অভাগীর স্বর্গ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

অভাগীর স্বর্গ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর এর বিস্তারিত নিচে দেওয়া হল যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হবে। তাই এই আর্টিকেলটি অনুসরণ করো এবং অনুশীলন অব্যাহত রাখো। তোমাদের জন্য শুভকামনা।

অভাগীর স্বর্গ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন ১। মাকে বিশ্বাস করাই কাঙালীর অভ্যাস কেন?  

ঊত্তর নিজে লিখ

প্রশ্ন ২। “মা মরেছে ত যা নিচে নেবে দাঁড়া”- অধর রায়ের এরূপ উক্তির কারণ কী? 

ঊত্তর নিজে লিখ

প্রশ্ন ৩। রসিক দুলে তার পায়ের ধুলো দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলল কেন? 

প্রশ্ন ৪। ‘রসিক হতবুদ্ধির মত দাঁড়াইয়া রহিল’— কেন?

ঊত্তর নিজে লিখ

প্রশ্ন ৫। কাঙালীর অসহায়ত্বের কারণ কী?
উত্তর : কাঙালীর অসহায়ত্বের প্রধান কারণ দারিদ্র্য এবং নিচু জাত বলে সামাজিক বৈষম্য। 

‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পে কাঙালী দুলে পরিবারের ছেলে। সামন্ততান্ত্রিক সমাজে দুলে সর্বনিম্ন জাত। সমাজে বনেদি সম্প্রদায় দুলেদেরকে মানুষ বলেই মনে করে না। আর্থিকভাবে শোচনীয় এই সম্প্রদায়কে পদে পদে নির্যাতন, নিপীড়ন, তাচ্ছিল্য সহ্য করতে হয়। কাঙালীদের সংসারে নিত্য অভাব। তার মা কোনো রকমে সংসারে দুবেলা খাদ্যের সংস্থান করে। সেই মায়ের অসুস্থতা ও মৃত্যু, সর্বোপরি সামাজিক বৈষম্য কাঙালীর জীবনকে অনিশ্চয়তা ও অসহায়ত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছে। 

প্রশ্ন ৬। অধর রায় বারান্দায় গোবরজল দিতে বলেছেন কেন?
উত্তর : অধর রায় বারান্দায় গোবরজল ছড়িয়ে দিতে বলার কারণ হলো- নিচু জাতের সন্তান কাঙালী তার মায়ের মড়া ছুঁয়ে এসে অধর রায়ের বারান্দায় দাঁড়িয়েছিল। 

কাঙালী মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণের জন্য মায়ের মৃত্যুর পর কাঠের ব্যবস্থা করতে জমিদারের কাছারি বাড়ি যায়। কাছারি বাড়ির কর্তা অধর রায়। কাঙালী তার কাছে তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় লাগানো বেলগাছটি কাটার অনুমতি চায় মাকে পোড়ানোর জন্য। এতে অধর রায় বিরক্ত হয়। বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা কাঙালীকে নিচে নেমে দাঁড়াতে বলে এবং জাত জিজ্ঞাসা করে। অধর রায় ওর দাঁড়ানোর জায়গাটাতে গোবর জল ছড়িয়ে দিতে আদেশ দেন। মূলত কাঙালী নিচু জাতের হওয়ায় এবং মড়া ছুঁয়ে আসায় অধর রায় এ কথা বলেছেন। 

