প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন ২০২৫-২০২৬

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেসান্স দেওয়া হয়েছে এইচএসসি শিক্ষার্থীদের অনুশীলন এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য।

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন ২০২৫-২০২৬
প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন ২০২৫-২০২৬

আরো পড়ুনঃ প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন । সৃজনশীল ২০২৫-২০২৬

প্রাণীর বিভিন্নতা বা প্রাণিবৈচিত্র্য

প্রশ্ন ১। প্রজাতি বৈচিত্র্য বলতে কী বুঝ? [ঢা, বাে, ‘২১; ব, বাে, ‘২১]

উত্তর : বিভিন্ন প্রজাতির সংখ্যা যা একটি নির্দিষ্ট সময়ে, ও অঞ্চলে একসঙ্গে বসবাস করে তাকে প্রজাতি বৈচিত্র্য বলে। জীববৈচিত্র্যের মৌলিক ধাপ হলাে প্রজাতি বৈচিত্র্য। ভাইরাসসহ পৃথিবীর সকল প্রজাতির জীব এই প্রজাতি বৈচিত্র্যের অন্তর্ভুক্ত। প্রজাতি বৈচিত্র্য বেশি হলে সে অঞ্চলকে জীববৈচিত্র্যের হট স্পট বলে ।

প্রশ্ন ২। প্রাণীর বিভিন্নতার কারণ কী? (চ, বাে, ‘২১)

উত্তর : প্রাণীর বিভিন্নতার কারণ বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস ও বিভিন্ন জলবায়ু ও আবহাওয়ার প্রভাব। এজন্য প্রাণীর মধ্যে বিভিন্ন বৈচিত্র্যতাও দেখা যায় । পৃথিবীর বিভিন্ন অঞলে প্রাণীদের মধ্যে গঠন, বাসস্থান, আচরণগত বৈচিত্র্য দেখা যায়। প্রকৃতির বিভিন্ন জলবায়ু ও আবহাওয়া অঞলে ফলভাবে টিকে থাকার জন্য প্রাণীদের মধ্যে এবৈচিত্র্যময়তার উদ্ভব হয়। এছাড়া ভিন্ন পরিবেশে সময়ের পরিবর্তনের সাথে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যও প্রাণীদের মধ্যে বৈচিত্র্যময়তার উদ্ভব হয়।

প্রশ্ন ৩। জীববৈচিত্র্য বলতে কী বুঝ?

উত্তর : পৃথিবীতে বিরাজমান জীবসমূহের জিনগত, প্ৰজাতিগত ও পরিবেশগত কারণে যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় সামগ্রিকভাবে তাকে জীববৈচিত্র্য বলে। জীব বলতে অণুজীব, ছত্রাক, উদ্ভিদ ও প্রাণীকে বুঝায়। এরা একটি থেকে অপরটি ভিন্ন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত এবং পৃথকযােগ্য । কাজেই জীববৈচিত্র্যকে সাধারণত তিনটি পর্যায়ে আলােচনা করা যায় । যথা : জিনগত বৈচিত্র্য, প্ৰজাতিগত বৈচিত্র্য এবং ইকোসিস্টেমগত বৈচিত্র্য। এ তিন প্রকার বৈচিত্র্য মিলিতভাবে সৃষ্টি করে জীববৈচিত্র্য।

প্রশ্ন ৪। প্রাণীদের বিভিন্ন দলে বিভক্ত করার কারণ কী?

উত্তর : পৃথিবীতে অসংখ্য ছােট-বড়  বৈচিত্র্যময় প্রাণী রয়েছে। এদের প্রত্যেকের সম্বন্ধে পৃথকভাবে জানা কারও একার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে প্রত্যেকেরই প্রাণিজগৎ সম্পর্কে কম-বেশি জ্ঞান লাভ করা প্রয়ােজন। এজন্য পারস্পরিক সম্পর্ক এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মিল-অমিলের ভিত্তিতে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রাণীদের বিভিন্ন দলে বিভক্ত করা হয়েছে।

প্রাণিজগতের শ্রেণিকরণের ভিত্তি ও নীতি

প্রশ্ন ৫। ত্রিপদ নামকরণ বলতে কী বুঝ? (ঢা. বাে, ‘২১)

