সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সাজেশন

সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সাজেশন এর বিস্তারিত নিচে দেওয়া হল যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হবে। তাই এই আর্টিকেলটি অনুসরণ করো এবং অনুশীলন অব্যাহত রাখো। তোমাদের জন্য শুভকামনা।

সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সাজেশন

গুরুত্বপূর্ণ সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর  

দুইপুত্রসন্তানের পর কন্যাসন্তান পলাশ বাবুর পরিবারে আনন্দের বন্যা নিয়ে এল। নাম রাখা হলো ‘কল্যাণী’। সকলের চোখের মণি কল্যাণী বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পলাশ বাবু বুঝতে পারলেন, বয়সের তুলনায় কল্যাণীর মানসিক বিকাশ ঘটেনি। কিছু বললে ফ্যাল্‌ফ্যাল্ করে চেয়ে থাকে । কল্যাণীর বিয়ের কথাবার্তা চলছে। পলাশ বাবু কল্যাণীর সবই বরপক্ষকে খুলে বললেন। সব শুনে বরের বাবা সুবোধ বাবু বললেন, ‘পলাশ বাবু কল্যাণীর মতো আমার ছেলেও তো হতে পারত, কাজেই কল্যাণীমাকে ঘরে নিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’ 

ক. সুভার গ্রামের নাম কী? 
খ. পিতা-মাতার নীরব হৃদয়ভার’— কথাটি দ্বারা লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন? 
গ. উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্যে কল্যাণী ও সুভার যে বিশেষ দিকটির সঙ্গতি দেখানো হয়েছে— তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘কল্যাণী ও সুভা একই পরিস্থিতির শিকার হলেও উভয়ের প্রেক্ষাপট ও পরিণতি ভিন্ন ।’- বিশ্লেষণ কর।

উত্তর

ক) সুভার গ্রামের নাম চণ্ডীপুর । 

খ) “পিতা-মাতার নীরব হৃদয়ভার’— কথাটির মধ্য দিয়ে লেখক বাপ্রতিবন্ধী সুভার বিয়ের বয়স হওয়া সত্ত্বেও বিয়ে দিতে না পারায় পিতা-মাতার হৃদয়ের নীরব কষ্টকে বোঝাতে চেয়েছেন। 

সুভা বাণীকণ্ঠের ছোট মেয়ে। সে কথা বলতে পারে না। বাণীকণ্ঠ তার বড় দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বাক্‌প্রতিবন্ধী হওয়ায় ছোট মেয়ে সুভাকে বিয়ে দিতে পারেননি। তাই সুভার ভবিষ্যৎ নিয়ে বাণীকণ্ঠ এবং তার স্ত্রী উভয়েই চিন্তিত। সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তাদের হৃদয়ে নীরব কষ্ট সৃষ্টি হয়। লেখক সেই কষ্টকেই বলেছেন— পিতা-মাতার নীরব হৃদয়ভার । 

সারকথা : সুভাকে নিয়ে বাবা-মায়ের যে দুশ্চিন্তা তা বোঝাতেই লেখক প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন। 

গ প্রয়োগ 

উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্যে কল্যাণী ও সুভার প্রতিবন্ধিতার দিকটির সংগতি দেখানো হয়েছে। 

প্রতিবন্ধিতার কারণে অনেকে সমাজে অবহেলার শিকার হয়। সমাজের মানুষ প্রতিবন্ধীদের প্রতি হীনম্মন্যতার পরিচয় দেয়। অথচ প্রতিবন্ধীদের প্রতি সহানুভূশীল হলে তবেই তারা বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবে এবং সমাজে সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারবে। ‘সুভা’ গল্পে সুভা কথা বলতে পারে না। আনন্দের বার্তা নিয়ে পৃথিবীতে এলেও কথা বলতে না পারার কারণে সুভার বাবা-মায়ের মনে নীরব হৃদয়ভারের জন্ম দেয় ।

উদ্দীপকের কল্যাণীর জন্মও পরিবারে আনন্দ নিয়ে আসে। কিন্তু তার মানসিক প্রতিবন্ধিতার দিকটি সবাইকে চিন্তিত করে তোলে। তার বয়সের তুলনায় যথাযথ মানসিক বিকাশ ঘটেনি। ‘সুভা’ গল্পের সুভাও বাক্প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার পরিবারের সবার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্যে কল্যাণী ও সুভার প্রতিবন্ধিতার দিকটি সংগতিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। 15 সারকথা : উদ্দীপকের কল্যাণী ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার প্রতিবন্ধিতার দিকটির সংগতি উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্যে প্রতিফলিত হয়েছে। 

