খালি পেটে লবঙ্গ খেলে এত উপকার, জানতেন?

খালি পেটে লবঙ্গ খেলে এত উপকার, জানতেন?

খালি পেটে লবঙ্গ খেলে এত উপকার, জানতেন?
খালি পেটে লবঙ্গ খেলে এত উপকার, জানতেন?

লবঙ্গের পরিচয়

লবঙ্গ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium aromaticum, একটি বিশেষ ধরনের ফুলের কুঁড়ি যা প্রধানত দারুচিনি গাছ থেকে উৎপন্ন হয়। এই কুঁড়িগুলি শুকানোর পর একটি গা dark ় বাদামী রঙের এবং অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট গন্ধযুক্ত হয়। লবঙ্গের উৎপত্তিস্থল প্রধানত ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং মৌরিশাস। তবে, আস্তে আস্তে এটি পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। লবঙ্গের ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে, বিশেষ করে খাদ্য এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে।

লবঙ্গের মধ্যে উপস্থিত মৌলিক গুণাবলী রয়েছে যার কারণে এটি বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কার্যকর। এতে ইউজেনল নামক একটি শক্তিশালী অণু থাকে, যা এর স্বাদ এবং গন্ধের পরিচিতি প্রদান করে। লবঙ্গকে পুরানো সময়ের মধ্যে মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হত এবং এটি একসময় মূল্যবান একটি বাণিজ্যিক পণ্য ছিল। লবঙ্গের ব্যবহার শুধুমাত্র রান্নায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি আয়ুর্বেদ এবং চীনা কবিরাজিতে সুপরিচিত একটি উপাদান।

লবঙ্গ বোঝা যায় যে, এটি একটি অতিব মূল্যবান পণ্য। এটি বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে এবং শরীরের জন্য অনেক উপকারিতা রয়েছে। অনেক সংস্কৃতিতে এটি সচরাচর ব্যবহৃত হয়ে থাকে, বিশেষ করে ভারতীয় রান্নার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে। এখানে কথিত প্রতিটি উপাদানের জন্য এর বৃদ্ধির প্রক্রিয়া এবং উৎপাদন পদ্ধতি একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, যা লবঙ্গের ইতিহাসকে আরও সমৃদ্ধ করে।

লবঙ্গের পুষ্টিগুণ

লবঙ্গ, বা এসিনামোনাম স্যাম্বাল, একটি জনপ্রিয় মসলা যার আন্তর্জাতিক কulinary ব্যবহারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যমূলক গুণাবলীও রয়েছে। এতে বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান বিদ্যমান যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন K, এবং কিছু B ভিটামিন, যা শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ন্যাচারাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করার জন্য লবঙ্গ অত্যন্ত পরিচিত।

লবঙ্গের মধ্যে পাওয়া যাকনিক এসেনশিয়াল অঅইল, যেমন ইউজেনল, যা বিভিন্ন প্রকার প্রশান্তি ও স্বাস্থ্যকর প্রভাব ফেলে। এই অণু শরীরের প্রদাহ কমাতে, ব্যাথা উপশম করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ শরীরের কোষকে মুক্ত র‌্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে, যা ক্যান্সার এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়াও, লবঙ্গ খরচ করা মুখের স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে। এতে থাকা অ্যান্টিসেপ্টিক গুণময় উপাদান মুখের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং দাঁতের ব্যথা উপশমে সহায়ক হতে পারে। যাদের সমস্যা অত্যাধিক হজমের সমস্যা, তাদের জন্য লবঙ্গ একটি সহায়ক পুষ্টি হিসেবে কাজ করে, কারণ এটি হজম প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করে। স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিরা তাই রোজের খাবারে লবঙ্গ অন্তর্ভুক্ত করে শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারেন।

সংক্ষেপে, লবঙ্গের বিভিন্ন পুষ্টিকর বৈশিষ্ট্য এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতা তাকে একটি অপরিহার্য উপাদান করে তুলেছে। বিভিন্ন রকম খাবারে এটি যুক্ত করার মাধ্যমে, সহজেই শরীরের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

লবঙ্গ খাওয়ার সঠিক সময়

লবঙ্গ একটি অতি পরিচিত মসলা, যা আমাদের রান্নাঘরে প্রায়শই ব্যবহার হয়। তবে, এটি খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। সকালে খালি পেটে এই মসলা খাওয়ার সময় আমাদের শরীর বিভিন্ন উপকারের সম্মুখীন হয়।

