ওজন কমাতে হাঁটার ‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ কতটা সাহায্য করে
ওজন কমাতে হাঁটার ‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ কতটা সাহায্য করে

‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ কি?
‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ একটি অভিনব হাঁটার পরিকল্পনা, যা আপনাকে শরীরের ওজন কমাতে ও সুস্থতার দিকে ধাবিত হতে সহায়তা করতে পারে। এই চ্যালেঞ্জের মূল উপাদান হলো ৬ মিনিট হাঁটা, ৬ দিনের জন্য মোট দিন দায়িত্বরূপ কার্যক্রম পালন করা এবং সপ্তাহে ৬ দিন এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া। চলমান সময়ের মধ্যে এই কৌশলটি নিজেকে সচেতন রাখতে এবং দৈনন্দিন শারীরিক কার্যকলাপের সঙ্গে বৃদ্ধি করতে সহায়ক।
এই চ্যালেঞ্জের উদ্দেশ্য হলো স্বল্পমেয়াদী কিন্তু কার্যকরী একটি হাঁটা রুটিন তৈরি করা। ৬ মিনিটের হাঁটার মধ্যে থাকা অবস্থায়, ব্যক্তি দ্রুতগতিতে হাঁটতে পারেন, যা দেহের হার্ট রেট বাড়াতে, ক্যালোরি বার্ন করার জন্য সহায়ক এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতির পথে সহায়তা করতে সক্ষম। এই সময়ের পর, ৬ দিনের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী দিনের এই হাঁটার অভ্যাস চালিয়ে যেতে হবে, যা সাধারণত সপ্তাহের কর্মদিবসগুলির মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জের বৈশিষ্ট্য হল, এটি একজন মানুষের সার্বিক জীবনের পরিবর্তন করার সুযোগ দেয়। এই চ্যালেঞ্জের সময়, ব্যক্তি শুধু শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা নয়, বরং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে, নিজের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে এবং একটি স্বাস্থ্যকর রুটিন তৈরিতে সহায়ক হতে পারে। এইভাবে, ‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ দৈনন্দিন জীবনধারায় কতটা ভূমিকা রাখতে পারে সেটি স্পষ্ট হয়।
শারীরিক সুস্থতার উপকারিতা
হাঁটা আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্য একটি সহজ কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ। নিয়মিত হাঁটার মাধ্যমে অনেকগুলি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। প্রথমত, হাঁটা আমাদের শরীরের ক্যালোরি বার্ন করতে সহায়তা করে। যখন আমরা হাঁটছি, তখন আমাদের শরীর চর্বি ও কার্বোহাইড্রেটকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। ফলে শরীরে একাধিক স্বাস্থ্যগত সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়।
দ্বিতীয়ত, হাঁটা আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত হাঁটা রোগ প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করতে পারে, বিশেষ করে হৃদরোগের বিরুদ্ধে। ৩০ মিনিট ধরে প্রতিদিনের হাঁটা আমাদের হৃদযন্ত্রকে আরও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এ ছাড়া, এটি কোলেস্টেরল স্তরের উন্নতিতে সহায়ক।
তৃতীয়ত, হাঁটা সাধারণ ফিটনেসের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি আমাদের পেশীর স্ট্যামিনা বাড়ায় এবং শরীরের নমনীয়তা উন্নীত করে। নিয়মিত হাঁটলে শরীরের উপরের অংশের শক্তি বৃদ্ধি পায়, যা আমাদের অন্যান্য শারীরিক কার্যকলাপের জন্য প্রস্তুত করে। হাঁটার মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যও উন্নত হয়, কারণ এটি আমাদের মেজাজ উন্নত করতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক।
