পল্লিসাহিত্য গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

পল্লিসাহিত্য গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর এর বিস্তারিত নিচে দেওয়া হল যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হবে। তাই এই আর্টিকেলটি অনুসরণ করো এবং অনুশীলন অব্যাহত রাখো। তোমাদের জন্য শুভকামনা।

পল্লিসাহিত্য গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন ১। “নচেৎ এ সকল কেবলি ভুয়া, কেবলি ফক্কিকার।”বলতে লেখক বুঝিয়েছেন? অথবা, ‘নচেৎ এ সকল কেবলি ভুয়া, কেবলি ফক্কিকার’- লেখক একথা কেন বলেছেন? 

প্রশ্ন ২। ‘পল্লিসাহিত্যে হিন্দু-মুসলমান সকল সন্তানেরই সমান অধিকার’— বলতে কী বোঝানো হয়েছে? 

প্রশ্ন ৩। ছড়া সাহিত্যকে সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর। 

প্রশ্ন ৪। ‘পল্লির প্রত্যেক পরতে পরতে সাহিত্য ছড়িয়ে আছে ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর : পল্লির প্রত্যেক পরতে পরতে সাহিত্য ছড়িয়ে আছে বলতে পল্লির মানুষের জীবন ও প্রকৃতিতে সাহিত্যের নানা উপাদান ছড়িয়ে থাকার বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। 

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে বাংলা সাহিত্যের ছড়া, লোকগান, রূপকথা, উপকথা, ধাঁধা প্রভৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। মা তার সন্তানকে ঘুম পাড়ানোর সময় ঘুমপাড়ানি গান গায়, বৃদ্ধরা বাচ্চাদের নানা রকম রূপকথার গল্প শোনায়। এ ছাড়া শ্রমিকেরা কাজ করার সময় কিংবা মাঝিরা নৌকা বাওয়ার সময় একসঙ্গে গাইতে থাকেন গান। এ সবই বাংলার অমূল্য সম্পদ পল্লিসাহিত্য। এসব কারণে লেখক বাংলার পরতে পরতে পল্লিসাহিত্য ছড়িয়ে থাকার কথা বলেছেন। 

প্রশ্ন ৫। “এবার ফিরাও মোরে’ কবিসম্রাটের এ বক্তব্যের মর্মার্থ [ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা] উত্তর : ‘এবার ফিরাও মোরে’— কবিসম্রাটের এ বক্তব্যের মূল কথা হচ্ছে নাগরিক সাহিত্যের পথ থেকে ফিরে এসে পল্লিসাহিত্যের প্রতি অনুরাগী হওয়া। 

‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে পল্লির প্রাচীন সম্পদ সংগ্রহ করার মতামত ব্যক্ত হয়েছে। পল্লির নানা উপাদান সমৃদ্ধ পল্লিসাহিত্য নিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার উদ্যোগী হয়েছিলেন। পল্লির গৃহস্থ, কৃষক, জেলে, মাঝি, মুটে, মজুরের কথা লিখবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত তা করতে পারেননি। তিনি পল্লির সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে মিশে থাকা সাহিত্যকে সবার সামনে তুলে ধরতে পারেননি। রাজরাজড়ার কথা, বাবু-বিবির কথা, মোটরগাড়ির কথা, বিজলি বাতির কথাএসব নিয়ে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, নাটক লেখা হলেও তাতে পল্লির হতদরিদ্র মানুষের জীবন স্পষ্ট হয়ে উঠছে না। কারণ যারা তা লেখেন তারা কেউ পল্লিতে থাকেন না, কিংবা থাকলেও তারা পল্লিবাসীর জীবনযাপন উপলব্ধি করতে পারেন না। 

