত্রে পুষ্পপুট বলে।

প্রশ্ন ২৩। Poaceae গােত্রের চারটি বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তর : Poaceae গােত্রের চারটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
১. কাণ্ড সাধারণত নলাকার, মধ্যপর্ব ফাপা।
২. পুষ্পবিন্যাস (মঞ্জরী) স্পাইকলেট।
৩, পরাগধানী সর্বমুখ।
৪. গর্ভমুণ্ড পালকের ন্যায়।

এই নগ্নবীজী ও আবৃতবীজী উদ্ভিদ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশান্স ছাড়াও ক্লিকঃ

Leave a Comment

You cannot copy content of this page