সার্বিকভাবে, হাঁটার '৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ' যোগ করে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আমাদের শারীরিক সুস্থতা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করে। এই চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করে হাঁটার মাধ্যমে প্রাপ্ত উপকারিতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতার উপর গুরুত্ব দেয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
মনোভাব ও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব
হাঁটাহাঁটি, বিশেষ করে ‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’, অর্থাৎ সপ্তাহে ছয় দিন, প্রতিদিন ছয়টি কিলোমিটার হাঁটা, শুধুমাত্র শারীরিক স্বাস্থ্যটাকেই উন্নত করে না, বরং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও এক প্রভাবশালীরূপে কাজ করে। নিয়মিত হাঁটার ফলে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা মোকাবেলার একটি কার্যকরী উপায় হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে শরীরের মধ্যে আরও বেশি এন্ডোরফিন উৎপাদিত হয়, যা একটি প্রাকৃতিক অনুভূতি উজ্জীবক। এতে করে মানুষ অধিক আনন্দ অনুভব করে এবং মানসিক চাপের প্রভাব হ্রাস পায়।
এছাড়া, হাঁটার ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। দর্শন এবং চিন্তা শক্তির মধ্যে স্বচ্ছতা ও সমন্বয় তৈরির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া উন্নত হয়। সক্রিয় শরীরসচেতনতা, যা হাঁটার মাধ্যমে অর্জিত হয়, মানসিক দৃঢ়তা বাড়াতে সহায়তা করে। এই সময়ের মধ্যে, যখন মানুষ প্রকৃতির মধ্যে হাঁটছে, এটি উত্সাহের মাধ্যমে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং সমস্যাগুলি সমাধানে সহযোগিতা করে।
হাঁটার অভ্যাস স্থায়ী হলে, জীবনের প্রতিদিনের চাপ মোকাবেলা করা আরও সহজ হয়। এটি মানসিক অবস্থার উন্নতিতে সহায়তা করে, যা দীর্ঘমেয়াদে সুখী এবং স্বাস্থ্যকর অবস্থান তৈরি করে। ভাবনাগুলির মধ্যে ফোকাস ও স্থিরতা বাড়ানোর ফলে বৃদ্ধির হার খুব দ্রুত হয়। হাঁটা শুধু শরীরকে নয়, বরং মনকেও শক্তিশালী করে। স্বাস্থ্যকর মানসিকতা গড়ে তুলতে এবং শেখার ক্ষমতা বাড়াতে এটি একটি মৌলিক ভূমিকা পালন করে। সুতরাং, হাঁটার গুরুত্ব অতিপ্রয়োজনীয়, যার মাধ্যমে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
চ্যালেঞ্জ সফলভাবে সম্পন্ন করার কৌশল
ওজন কমাতে হাঁটার ‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ সফলভাবে সম্পন্ন করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল অনুসরণ করা যেতে পারে। প্রথমত, সময় নির্ধারণ একটি অপরিহার্য পদক্ষেপ। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে হাঁটা শুরু করা অভ্যাসে পরিণত করার জন্য কার্যকরী। এতে আপনার শরীরে এটি একটি নিয়মিত রুটিন হয়ে যাবে, যা খুবই সহায়ক। সকালের সময় হাঁটার অভ্যাস হল, বিশেষ করে সকালের শুদ্ধ বাতাস উপভোগ করার জন্য, এটি অধিক কার্যকরী হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, সঠিক জুতো নির্বাচন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাঁটা চলার জন্য আরামদায়ক এবং উপযুক্ত ফুটওয়্যার ব্যবহার করলে হাঁটার সময়ে পারফরম্যান্স বৃদ্ধি পায় এবং আঘাতের ঝুঁকি হ্রাস পায়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করেন যে, হাঁটার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা জুতো ব্যবহার করা উচিত, যা সঠিক সমর্থন ও সংক্রমণ প্রতিরোধ করবে।