প্রথমত, সকালে খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়া আহারের প্রথম অংশ হিসেবে আমাদের মেটাবলিজমকে বাড়িয়ে তোলে। এটি দেহের বিপাকক্রিয়া শুরু করতে সাহায্য করে, ফলে খাওয়া খাবার দ্রুত হজম হয়। মুক্ত র‌্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লবঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যখন আমরা সকালে এই মসলা খাই, তখন তা দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

দ্বিতীয়ত, লবঙ্গ জাতীয় উপকারিতা আমাদের জন্য মাথাব্যথা এবং অন্যান্য ছোটখাটো শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। তারুণ্য ও সতেজতার ক্ষেত্রে লবঙ্গের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। এটি শরীরের রক্তপরিবহনে সহায়তা করে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এতে থাকা ইউজেনল পদার্থটি শারীরিক ব্যথা হ্রাস করতে সক্ষম।

সুতরাং, খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়াটা সাধারণত আরো কার্যকরী কারণ এটি শরীরের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও উপাদান সরবরাহ করে। নিয়মিতভাবে আটকে রেখে সকালে খালি পেটে এই মসলা খাওয়া আমাদের ডাইজেসটিভ সিস্টেমকে সুস্থ এবং প্রাণবন্ত রাখে।

লবঙ্গের স্বাস্থ্যের উপকারিতা

লবঙ্গ, একটি প্রচলিত মসলা, বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য পরিচিত। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ। গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গের নিয়মিত ব্যবহারে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়। এই মসলাটিতে ইক্যুয়ালিন নামক যৌগ রয়েছে, যা শরীরের রক্তচাপকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক। ফলে, মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধিত হয়।

আরেকটি উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হলো মেটাবলিজম বৃদ্ধি। লবঙ্গের মধ্যে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন ইওজেনল বিদ্যমান, যা শরীরের শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়ার ফলে 체중 নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া যেমন হজম এবং খাবারের উপর বিশুদ্ধ প্রভাব ফেলে। এর ফলে, উপকারিতা আরও বিস্তৃত হয় এবং মানুষকে সুস্থ রাখে।

লবঙ্গ পেটের সমস্যা সমাধানেও কার্যকরী। এটি একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে, যা পেটের ব্যথা, গ্যাস, এবং অস্বস্তির ঘটনাগুলো কমাতে সাহায্য করে। লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে তা দ্রুত হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটাতে পারে, যা পেটের ও অঙ্গের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে, লবঙ্গের কিছু সাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতার কারণে এটি সুস্থ থাকার জন্য একটি কার্যকরী উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়ে উঠছে।

লবঙ্গ খাওয়ার পদ্ধতি

লবঙ্গ, যা প্রাচীনকাল থেকে ঔষধি গুণের জন্য পরিচিত, ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের খাদ্য এবং পুষ্টিকর উপকরণে। লবঙ্গ খাওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে, যা সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারে সহায়ক হতে পারে। প্রথমত, গোটা লবঙ্গ সংগ্রহ করে তা খাওয়া একটি সহজ ও সরাসরি পদ্ধতি। সাধারণত, সকালে খালি পেটে দুটি গোটা লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়া হলে দেহের বিপাকক্রিয়ায় সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। এটি আরও রক্তের প্রবাহকে উন্নত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

দ্বিতীয়ত, লবঙ্গের পাউডার একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় উপায়। এটি অনেক রেসিপিতে যেমন মিষ্টান্ন কিংবা স্পাইস মিশ্রণে অন্তর্ভুক্ত হয়। এক চা চামচ লবঙ্গ পাউডারকে গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে হজমের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে এবং ঠান্ডা-কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এ ছাড়া, লবঙ্গের পাউডার সহজে নিজের তৈরি খাবারে ব্যবহার করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সবজি বা মাংসের তরকারির মধ্যে সামান্য লবঙ্গের পাউডার যোগ করলে খাবারের স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ দুটোই বৃদ্ধি পায়।

অন্যদিকে, লবঙ্গের ভিষি প্রস্তুত করেও খাওয়া যেতে পারে। এই পদ্ধতিটি লবঙ্গের অ্যান্টিসেপটিক এবং প্রদাহপ্রতিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলিকে কাজে লাগায়। লবঙ্গের কয়েকটি ডোরা গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে তার ভিষি কোমল পানীয় হিসেবে পান করা যায়, যা শরীরে তাজगी এবং উন্নত হজমে সহায়তা করে। রান্নার আগে বা পরে ভেষজ হতে লবঙ্গের ব্যবহার, সক্রিয় পুষ্টিরতা সংরক্ষণে অত্যন্ত কার্যকর।