উত্তর : জীবের নামকরণের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী গণ, প্রজাতি ও উপপ্রজাতি এই ৩টি পদের সমন্বয়ে বৈজ্ঞানিক নাম প্রদান করাকে ত্রিপদ নামকরণ বলে। পাখী বিজ্ঞানী schlegel (1844) সালে প্ৰথম ত্রিপদ নামকরণ প্রণয়ন করেন। যেমন– Passer domesticus niloticus. (নীলনদ এলাকার চড়ুই পাখি)।

প্রশ্ন ৬। মানুষের মধ্যে অন্তঃপ্রজাতিক বৈচিত্র্য কেন দেখা যায়? [রা. বাে, ‘২১]

উত্তর : মানুষের মধ্যে অন্তঃপ্রজাতিক বৈচিত্র্য দেখা যাওয়ার কারণ জিনগত ভিন্নতার কারণে একই প্রজাতির সদস্যদের মধ্যে বৈচিত্র সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে প্রজাতিতে রেস, জাত, সৃষ্টি হয়। যেমন বিশ্বের সকল মানুষ Homo sapiens প্রজাতিভুক্ত হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এর Negroid, Mongoloid, Coucasoid ইত্যাদি রেস দেখা যায় ।

প্রশ্ন ৭। দ্বিপদ নামকরণ বলতে কী বুঝায়? [রা. বে. ‘১৯, ‘১৭; ব, বাে, ‘২১; দি, বাে, ‘১৫]

উত্তর : নামকরণের আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে কোনাে জীবের নামকরণে প্রথমে গণের নাম এবং পরে প্রজাতির নাম ব্যবহার করে, দুই শব্দের সমন্বয়ে যে নামকরণ করা হয় তাকে দ্বিপদ নামকরণ বলে। সুইডিস বিজ্ঞানী ক্যারােলাস লিনিয়াস ১৭৫৮ সালে দ্বিপদ নামকরণের নীতিমালা প্রবর্তন করেন। যেমন মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo sapiens । এক্ষেত্রে Homo হলাে মানুষের গণ-এর নাম এবং sapiens হলাে মানুষের প্রজাতি নামের নির্দেশক।

প্রাণীর বিভিন্নতা  শ্রেণিবিন্যাস অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেসান্স

প্রশ্ন ৮। অপ্রকৃত সিলােমযুক্ত প্রাণী বলতে কী বুঝায়?

উত্তর : যেসব প্রাণী সিলােমবিহীন তবে ভ্ৰণীয় পরিস্ফুটনের সময় অন্তঃস্থ ফাকা স্থানটিকে ঘিরে কখনও কখনও মেসােডার্মাল কোষস্তর অবস্থান করে তাদের সিউডােসিলােমেট প্রাণী বলে। কিন্তু কোষগুলাে কখনও পূর্ণ কোষস্তর বা পেরিটোনিয়াম সৃষ্টি করে ব্লাস্টোসিলকে সম্পূর্ণ বেষ্টন করে না।

প্রশ্ন ৯। অরীয় প্রতিসম প্রাণী বলতে কী বুঝায়? [ঢা. বাে, ‘১৯; সি. বাে, ‘১৯]

উত্তর : যখন কোনাে প্রাণিদেহকে কেন্দ্রীয় অক্ষ বরাবর যে কোনাে তলে সমান অংশে বিভক্ত করা যায় তখন তাকে অরীয় প্রতিসাম্য বলে। এরূপ প্রতিসমতা যেসব প্রাণীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের অরীয় প্রতিসম প্রাণী বলে। যেমন– Cnidaria ও Echinodermata পর্বের অধিকাংশ প্রাণী।

প্রশ্ন ১০। প্রতিসাম্য বলতে কী বুঝায়? (ঢ, বাে, ‘১৫)

উত্তর : প্রতিসাম্য প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাসকরণের অন্যতম একটি ভিত্তি। প্রতিসাম্য বলতে প্রাণিদেহকে কোনাে অক্ষ বা তল বরাবর সদৃশ্য সমান অংশে বিভাজন করার নিয়মকে বুঝায়। প্রাণিদেহে বিভিন্ন ধরনের প্রতিসাম্য লক্ষ করা যায়। যেমন- ১. গােলীয় প্রতিসাম্য, ২.অরীয় প্রতিসাম্য, ৩. দ্বি-অরীয় প্রতিসাম্য, ৪. দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসাম্য এবং ৫. অপ্রতিসাম্য।

প্রশ্ন ১১। ভূণস্তর বলতে কী বুঝায়?