প্রশ্ন ৭। স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পরেও কেন অভাগী পুনরায় বিয়ে করেনি? 
কাঙালীর বাবা ছেড়ে যাওয়ার পর অভাগীকে অনেকেই বিয়ে করতে বলেছে। কিন্তু তাতে অভাগীর মন গলেনি, সে বিয়েতে রাজি হয়নি। কারণ সে জানে কাঙালীর সে ছাড়া এ জগতে আর কেউ নেই। তাই নিজের কথা ভেবে স্বার্থপরের মতো সে বিয়ে করেনি, বাঙালীর জন্য কারও প্ররোচনায় সে কান দেয়নি। প্রশ্ন ৮। অভাগী কবিরাজের বড়ি উনুনে ফেলে দিল কেন? [বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল ও কলেজ, চট্টগ্রাম) উত্তর : কাঙালী মায়ের চিকিৎসার জন্য ঘটি বাঁধা দিয়ে যে বড়ি এনেছে তা খাওয়ার আয়োজন শুনে অভাগী রাগ করে কবিরাজের বড়ি উনুনে ফেলে দিল। 

অভাগীর জীবননাট্যের শেষ অঙ্ক পার হতে চলল। কাঙালী কবিরাজের কাছে ছুটে গিয়ে কাঁদাকাটি করল, হাতে পায়ে পড়ল, শেষে ঘটি বাঁধা দিয়ে তাকে এক টাকা প্রণামি দিল। কিন্তু তাতেও কবিরাজ না এসে গোটা চারেক বড়ি দিলেন। সেগুলো খেতে আবার বিরাট আয়োজন। খল, মধু, আদার সত্ত্ব, তুলসী পাতার রস ইত্যাদি। কাঙালীর মা রাগ করে হাত পেতে বড়ি কয়টি নিয়ে মাথায় ঠেকিয়ে উনুনে ফেলে দিয়ে বলল, ভালো হই তো এতেই হব, বাগদি দুলের ঘরে কেউ ওষুধ খেয়ে বাঁচে না। 

প্রশ্ন ৯। অভাগীর অন্তিম ইচ্ছা পূরণ হলো না কেন? 
উত্তর : জাত-ধর্মের বিভেদ ও জমিদারি প্রথার নিষ্ঠুরতার জন্য অভাগীর অন্তিম ইচ্ছা পূরণ হলো না। 

স্বামী পরিত্যক্তা অভাগী একমাত্র সন্তান কাঙালীকে নিয়ে কোনোমতে জীবন পার করছিল। তার আশা ছিল ছেলে একদিন বড় হয়ে তার দুঃখ ঘুচাবে। মৃত্যুর পর ছেলের হাতের আগুন পেয়ে সে স্বর্গে যাবে। কিন্তু এ সমাজ তার অন্তিম ইচ্ছা পূরণ করতে দেয়নি। ছোট জাতের বলে তার নিজের হাতে লাগানো বেলগাছটিও জমিদার কাটতে দেয়নি। যার জন্য কাঙালী মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে পারেনি। 

প্রশ্ন ১০। “ছেলের হাতের আগুন! সে তো সোজা কথা নয়।”ব্যাখ্যা কর। [ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল, ঢাকা] উত্তর : “ছেলের হাতের আগুন, সে তো সোজা কথা নয়”- এ কথা কাঙালীর মা বলেছিল ছেলের হাতে আগুন লাভ করে স্বর্গে যাওয়ার ভাবনা থেকে। 

‘অভাগীর স্বর্গ’ গল্পটি অভাগীর সৎকারের বাসনাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে। ধর্মভীরু কুসংস্কারাচ্ছন্ন নিচু জাতের মেয়ে অভাগী। সে ঠাকুরদাস মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রীর শবযাত্রায় বহু কণ্ঠে হরিধ্বনির সঙ্গে পুত্রহস্তে মুখাগ্নি দেখে ভাবল ঠাকুরদাসের স্ত্রী স্বর্গে যাচ্ছেন। এজন্য সেও তার সৎকারে ছেলের হাতের আগুন প্রত্যাশা করল। তার ধারণা, ছেলের হাতে আগুন পেলেই সে স্বর্গে যাবে। সেজন্য সে ভেবেছে, ছেলের হাতের আগুন পাওয়া সোজা কথা না, ভাগ্যের ব্যাপার। 

আরী পড়ুনঃ

Leave a Comment

You cannot copy content of this page