প্রস্তুতির জন্য কিছু সহজ টিপস রয়েছে। লবঙ্গ ব্যবহার করার সময় সতর্ক থাকুন যাতে সঠিক পরিমাণে ব্যবহার করা হয় এবং এটি স্বাদের বা গন্ধের সাথে ভারসাম্য বজায় রাখে। একাধিক ধরণের মশলা সংমিশ্রণে লবঙ্গ ব্যবহার করলে টেক্সচার এবং স্বাদে উন্নতি করা সম্ভব।

লবঙ্গের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

লবঙ্গ, যা সাধারণত রান্নার জন্য ব্যবহৃত হয় এবং প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা সরবরাহ করে, তা কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সতর্কতাও নিয়ে আসতে পারে। বিশেষ করে, যারা অ্যালার্জির প্রবণতা বা কিছু স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য লবঙ্গের ব্যবহার সীমিত করা উচিত। লবঙ্গের কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল খাদ্যে অস্বস্তি, বমি এবং ডায়রিয়া। এর কারণ হলো অত্যধিক পরিমাণে লবঙ্গ গ্রহণের ফলে শরীরে কিছু নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিতে পারে।

যারা গ্যাসট্রাইটিস, আলসার, অথবা পাকস্থলীর সমস্যা নিয়ে ভুগছেন, তাদের জন্য লবঙ্গ খাওয়া পরামর্শ দেওয়া হয় না, কারণ এটি পাকস্থলীতে জল্য দূষিত করতে পারে। এছাড়াও, যাদের রক্ত চলাচলে সমস্যা রয়েছে, তারা যদি রক্ত পাতলানোর জন্য লবঙ্গ ব্যবহার করেন তবে এটি তাদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। নারীদের জন্য, গর্ভাবস্থায় লবঙ্গ খাওয়া পরিহার করা উচিত, কারণ এখানে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এখনকার দিনে, লবঙ্গের একটি প্রচলিত প্রয়োগ হচ্ছে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্যের জন্য। তবে, যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের আগে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত, কারণ লবঙ্গের ব্যবহারে রক্তে শর্করার মাত্রায় পরিবর্তন ঘটতে পারে। আরও উল্লেখযোগ্য, যাদের থাইরয়েড সমস্যা রয়েছে, তারা লবঙ্গের ওপর অতিরিক্ত নির্ভর করা থেকে বিরত থাকুন।

সুতরাং, লবঙ্গের সুবিধাগুলি যতটা পুশক, এর সম্ভবনা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি এবং স্বাস্থ্য সমস্যার উপর নজর দেওয়া খুব প্রয়োজনীয়। আপনার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে লবঙ্গের ব্যবহার নির্ধারণ করা উচিত।

বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লবঙ্গের কার্যকারিতা

লবঙ্গ, যা পেঁপে পরিবারের একটি সদস্য, প্রাচীন কাল থেকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণের জন্য এটি জীবনধারায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে। প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্রে লবঙ্গকে তার পুষ্টিগুণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতার জন্য স্বীকৃত করা হয়।

লবঙ্গের অন্যতম প্রধান ব্যবহারগুলো হল ইনফেকশনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। লবঙ্গের অয়েলের মধ্যে ইউজেনল নামক এক পদার্থ রয়েছে, যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধে কার্যকরী। এই কারণে দাঁতের সংক্রমণ ও মুখের দুর্গন্ধের সমস্যা মোকাবিলায় লবঙ্গ ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি মুখের স্বাস্থ্যে উন্নতি সাধন করে এবং অস্বস্তি কমায়।

এ ছাড়া, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গের ভূমিকা অপরিসীম। গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গের একাধিক কম্পাউন্ড ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সক্ষম। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগীরা রক্তের শর্করা স্তর নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করেন, লবঙ্গ তাদের খাদ্য তালিকায় একটি সহায়ক ব্রত হিসেবে কাজ করতে পারে।

এরপর, লবঙ্গের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। এটি শরীরে প্রদাহ কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। তাই লবঙ্গের নিয়মিত ব্যবহারে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এর ব্যবহার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে জোরদার করে, ফলে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য এটি একটি চমৎকার উপাদান।