উত্তর : যেসব প্রাণীর যৌন প্রজনন ঘটে তাদের জাইগােট ক্লিভেজ পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে ব্লাস্টোমিয়ার নামক কোষস্তর সৃষ্টি করে যা সজ্জিত হয়ে নিরেট মরুলা ও ফাপা ব্লাস্টুলাতে পরিণত হয় । ব্লাস্টুলা হতে পরবর্তীতে দ্বিস্তরী বা গ্যাস্ট্রলার সৃষ্টি হয় যা, সামগ্রিকভাবে ভ্রূণস্তর বলে বিবেচিত।

প্রশ্ন ১২। দ্বিঅরীয় প্রতিসাম্য বলতে কী বােঝ?

উত্তর : যখন কোন প্রাণিদেহকে উহার মৌখিক-পরাঙ মৌখিক অক্ষ বরাবর দুটি তলে সমানভাবে বিভক্ত করা যায় তখন তাকে দ্বি-অরীয় প্রতিসাম্য বলে। যেমন Ctenophora ও Anthozoa জাতীয় প্রাণীতে এ ধরনের প্রতিসাম্য দেখা যায়।

প্রশ্ন ১৩। ট্যাক্স বলতে কী বুঝ? ঢ বাে, ‘১৭

উত্তর : ট্যাক্সন হচ্ছে শ্রেণিবদ্ধগত একক। যেসব প্রাণী বা প্রাণিগােষ্ঠীকে শ্রেণিকরণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধাপ অর্থাৎ ক্যাটাগরি বা র‍্যাংক-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয় সেসব প্রাণিগােষ্ঠীকে ট্যাক্সন বহুবচনে Taxa বলে। শ্রেণিকরণে ব্যবহৃত প্রতিটি ক্যাটাগরিভুক্ত প্রাণীর জনগােষ্ঠী বা জনগােষ্ঠীবর্গকে একেকটি ট্যাক্সন বলে। যেমন : Animalia, chordata, Mammalia একেকটি ট্যাক্সন।

প্রশ্ন ১৪। শ্রেণিবিন্যাস বলতে কী বুঝ? [রা, বাে, ‘১৬]

উত্তর : আকৃতিগত  প্রকৃতিগত পারস্পরিক সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্যের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট রীতি অনুযায়ী প্রাণিদের রাজ্য, পর্ব, শ্রেণি, বর্ণ, গােত্র, গণ ও প্রজাতিতে দলভুক্ত করার পদ্ধতিকে শ্রেণিবিন্যাস বলে। শ্রেণিবিন্যাসের মাধ্যমে প্রাণিজগৎ সম্পর্কে সহজে ও অল্পসময়ে জ্ঞান অর্জন করা যায় ।

প্রশ্ন ১৫। অগ্রাধিকার আইন বলতে কী বােঝ?

উত্তর : অগ্রাধিকার আইন হলাে কোনাে প্রাণীর একাধিক গণ বা প্রজাতির নাম থাকলে তার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট নাম গ্রহণের নীতিমালা। এ আইন ICZN দ্বারা প্রণীত ও সুনির্দিষ্ট। ইচ্ছামাফিক পরিবর্তন বা রদবদল করা যাবে না। একটি প্রাণীর সে নামই গৃহীত নাম বলে বিবেচিত যেটি প্রথমে বর্ণনা করা হয়। যদি কোনাে গণ বা প্রজাতির একাধিক নাম দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে তার প্রথম বা পুরাতন নামটিই বৈধ হবে। অন্যগুলাে জুনিয়র সিনােনিম হিসেবে বাতিল বলে গণ্য হবে।

Thats why is very important: প্রাণীর বিভিন্নতা  শ্রেণিবিন্যাস অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেসান্স

নন-কর্ডাটা (প্রধান পর্ব পর্যন্ত শ্রেণিবিন্যাস)

প্রশ্ন ১৬। Anthozoa কে দ্বিঅরীয় প্রতিসম প্রাণী বলা হয় কেন?