ঘ) উচ্চতর দক্ষতা 

কল্যাণী ও সুভা একই পরিস্থিতির শিকার হলেও উভয়ের প্রেক্ষাপট ও পরিণতি ভিন্ন— মন্তব্যটি যথার্থ। 

প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজে বিভিন্নভাবে অবহেলার সম্মুখীন হয়। অথচ তারা আমাদের সমাজেরই অংশ, আমাদের মতোই মানুষ। তাই তাদের কল্যাণে এগিয়ে আসা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের সহানুভূতি পেলে তারা জীবনের পূর্ণতা লাভ করবে। উদ্দীপকে কল্যাণীর মানসিক বিকাশ ঠিকভাবে ঘটেনি। বিয়ের কথাবার্তায় তার বাবা পলাশ বাবু বরপক্ষের কাছে সে সব কথা খুলে বলেন। তারা সব শুনে উদারতার পরিচয় দেন। বরের বাবা সুবোধ বাবু মহত্ত্বের পরিচয় দিয়ে কল্যাণীকে ঘরে নিয়ে যেতে চান। অন্যদিকে ‘সুভা’ গল্পের সুভা বাপ্রতিবন্ধী। সে কথা বলতে পারে না।

তাই তার বাবা-মা যথাসময়ে তার বিয়ের ব্যবস্থা করতে পারেনি। এজন্য তারা লোকের নিন্দা এবং একঘরে হওয়ার হুমকিও পেয়েছেন। বাধ্য হয়ে বিদেশযাত্রা করেন। এদিক থেকে কল্যাণী ও সুভার প্রেক্ষাপট ও পরিণতি ভিন্ন । উদ্দীপকের কল্যাণী ও ‘সুভা’ গল্পের সুভা একই পরিস্থিতির শিকার হলেও উভয়ের প্রেক্ষাপট ও পরিণতি ভিন্ন।

কল্যাণী সুবোধ বাবুর উদারতায় পেয়েছে সুন্দর ভবিষ্যতের সন্ধান। অথচ ‘সুভা’ গল্পের সুভার পরিণতি এতটা মানবিকতায় সিক্ত হয়নি। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ। ‘সারকথা : উদ্দীপকের কল্যাণী ও ‘সুভা’ গল্পের সুভা দুজনই প্রতিবন্ধিতার শিকার। সুভা ও কল্যাণী একই পরিস্থিতির মাঝে থাকলেও উভয়ের 5 প্রেক্ষাপট ও পরিণতিতে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।

সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সাজেশন

গুরুত্বপূর্ণ সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর  

পোলিও আক্রান্ত হয়ে শাহানের বাম পা বাঁকা হয়ে গেছে। হাঁটতে তার খুব কষ্ট হয়, স্কুলে যাওয়ার জন্য সবার আগে ঘর থেকে বেরিয়েও সে সময়মতো স্কুলে পৌঁছতে পারে না। রাস্তায় বেশ কয়েকবার বসতে হয়, তবুও প্রচণ্ড ব্যথা হয়, দেরি হয়ে গেলে প্রায়ই সে স্কুলে যায় না। স্কুলের পাশের প্রকাণ্ড মাঠের কোণে বসে সারাক্ষণ আকাশের পানে চেয়ে থাকে। শ্রমজীবী বাবাকে এ কথা জানালে তিনি বলেন, ‘এ সবই তার স্কুল কামাইয়ের অজুহাত।’- এতে শাহান খুব কষ্ট পায় এবং কাঁদতে শুরু করে। 

ক. সুভা দিনে কয়বার গোয়ালঘরে যেত? 
খ. প্রকৃতি যেন তাহার ভাষার অভাব পূরণ করিয়া দেয়’- ব্যাখ্যা কর। 
গ. উদ্দীপকের শাহানের বাবা ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার বাবার মধ্যে যে সাদৃশ্য রয়েছে তা ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. “উদ্দীপকের শাহান যেন ‘সুভা’ গল্পের সুভার মতোই সামাজিক অবস্থার শিকার”- ‘সুভা’ গল্প অবলম্বনে মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। 