প্রশ্ন ৬। প্রবাদ-প্রবচন বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর। (ঝালকাঠি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়; এস.এম. মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ উত্তর : প্রবাদ-প্রবচন বলতে জীবন ও জগৎ সম্বন্ধে প্রয়োজনীয় কোনো অভিজ্ঞতা হৃদয়গ্রাহী ভাষারূপ লাভ করাকে বোঝায়। ‘প্রবচন’ মানে প্রকৃষ্ট যে বচন। সংক্ষেপে ও সুন্দরভাবে অনেক ক্ষেত্রে ছন্দমিল কিংবা উপমা প্রভৃতি ব্যবহার করে প্রবাদে সমাজের কোনো মূল্যবান অভিজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। আমাদের দৈনন্দিন কথাবার্তায় প্রবাদ-প্রবচনগুলো অলংকারের কাজ করে। এতে বাক্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। যেমন- ‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা নেই’; ‘আপনি বাঁচলে বাপের নাম’ ইত্যাদি। প্রবাদ-প্রবচনের মাধ্যমে অতীতের নানা বিষয় পরিপ্রেক্ষিতে এগুলোর প্রয়োগ থেকে বাস্তব জীবনের শিক্ষা লাভ হয় । 

প্রশ্ন ৭। প্রবাদবাক্য আমাদের জীবনে কীভাবে জড়িয়ে আছে?

উত্তর : প্রবাদবাক্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। পল্লিসাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান প্রবাদবাক্য। যুগ যুগ ধরে মানুষ প্রাত্যহিক জীবনের কথাবার্তায় প্রবাদবাক্য ব্যবহার করে আসছে। প্রবাদবাক্য আমাদের বাপটুতা ও চিৎকর্ষের দীপ্তিকে প্রকাশ করে। শুধু কথার মধ্যেই প্রবাদের ব্যবহার সীমাবদ্ধ নয়। সাহিত্যের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কথাসাহিত্যের শৈল্পিক উপস্থাপনায় প্রবাদ-প্রবচন একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ। 

প্রশ্ন ৮। Proletariat সাহিত্য বলতে কী বোঝ? 

উত্তর : Proletariat সাহিত্য হচ্ছে অত্যাচারিত শ্রমজীবী দুঃখী মানুষের সাহিত্য। 

মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তাঁর ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে অভিনব ডাব বিন্যাসের মধ্য দিয়ে পল্লিসাহিত্যের বিশিষ্ট দিকগুলো উপস্থাপন করেছেন। এখানে তিনি Proletariat সাহিত্যের কথা বলেছেন। যে সাহিত্যের আত্মা ইট-পাথরের ও লোহার কৃত্রিম বাঁধন থেকে মুক্ত। যে সাহিত্য মাটির ঘরে, মাটির মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে রচিত, তাকেই তিনি Proletariat সাহিত্য বলেছেন। এ ধরনের সাহিত্যে শ্রমজীবী শ্রেণির দুঃখ-বেদনার কথা প্রতিফলিত হয়। 

প্রশ্ন ৯। ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখকের অন্তর্বেদনার কারণ ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর : পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখকের অন্তর্বেদনার কারণ পল্লিসাহিত্যের বিলুপ্তি। 

লেখকের মতে, এদেশে একদিন পল্লিসাহিত্যের সম্ভার ছিল। উপযুক্ত গবেষক ও আগ্রহী সাহিত্যিকদের উদ্যোগের অভাবে সেগুলো সংগৃহীত না হওয়ায় আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি পল্লির মূল্যবান প্রাচীন সম্পদ থেকে। এটিই লেখকের অন্তর্বেদনার মূল কারণ। 

প্রশ্ন ১০। পল্লিসাহিত্যে উল্লিখিত “পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর’ প্রবাদটি প্রাচীন ইতিহাসের কোন গোপন কথা স্মরণ করিয়ে দেয়? উত্তর : ‘পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর প্রবাদটি অতীত ইতিহাসের একটি বিশেষ সময়কে স্মরণ করিয়ে দেয়। 

প্রবাদ হলো দীর্ঘদিন ধরে লোকমুখে প্রচলিত বিশ্বাসযোগ্য কথা বা জনশ্রুতি। জীবন ও জগৎ সম্বন্ধে কোনো প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা যখন হৃদয়গ্রাহী ভাষারূপ লাভ করে লোকসাধারণের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী জনপ্রিয়তা পায়, সেই ভাষারূপকে বলে প্রবাদ-প্রবচন। ‘পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর’ একটি প্রাচীন প্রবাদ। এ প্রবাদটি প্রাচীন ইতিহাসের সেই সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, এই প্রবাদ যখন প্রচলিত হয় তখন পাণ্ডুয়া ছিল বঙ্গের রাজধানী। 

আরো পড়ুনঃ

Leave a Comment

You cannot copy content of this page