উত্তর : যখন কোনাে প্রাণীর দেহ লম্বালম্বি অক্ষ বরাবর কেবল দুটি ছেদন তলে সমান দুটি অর্ধাংশে বিভক্ত করা যায় এবং ছেদন তল দুটি পরস্পরের সাথে সমকোণে বিন্যস্ত থাকে। ফলে প্রাণিদেহ ৪টি সমান খণ্ডে বিভক্ত হয় । এরূপ প্রাণীকে দ্বি-অরীয় প্রতিসম প্রাণী বলে। Anthozoa কেও উল্লিখিতভাবে বিভক্ত করা যায় বলে একে দ্বি-অরীয় প্রতিসম প্রাণী বলা হয়।

প্রশ্ন ১৭। ইউসিলােমেটদের অপেক্ষাকৃত উন্নত প্রাণী মনে করা হয় কেন?

উত্তর : ইউসিলােমেট হচ্ছে প্রকৃত সিলােমযুক্ত প্রাণী। কারণ ভ্রূণীয় মেসােডার্মের অভ্যন্তর থেকে গহ্বররূপে সিলেম উদ্ভূত হয় এবং চাপা, মেসােডার্মাল এপিথেলিয়াল কোষে গঠিত পেরিটোনিয়াম স্তরে সম্পূর্ণ বেষ্টিত থাকে। তাই ইউসিলামেটদের অপেক্ষাকৃত উন্নত প্রাণী মনে করা হয় । Mollusca, Arthropola, Chordata প্রভৃতি প্রাণীরা ইউসিলােমেট।

পর্ব-২: নিডারিয়া

প্রশ্ন ১৮। নিডারিয়ানদের দ্বিস্তরী প্রাণী বলা হয় কেন? [কু, বাে, ‘১৭]

উত্তর : যে সকল প্রাণীর জ্বণে দুটি মাত্র কোষস্তর এক্টোডার্ম ও এন্ডােডার্ম নামক স্তর থাকে তাদেরকে দ্বিস্তরীপ্রাণী বলা হয়। Cnidaria পর্বের প্রাণীদের দেহে এক্টোডার্ম ও এন্ডাের্ডার্ম নামক দুটি স্তর বিদ্যমান। এই দুই স্তরের মাঝে অকোষীয় জেলির মতাে মেসােগ্লিয়া নামক স্তর থাকে। যেহেতু Cnidaria পর্বের প্রাণীদের দেহে দুটি স্তর থাকে সে কারণে সকল নিডারিয়ানদের দ্বিস্তরী প্রাণী বলা হয়।

প্রশ্ন ১৯। দ্বিস্তরী  ত্রিস্তরী প্রাণী বলতে কী বােঝায়?

উত্তর : যেসব প্রাণীর ভূণে দুটিমাত্র কোষস্তর যেমন- এক্টোডার্ম ও এন্ডােডার্ম থাকে সেগুলােকে দ্বিস্তরী প্রাণী বা ডিপ্লোব্লাস্টিক প্রাণী বলে। Cnidaria পর্বের সব প্রাণীই দ্বিস্তরী প্রাণী। যেসব পর্বের প্রাণীল ভুণে এক্টোডার্ম, মেসােডার্ম ও এন্ডােডার্ম নামক ৩টি স্তর বিদ্যমান থাকে তাদের ত্রিস্তরী প্রাণী বলে। Annelida, Mollusca, Chordata ইত্যাদি পর্বের প্রাণীরা ত্রিস্তরী।

প্রশ্ন ২০। পরজীবী বলতে কী বুঝ?

উত্তর : যে জীব আজীবন বা জীবনের কোনাে এক বা একাধিক পর্যায়ে জীবনধারণের জন্য ভিন্ন প্রজাতিভুক্ত জীবদেহে বাস করে, তাকে পরজীবী বলে। পরজীবী পােষক দেহ থেকে পুষ্টি ও আশ্রয় লাভ করে। পােষকের কিছু না কিছু ক্ষতি করে। পােষকদেহে জীবনযাপনের জন্য দেহে অভিযােজন ঘটে। এদের প্রজনন ক্ষমতা অত্যধিক এবং স্বাধীন জীবন-যাপনে অক্ষম হয়।

প্রশ্ন ২১। তারামাছকে অরীয় প্রাণী বলা হয় কেন?