উত্তর

জ্ঞান 

ক) সুভা দিনে তিনবার গোয়ালঘরে যেত। 

অনুধাবন 

খ) প্রকৃতির বিভিন্ন শব্দ ও কোলাহল দিয়ে প্রকৃতি সুভার ভাষার অভাব পূরণ করে দেয়। 

‘সুভা’ গল্পের সুভা কথা বলতে পারে না। মুক প্রকৃতি সুভার ভাষার অভাব পূরণ করে দেয়। সে সময় পেলেই নদীর পাড়ে এসে বসে। তখন নদীর কলধ্বনি, পাখির ডাক, মাঝির গান, লোকের কোলাহল ইত্যাদি প্রকৃতির নানান উপাদান নিজের সমস্ত ভাষা নিয়ে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো সুভার হৃদয়ে আছড়ে পড়ে। এই ভাষার বিস্তার যেন বিশ্বব্যাপী। এভাবেই প্রকৃতি বিভিন্ন শব্দের মধ্য দিয়ে সুভার ভাষার অভাব পূরণ করে দেয়। 

সারকথা : নির্বাক প্রকৃতিক নিজস্ব ভাষা রয়েছে। প্রকৃতি এই ভাষা দিয়ে যেন নির্বাক সুভার ভাষার অভাব পূরণ করে দেয় । 

গ প্রয়োগ 

উদ্দীপকের শাহানের বাবা ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার বাবার মধ্যে সন্তানের মনোবেদনা বুঝতে না পারার দিক থেকে সাদৃশ্য রয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণে মানুষ নানাভাবে অবজ্ঞা ও অবহেলার শিকার হয়ে থাকে। পরিবার, সমাজ সব ক্ষেত্রেই তারা স্বাভাবিক মানুষের কাছ থেকে অমানবিক আচরণের শিকার হয়। আমাদের একটু সহানুভূতি তাদের জীবনে পূর্ণতা বয়ে আনতে পারে।

উদ্দীপকে পোলিও আক্রান্ত শাহানের জীবনের কষ্ট-যন্ত্রণা এবং তার পরিবারের অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। শাহানের বাবা একজন শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষ। তার সন্তান পোলিও আক্রান্ত হয়ে প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও সে তা বুঝতে পারে না। এই কারণেই শাহান নিজের কষ্টের কথা বললে বাবা তাকে বলে এ সবই তার স্কুল কামাইয়ের অজুহাত্। পিতা হয়েও সে শাহানের মনোবেদনা বুঝতে পারেনি।

‘সুভা’ গল্পের সুভার বাবা বাণীকণ্ঠ সুভাকে বুঝলেও তার অসুস্থতা তাকে দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন করে। বয়স হলেও সুভাকে পাত্রস্থ করতে না পারায় গ্রামের মানুষের কটু কথা শুনে চুপ থাকতে হয়। অবশেষে একঘরে করার হুমকিতে সুভাকে পাত্রস্থ করার জন্য তাকে নিয়ে কলকাতায় যাওয়ার আয়োজন করেন। তখন সভা ভীষণ মনঃকষ্টে ভোগে। কারণ সে তার চেনা পরিবেশ ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চায় না। বাবাকে সে তার কষ্টের কথা বোঝাতে পারে না। এভাবে উভয় ক্ষেত্রেই অসুস্থ সন্তানের অসহায়ত্ব ও মনোবেদনা বুঝতে না পারার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। 

সারকথা : সন্তানের মনোবেদনা বুঝতে না পারার দিক থেকে উদ্দীপকের শাহানার বাবা ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার বাবার মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ উচ্চতর দক্ষতা “উদ্দীপকের শাহান যেন ‘সুভা’ গল্পের মতোই সামাজিক অবস্থার শিকার”— ‘সুভা’ গল্প অনুযায়ী মন্তব্যটি যথার্থ। 

আমাদের সমাজ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের অবহেলার চোখে দেখে। তারা এটা মানতে চায় না যে, শারীরিক প্রতিবন্ধিতা বেঁচে থাকার পথে কখনো বাধা হতে পারে না। সহযোগিতা পেলে তারাও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে এবং সুযোগ পেলে সমাজে অবদান রাখতে পারে। 

‘সুভা’ গল্পে সুভা বাকপ্রতিবন্ধী বলে শৈশব থেকেই সে অবহেলার শিকার। সমবয়সীরা তাকে খেলায় নেয় না, তার সঙ্গে মেশে না। সুভার মা সুর্ভাকে তার গর্ভের কলঙ্ক মনে করেন। নির্বাক হওয়ায় বাণীকণ্ঠ মেয়েকে পাত্রস্থ করতে পারেন না। এই কারণে তাকে একঘরে করতে চায়।