পরিশেষে, লক্ষ্য স্থিরকরণ অন্য একটি বিকল্প কৌশল। যে উদ্দেশ্যেই হাঁটার চ্যালেঞ্জ শুরু করুন, সেটা স্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, “আমি এক মাসের মধ্যে ৫ কেজি ওজন কমাতে চাই” বা “প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৩০০ মিনিট হাঁটতে চাই”—এমন লক্ষ্য স্থির করলে আপনি নিজেকে আরো অনুপ্রাণিত রাখতে পারবেন। লক্ষ্যগুলি অবশ্যই যতোটা সম্ভব বাস্তবসম্মত ও পরিমাপযোগ্য হতে হবে। এর মাধ্যমে চ্যালেঞ্জের প্রতি প্রতিশ্রুতি বাড়তে পারে এবং এটা আপনার মানসিক দৃঢ়তার জন্য সহায়ক হবে।
জলপান ও পুষ্টির গুরুত্ব
হাঁটার সময় সঠিক জলপান এবং পুষ্টির মিশ্রণ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। হাঁটা, বিশেষ করে ৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জের মতো কার্যক্রম, শরীরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়াম, যা ক্যালোরি পোড়াতে এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সহায়তা করে। তবে, কার্যকর ফলাফল পেতে হলে সঠিক পুষ্টির চাহিদা এবং যথাযথ জলপানের অভ্যাস মেনে চলা অপরিহার্য।
শারীরিক কার্যকলাপের সময়ে শরীরের জলীয় প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। হাঁটার ফলে শরীর তাপ উৎপন্ন করে এবং পানি বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট অগ্রসর হয়। ফলস্বরূপ, শরীর যেন সঠিকভাবে কাজ করতে পারে এবং ক্লান্তি অনুভব না হয়, সেজন্য হাইড্রেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা, শরীরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং পুষ্টির শোষণ বাড়ায়।
এছাড়াও, পুষ্টির দিকে নজর দিতে হবে। সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে, যা শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে এবং নিয়মিত হাঁটার ফলে উৎপন্ন ক্যালোরি বার্ন করার জন্য সহায়ক। বিভিন্ন ধরনের খাদ্যগ্রুপ, যেমন প্রোটিন, মিষ্টি কার্বোহাইড্রেট এবং ভালো চর্বির সমন্বয় স্বাস্থ্যকর ওজন কমাতে সাহায্য করে। আরো গুরুত্বপূর্ণ হলো, পর্যাপ্ত ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান গ্রহণ করা উচিত যা হাঁটার সময় শরীরের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
সঠিক জলপান এবং পুষ্টি নিশ্চিত করলে, ৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে স্থায়ী ওজন কমানোর লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হওয়া সম্ভব। স্বাস্থ্যকর খাওয়া এবং নিয়মিত জলপান চলাকালীন শরীরের ভালো অবস্থান নিশ্চিত করে, যা এই আন্দোলনের সময় ফলস্বরূপ অনেক বড় ঐশ্বর্যে পরিণত হতে পারে।
অন্যান্য ফিজিক্যাল একটিভিটি ও তুলনা
ওজন কমাতে বিভিন্ন ফিজিক্যাল একটিভিটি করা যায়, এবং হাঁটা এই খেলাধুলার মাঝে একটি সাধারণ এবং সাশ্রয়ী পদ্ধতি। তবে, হাঁটার কার্যকারিতা তুলনায় দৌড়ানো, সাইক্লিং, এবং জিমে ওজন তোলা অন্যান্য কার্যকারিতার ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য। প্রথমত, দৌড়ানোর সময় দেহে বেশি ক্যালোরি পোড়ানো যায়, কারণ এটি উচ্চ তীব্রতা সম্পন্ন কাজ। সাধারণত, দৌড়াতে গেলে প্রতি ঘণ্টায় כמעט ৬০০-৮০০ ক্যালোরি বার করে দিতে পারে, যা হাঁটার তুলনায় অনেক বেশি।