উত্তর : কোনাে প্রাণীর দৈহিক গঠন যদি এমন হয় যে একে একাধিক বার কেন্দ্রীয় অংশ বরাবর সমান ভাগে ভাগ করা যায়, তবে তাকে অরীয় প্রতিসম প্রাণী বলে। তারা মাছের পাঁচটি সমান বাহু আছে, ফলে এটি একাধিকবার সমান ভাগে বিভক্ত হয় । তাই তারামাছকে অরীয় প্রতিসম প্রাণী বলা হয় ।

পর্ব-৭; আথ্রোপােডা

প্রশ্ন ২২। ট্যাগমাটাইজেশন বলতে কী বুঝ? (চ, বাে, ‘১৫)

উত্তর : Arthropoda পর্বভুক্ত প্রাণীর দেহ বাহ্যিকভাবে খণ্ডায়িত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে খণ্ডকগুলাে স্পষ্ট নয় বরং দেহের বিভিন্ন জায়গায় কিছু খণ্ডক একত্রিত হয়ে দেহে কয়েকটি নির্দিষ্ট অঞল গঠন করে। এভাবে সৃষ্ট প্রত্যেকটি অল ট্যাগমা নামে পরিচিত। ট্যাগমা সৃষ্টির মাধ্যমে দেহের অঞ্চলীকরণকে অঞলায়ন বা ট্যাগমাটাইজেশন বলে।

প্রশ্ন ২৩। সিলােম  হিমােসিলের মধ্যে পার্থক্য লেখ?

উত্তর : সিলােম ও হিমােসিলের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেয়া হলাে-

সিলােম হিমােসিল
১. রক্ত সংবহনতন্ত্র গঠন করে না। ১. রক্ত সংবহনতন্ত্র গঠন করে।
২. দেহের অঙ্গে প্রসারিত হয় না। ২. দেহের অগে প্রসারিত হয়।
৩. পুষ্টি পদার্থ পরিবহন করে না । ৩. পুষ্টি পদার্থ পরিবহন করে।
8, দেহপ্রাচীর সিলােমিক তরলপূর্ণ। ৪. দেহপ্রাচীর রক্তপূর্ণ।
প্রশ্ন ২৪। সিলােম বলতে কী বুঝায়?

উত্তর : বহুকোষী ত্রিস্তরী প্রাণিদেহের পৌষ্টিকনালী  দেহপ্রাচীরের মধ্যবর্তী তরলপূর্ণ গহ্বরকে সিলােম বলে। সিলােম হচ্ছে এমন দেহ গহ্বর যা মেসােডার্ম থেকে উদ্ভূত এবং পেরিটোনিয়াম নামক মেসােডার্মাল কোষ স্তরে আবৃত । সিলােম প্রাণী শ্রেণিবিন্যাসের বিশেষ ভিত্তি। সিলােমের ভিন্নতার ভিত্তিতে বহুকোষী ত্রিস্তরী প্রাণীদের তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : (১) অ্যাসিলােমেট (২) সিউডােসিলােমেট এবং (৩) ইউসিলােমেট।

Biology: প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেসান্স

পর্ব : কর্ডাটা (শ্রেণি পর্যন্ত বিন্যাস)

প্রশ্ন ২৫। কর্ডাটা পর্বের সদস্যকে কেন মেরুদণ্ডী বলা হয়? (চ, বাে, ‘২১; সি, বাে, ‘২১)

উত্তর : কর্ডাটা পর্বের সদস্যকে মেরুদণ্ডী বলার কারণ— কর্ডাটা পর্বের অন্তর্ভুক্ত Vertebrata উপপর্বের সদস্যদের মেরুদণ্ডী বলা হয় কারণ এদের দেহ মেরুদণ্ড দিয়ে প্রতিস্থাপিত। এদের নার্ভকড মস্তিষ্ক ও সুষুম্না কাণ্ড দিয়ে আবৃত। এরা অন্যান্য প্রাণীর চাইতে আলাদা কারণ এরা মেরুদণ্ড এর মাধ্যমে সােজা হয়ে চলতে পারে। আর Vertebrata যেহেতু Chordata পর্বের তাই Chordata পর্বের সদস্যকে মেরুদণ্ডী বলা হয়।

প্রশ্ন ২৬। সংযােগকারী যােগসূত্র বলতে কী বােঝ? (সি. বাে, ‘২১)