তাই নিরুপায় হয়ে সুভার বিয়ের কথা ভেবে তাকে নিয়ে কলকাতায় যাওয়ার আয়োজন করেন। এই ঘটনার সঙ্গে উদ্দীপকের শাহানের সামাজিক অবস্থানের মিল রয়েছে। শাহানা পোলিও আক্রান্ত হয়েছে বলে সমাজে সে অবহেলিত। বাম পা বাঁকা হয়ে যাওয়ার কারণে তার হাঁটতে ভীষণ কষ্ট হয়। সবার আগে ঘর থেকে বের হয়েও সে সময়মতো স্কুলে পৌঁছতে পারে না। তার এই কষ্ট পরিবারের কেউ অনুধাবন করতে চায় না। 

‘সুভা’ গল্পে সুভা সমাজের মানুষের কাছে অবহেলিত থেকেছে। প্রতাপও সুভাকে নির্বাক সঙ্গী হিসেবেই তাকে দেখত, কিন্তু তার মনোবেদনা অনুধাবন করত না। উদ্দীপকের শাহানের কষ্টও কেউ বুঝতে চায়নি। এমনকি বাবাও শাহানকে অবিশ্বাস করেছে। ঠিক সময়ে স্কুলে না যেতে পারাকে স্কুল কামাইয়ের অজুহাত বলে মনে করেছে। এসব দিক বিচারে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ। 

সারকথা : উদ্দীপকের শাহান ও ‘সুভা’ গল্পের সুভা উভয়েই পারিবারিক সামাজিকভাবে অবহেলার শিকার হয়। প্রতিবন্ধিতার কারণেই তারা এ অবহেলার শিকার। 

সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সাজেশন

গুরুত্বপূর্ণ সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণি পড়ুয়া প্রাণবন্ত তুহিন বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে খেলাধুলা করত। হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় তার একটা পা হারানোর পর আগের মতো সে সবখানে আর প্রাণবন্ত সেই পরিবেশ পায় না। ফলে ধীরে ধীরে সে নিশ্চুপ হয়ে যায়। 

ক. সুভা কখন নদীতীরে এসে বসে? 

খ. প্রতাপের প্রতি তার মা-বাবার নিরাশ হওয়ার কারণ বুঝিয়ে লেখ। 

গ. উদ্দীপকটিতে ‘সুভা’ গল্পের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. “উদ্দীপকের তুহিনের মতো মানুষদের প্রতি দরদি হওয়ার শিক্ষাই ‘সুভা’ গল্পের মূল উপজীব্য।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। 

প্রশ্নের উত্তর 

ক জ্ঞান 

সুভা কাজকর্মে যখনই অবসর পায় তখনই নদীতীরে এসে বসে। 

খ অনুধাবন 

প্রতাপ নিতান্ত অকর্মণ্য ছিল বলে মা-বাবা তার প্রতি নিরাশ হয়েছিলেন। 

‘সুভা’ গল্পে প্রতাপ বাবা-মায়ের নিতান্ত অকর্মণ্য ছেলে। অনেক চেষ্টা করেও তাকে দিয়ে সংসারের উন্নতি হয় এমন কোনো কাজ 

করানো যেত না। এ কারণে মা-বাবা তাকে নিয়ে প্রত্যাশা বাদ দিয়েছিলেন। ফলে সে অবহেলায় সময় কাটানোর জন্য অপরাহ্ণে নদীতীরে ছিপ ফেলে মাছ ধরত। কারণ মাছ ধরার বাহানায় অনেকটা সময় কাটানো যায়। প্রকৃতপক্ষে প্রতাপ ছিল প্রচণ্ড অলস। সে কোনো কাজ করতে চাইত না। এ কারণে প্রতাপের প্রতি তার মা-বাবা নিরাশ হয়েছিলেন। 

সারকথা : অলসতা ও অকর্মণ্যতার কারণে প্রতাপের প্রতি তার মা-বাবা নিরাশ হয়েছিলেন। 

গ প্রয়োগ 

উদ্দীপকটিতে ‘সুভা’ গল্পের সুভার নির্বাক প্রকৃতির মাঝে নিশ্চুপ হয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখার দিকটি ফুটে উঠেছে। 

আমাদের চারপাশের পরিবেশ ও তার উপাদানের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। প্রকৃতির সঙ্গে গভীর বন্ধনে মানুষ বাধা পড়ে আছে। এক কথায় মানুষ প্রকৃতিরই সন্তান। 