লবঙ্গের সাথে অন্যান্য উপাদানের সমন্বয়

লবঙ্গ, যা এর স্বযত্ন এবং স্বাস্থ্যগত গুণাবলীর জন্য পরিচিত, অন্য মশলা এবং খাবারের সাথে সমন্বয় করলে আরও কার্যকরী হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, লবঙ্গ এবং আদার সংমিশ্রণ প্রচলিত একটি প্রাচীন পদ্ধতি। আদা স্বাভাবিকভাবে একটি উত্তপ্ত উপাদান এবং এটি লবঙ্গের অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি বাড়িয়ে দেয়। একসাথে এই দু’টি উপাদান মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং সর্দি, কাঁশি এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা মোকাবেলায় কার্যকরভাবে কাজ করে।

এছাড়া, লবঙ্গ এবং ক্যানেলের সংমিশ্রণও উল্লেখযোগ্য। ক্যানেল, যার নিজস্ব একটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী রয়েছে, লবঙ্গের সঙ্গে মিলিত হয়ে পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে লবঙ্গ ও ক্যানেলের সংমিশ্রণ ডায়াবেটিসের রোগীদের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে। উল্লেখযোগ্যভাবে, লবঙ্গের প্রকৃতির সাথে ক্যানেলের মিষ্টতা মিশিয়ে একটি সুস্বাদু মিশ্রণ তৈরি করা যায়।

অন্যদিকে, লবঙ্গের সঙ্গে হলুদ যোগ করা ক্ষেত্রেও উপকার লাভ করা সম্ভব। হলুদে উপস্থিত কুরকুমিন যৌগটি অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণে পরিপূর্ণ। লবঙ্গ এবং হলুদ একত্রে ইনফ্লামেশন কমাতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে। এই প্রয়োগগুলি কেবল স্বাস্থ্যগত উপকারিতায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি রান্নার স্বাদ এবং গন্ধকেও উন্নত করে।

এইভাবে, লবঙ্গের সঙ্গে অন্যান্য উপাদানের সমন্বয় স্বাস্থ্য ও স্বাদ উভয় ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলে। এই সংমিশ্রণে একাধিক উপকারিতা রয়েছে, যা শরীরের জন্য অপরিহার্য।

লবঙ্গ সম্পর্কে সাধারণ ধারণা ও প্রচলিত ডিজিটাল কুসংস্কার

লবঙ্গ, যা একটি সুগন্ধযুক্ত মশলা হিসেবে পরিচিত, অনেকের কাছেই পরিচিত, কিন্তু এর সম্পর্কে বেশ কিছু ভুল ধারণা ও প্রচলিত কুসংস্কার বিদ্যমান। এই মশলার ব্যবহার যেমন রান্নার জন্য হয়ে থাকে, তেমনি এটি বিভিন্ন প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত। লবঙ্গের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ। তবে, ডিজিটাল মিডিয়ায় লবঙ্গের উপকারিতা সম্পর্কিত যে সকল দাবী শোনা যায়, তা সব সময় বাস্তবতা অনুসারে সঠিক নয়।

অনেকেই দাবি করেন যে, খালি পেটে লবঙ্গ খাওয়ার ফলে শরীরে বিশেষ পরিবর্তন আসতে পারে, যেমন ওজন কমানো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, অথবা হজম শক্তি উন্নয়ন। যদিও কিছু গবেষণার ফলাফল নির্দেশ করে যে, লবঙ্গের মধ্যে কিছু স্বাস্থ্যকর উপাদান রয়েছে, তবে এটি স্বতন্ত্রভাবে বা যেকোনো নির্দিষ্ট পরিমাণে খাবার খেলে সব সমস্যা সমাধান করে এমন ধারণা বিভ্রান্তিকর।

একটি প্রচলিত ভুল ধারণা হলো, লবঙ্গের অপব্যবহার শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে গঠিত কুসংস্কার অনেক সময় মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে। তাই, লবঙ্গ বা কোনো মশলার ব্যবহার করার আগে বৈজ্ঞানিক গবেষণার উপর ভিত্তি করে সঠিক তথ্য জানা প্রয়োজন। সঠিক পরিমানে এবং উপযুক্ত উপায়ে লবঙ্গ ব্যবহার করলে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। পরিশেষে, নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, প্রতিটি খাবারের ক্ষেত্রে সমস্যা সমাধানে একক কিছু খাবারের উপর নির্ভর করা উচিত নয়।