উত্তর : দুটি নিকটবর্তী পর্ব বা শ্রেণির মধ্যবর্তী দশার জীবাশ্মকে সংযােগকারী যােগসূত্র বলে। Archaeopteryx এ ধরনের একটি জীবাশ্ম । আজ থেকে ১৪ কোটি ৭০ লক্ষ বছর আগে জুরাসিক যুগে এর আবির্ভাব হয়েছিল। এর ধ্বংসাবশেষ জার্মানীর বেভেরিয়ার বিখ্যাত সােলেন হােপেন অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা হয়। এতে রয়েছে পাখি এবং সরিসৃপ উভয় শ্রেণির বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য। সে কারণে Archaeopteryx-কে সরিসৃপ থেকে পাখি উদ্ভবের এক পর্যায় বা সংযােগকারী যােগসূত্র বলে মনে করা হয় ।

প্রশ্ন ২৭। সকল মেরুদণ্ডী কর্ডেট সকল কর্ডেট মেরুদণ্ডী নয়- ব্যাখ্যা কর। [য, বাে, ‘১৯; কু, বাে, ‘১৭]

উত্তর : সকল মেরুদণ্ডীই কর্ডেট। কারণ, কর্ডাটা পর্বের প্রাণীদের সারাজীবন অথবা শুধু চূণাবস্থায় দেহের পৃষ্ঠদেশের মাঝ বরাবর একটি নরম, দণ্ডাকার, দৃঢ় ও অখণ্ডয়িত নটোকর্ড থাকে। শুধু উন্নত কর্ডাটায় এটি মেরুদণ্ড দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। অর্থাৎ শুধু উন্নত কর্ডাটা-প্রাণীদের মেরুদণ্ড থাকে, নটোকর্ড বিশিষ্ট অন্য কর্ডেটদের মেরুদণ্ড থাকে না। এজন্য বলা হয় সকল মেরুদণ্ডী প্রাণী কর্ডেট, সকল কর্ডেট মেরুদণ্ডী নয়।

প্রশ্ন ২৮। Craniata বলতে কী বুঝ? [চ. বাে, ‘১৯]

উত্তর : কর্ডেটের তৃতীয় উপপর্ব হচ্ছে Vertebrata। এটি বিরাট ও বৈচিত্র্যময় প্রাণিগােষ্ঠী কর্ডেটের মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলাে ছাড়াও আরও কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য ধারণ করায় এ উপপর্ব প্রাধান্যকারী গােষ্ঠী হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। অস্থিময় বা তরুণাস্থিময় ক্রেনিয়াম (Cranium) এর ভেতর মস্তিষ্ক অবস্থান করে বলে এ উপপর্বের আরেক নাম Craniatata .

প্রশ্ন ২৯। ডাইফিসার্কাল লেজ বলতে কী বুঝ? (ব, বাে, ‘১৯)

উত্তর : যে সকল প্রাণীর পুচ্ছপাখনার অংশ দুটি একীভূত হয়ে অভিন্ন  নমনীয় পাখনা হিসাবে লেজ ঘিরে অবস্থিত ঐ সকল প্রাণীর লেজকে ডাইফিসার্কাল লেজ বলা হয়। Vertebrata উপপর্বের সার্কোপটেরিজি শ্রেণির প্রাণীদের ডাইফিসার্কাল লেজ থাকে। যেমন-অস্ট্রেলিয়ান লাংফিশ ।

প্রশ্ন ৩০। তিমি মাছ নয় কেন? Dinajppur 2019

উত্তর : তিমি জলে বাস করলেও এরা বাচ্চা প্রসব করে এবং বাচ্চা মাতৃস্তন্য দুগ্ধে লালিত হয়। এ কারণে এটি Mammalia শ্রেণির Vertebrata উপপর্বের স্তন্যপায়ী প্রাণী। যেহেতু সকল মাছ জলে বাস করে এবং ডিম থেকে বাচ্চা দেয় কিন্তু তিমি সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে এবং বাচ্চা স্তন্যপায়ী । এ কারণে তিমিকে মাছ বলা যায় না। [দি, বাে, ‘১৯]

প্রশ্ন ৩১। ইলিশ ত্রিস্তরী প্রাণী কেন?