উদ্দীপকে হঠাৎ দুর্ঘটনায় একটি পা হারিয়ে তুহিনের নিশ্চুপ হয়ে যাওয়ার দিকটি ফুটে উঠেছে। দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে সে আর তার বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে পারে না। এ বিষয়টি ‘সুভা’ গল্পের সুভার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। ‘সুভা’ গল্পের সুভা বাকপ্রতিবন্ধী, সে কথা বলতে পারে না।

এ কারণে সবাক মানুষের সঙ্গে তার বিশেষ সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। তার কথা বলার এই শূন্যতা পূরণ করেছে প্রকৃতি। সুভা তার অনুভূতি দিয়ে প্রকৃতিকে জয় করে নিয়েছে। প্রকৃতির মাঝে সে প্রাণের স্পর্শ খুঁজে পেয়েছে। প্রকৃতিই হয়ে উঠেছে তার আশ্রয়। সে বিপুল নির্বাক প্রকৃতির কাছে থাকতেই ভালোবাসে। উদ্দীপকের তুহিন প্রাণবন্ত পরিবেশ ও প্রকৃতির স্পর্শ না পেয়ে নিশ্চুপ হয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখে। প্রকৃতির সঙ্গে মিশতে না পারার বেদনা তাকে বাক্শূন্য করে তোলে। তুহিন বাপ্রতিবন্ধী না হয়েও কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তার এই নিশ্চুপ অবস্থা ‘সুভা’ গল্পের সুভার নীরবতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ । 

সারকথা : সুভা ও তুহিনের প্রতিবন্ধিতা তাদের প্রাণবন্ত জীবনকে নিশ্চুপ করে দিয়েছে। এই নির্বাক ও নিশ্চুপতার দিক থেকে দুজনের মধ্যে মিল লক্ষ করা যায় । 

উচ্চতর দক্ষতা 

“উদ্দীপকের তুহিনের মতো মানুষদের প্রতি দরদি হওয়ার শিক্ষাই ‘সুভা’ গল্পের মূল উপজীব্য।”- মন্তব্যটি যথার্থ। 

শারীরিক প্রতিবন্ধীরা আমাদের পরিবার ও সমাজেরই অংশ। আমরা অনেক সময় তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করি। এতে তাদের স্বাভাবিক জীবন বিঘ্নিত হয়। আমাদের উচিত তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করা। 

উদ্দীপকের তুহিন নবম শ্রেণির ছাত্র। এ বয়সের কিশোররা প্রাণবন্ত, দুরন্ত ও চঞ্চল হয়ে থাকে। তুহিনও ঠিক তেমনই প্রাণবন্ত এক কিশোর। দুর্ঘটনায় পড়ে একটি পা হারিয়েছে সে তার প্রাণবন্ত জীবনও হারিয়ে ফেলে। ফলে আগের মতো সুন্দর পরিবেশ সে পায় না। বেশিরভাগ সময়ই তাকে প্রকৃতিবিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে হয়। তুহিন ধীরে ধীরে কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে নিশ্চুপ হয়ে যায়। ‘সুভা’ গল্পের সুভারও বাপ্রতিবন্ধিতার কারণে জীবনের স্বাভাবিক বিকাশ বিঘ্নিত। সে অন্যদের অবহেলার শিকার। তুহিন ও সুভার বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে এই প্রতিবন্ধিতা অত্যন্ত পীড়াদায়ক। 

‘সুভা’ গল্পে বাপ্রতিবন্ধিতার কারণে সুভা পারিপার্শ্বিক ও মানসিক যে বঞ্চনার শিকার হয়েছে, ঠিক তেমনই উদ্দীপকের দুর্ঘটনায় পা হারানো তুহিনও মুক্ত পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সবার সঙ্গে আগের মতো মিশতে পারে না। এসব বঞ্চিত শিশু-কিশোরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়াই ‘সুভা’ গল্পের মূল উপজীব্য। কারণ সামান্য সহানুভূতি ও ভালোবাসা তাদের এই ছোট্ট জীবনকে আলোকিত করে তুলতে পারে। এতে করে তারা সমগ্র জীবন আত্মনির্ভরশীল হয়ে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে এবং পরিবার ও দেশের জন্যও অবদান রাখতে পারে। তাই বলা যায়, আলোচ্য মন্তব্যটি যথার্থ। 

সারকথা : ‘সুভা’ গল্পের সুভার দুঃখবোধ উপলব্ধি করে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ওঠার মনোভাবই ‘সুভা’ গল্পের মূল উপজীব্য। উদ্দীপকের তুহিনের ক্ষেত্রেও তা সমানভাবে প্রযোজ্য । 

Read More: সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সাজেশন

Leave a Comment

You cannot copy content of this page