উত্তর : যেসব প্রাণীর কোষগুলাে বহিঃস্তর, মধ্যস্তর এবং অন্তঃস্তর নামক তিনটি ভূণীয় স্তর নিয়ে গঠিত তাদের ত্রিস্তরী প্রাণী বলে। ইলিশ মাছের দেহস্থ কোষগুলােও বহিঃস্তর, মধ্যস্তর এবং অন্তঃস্তর নামক তিনটি ভ্রূণীয় স্তর নিয়ে গঠিত বলে ইলিশ মাছ ত্রিস্তরী প্রাণী।

Biology 2nd Paper: প্রাণীর বিভিন্নতা  শ্রেণিবিন্যাস অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেসান্স

উপপর্ব-১: ইউরােকর্ডাটা

প্রশ্ন ৩২। সাগর ফোয়ারা বলতে কী বুঝায়? [দি, বাে, ‘২১]

উত্তর : Urochordata উপপর্ব প্রায় ২৮০৪টি প্রজাতি নিয়ে গঠিত। এ উপপর্বের প্রাণীদের পৃথিবীর সব সমুদ্র উপকূলে অগভীর পানিতে পাওয়া যায়। এ উপপর্বের কিছু কিছু প্রজাতি সাইফন দিয়ে সজোরে পানি উৎসারিত করে বলে Urochordata উপপর্বের প্রাণীদের সাগর ফোয়ারা বলা হয়।

প্রশ্ন ৩৩। সিউডােসিলােমেট প্রাণী বলতে কী বােঝ?
উত্তর : যেসব প্রাণী সিলােমবিহীন তবে ভূণীয় পরিস্ফুটনের সময় অন্তঃস্থ ফাঁকা স্থানটিকে ঘিরে কখনও কখনও মেসােডার্মাল কোষস্তর অবস্থান করে তাদের সিউডােসিলােমেট প্রাণী বলে। কিন্তু কোষগুলাে কখনও পূর্ণ কোষস্তর বা পেরিটোনিয়াম সৃষ্টি করে ব্লাস্টোসিলকে সম্পূর্ণ বেষ্টন করে না।

প্রশ্ন ৩৪। ইউরােকর্ডাটাকে মেরুদণ্ডী বলা যায় না কেন?

উত্তর : ইউরােকর্ডেটের লার্ভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেবল লার্ভা দশায় এবং লার্ভার লেজ অঞলে নটোকর্ড উপস্থিত থাকে। রূপান্তরের সময় ধীরে ধীরে নটোকর্ডের বিলােপ ঘটে। কিন্তু মেরুদণ্ডে প্রতিস্থাপিত হয় না। অর্থাৎ পরিণত প্রাণীতে মেরুদণ্ড থাকে না। এ কারণেই ইউরােকর্ডাটাকে মেরুদণ্ডী বলা যায় না।

উপপর্ব-৩: ভার্টিব্রাটা

প্রশ্ন ৩৫। Aves শ্রেণির প্রাণীরা উড়তে পারে কেন?

উত্তর : Aves শ্রেণির প্রাণীদের দেহ পালকে আবৃত থাকে এবং অগ্রপদ দুটি ডানায় রূপান্তরিত হয়। তাছাড়া এদের দেহের অস্থিসমূহ হালকা ও বায়ুপূর্ণ থাকায় Aves শ্রেণির প্রাণীরা উড়তে পারে।

প্রশ্ন ৩৬। ইঁদুরকে কেন স্তন্যপায়ী প্রাণী বলা হয়?

উত্তর : যেসব প্রাণীর ত্বকে ঘর্মগ্রন্থি, তৈলগ্রন্থি ও স্তনগ্রন্থি বিদ্যমান, পূর্ণাঙ্গ স্ত্রী প্রাণীতে স্তনগ্রন্থি কার্যকর থাকে, নিষেক অভ্যন্তরীণ, বাচ্চা প্রসব করে এবং শাবকরা মাতৃদুগ্ধ পান করে তাদেরকে স্তন্যপায়ী প্রাণী বলে । ইঁদুর লােম দ্বারা আবৃত, বাচ্চা প্রসব করে এবং শাবকরা মাতৃদুগ্ধ পান করে। এজন্য ইদুরকে স্তন্যপায়ী প্রাণী বলা হয় ।

প্রাণীর বিভিন্নতা এবং শ্রেণিবিন্যাস অনুধাবনমূলক প্রশ্ন  উত্তর সাজেসান্স and click