অন্যদিকে, সাইক্লিং একটি দুর্দান্ত কার্ডিওভাসকুলার একটিভিটি, যা হাঁটার তুলনায় নিতান্তই ভিন্ন। সাইক্লিংয়ে শরীরের নিম্নাংশ বিশেষভাবে সক্রিয় থাকে এবং এটি হাঁটার তুলনায় আরও অনেক শক্তি প্রয়োগ করে। এটি একজন ব্যায়ামকারীকে দীর্ঘ সময় ধরে চালানোর সুযোগ দেয় এবং ফলে সাইক্লিংটি কিছু ক্ষেত্রে হাঁটার মতো স্বাস্থ্যকর হতে পারে।
জিম এক্সারসাইজের মধ্যে নানা ধরনের ভারী ওজন তুলা অন্তর্ভুক্ত আছে, যা পেশি নির্মাণে বিশেষভাবে কার্যকর। এই পদ্ধতিতে দেহের বিভিন্ন পেশির গঠন সঠিকভাবে পরিশ্রমের মাধ্যমে করা হয়, যা ঘরে বসে হাঁটার তুলনায় সঠিকভাবে কাজ করে। এতে মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত সংকোচনের মাধ্যমে আরো ক্যালোরি পোড়ানো হয়। তবে, জিমে যাওয়া অনেকের জন্য জটিল হতে পারে এবং সময়সাপেক্ষ।
সবগুলো পদ্ধতির সুবিধা-অসুবিধা অনুযায়ী, হাঁটা যে সহজ, সাশ্রয়ী এবং ব্যক্তি যেকোনো সময় করতে পারে, তা বোঝা যায়। যদিও হাঁটা তুলনায় অন্যান্য ফিজিক্যাল একটিভিটির ফলে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব, তবে তাদের প্রচেষ্টা এবং সময়ের প্রয়োজন বেশি হতে পারে। এটি ব্যক্তির স্বাস্থ্যের ও শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে যে কোন পদ্ধতি তার জন্য সবচেয়ে উপযোগী।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার শেয়ার
‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ সম্পন্ন করার সময় অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করা অনেকের কাছেই একটি মূল্যবান প্রাপ্তি। এই চ্যালেঞ্জের আওতায়, বিভিন্ন ব্যক্তিরা নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রতিদিন ৬টি মিনিটের তিনটি হাঁটার সেশন সম্পন্ন করেছেন। এ ধরনের অভিজ্ঞতা, যা শুধুমাত্র শারীরিক স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক নয়, বরং মানসিক এবং সামাজিক কল্যাণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একমাত্র হাঁটার মাধ্যমেই তারা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে দৈনন্দিন জীবনের স্থূলতা কমানো সম্ভব। যেমন, মারিয়া, একজন অফিসের কর্মচারী, জানিয়েছেন, ৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ শুরু করার পর তার শরীরের অবস্থার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। হাঁটার সময় তিনি মনস্তাত্ত্বিক চাপ কমান এবং বৃহত্তর তৃপ্তি অনুভব করেন। উল্লিখিত তথ্য থেকে দেখা যায় যে, একজন সফল অংশগ্রহণকারী হিসাবে তার ৫ কেজি ওজন কমানো সম্ভব হয়েছে।
এছাড়াও, সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে অনেকেই। যেমন, রাহুল একবার বলেছেন, “যদিও প্রথম সপ্তাহে হাঁটার জন্য সময় বের করা কঠিন ছিল, ধীরে ধীরে রুটিনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম।” খুঁজে বের করেছেন সময় ব্যবস্থাপনায় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং হাঁটার ফলে তার খাবারের প্রতি মনোভাব পরিবর্তিত হয়েছে। তিনি এছাড়াও বলেছিলেন, হাঁটার সময় যোগাযোগের সুযোগ লাভ করেছেন, যা কোনো সামাজিক চাপ বা একাকীত্ব কমাতে সাহায্য করেছে।
এই চ্যালেঞ্জের সাথে যুক্ত হয়ে অনুভব করা যায় যে, এটি শুধুমাত্র শারীরিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রেই নয়, বরং সামাজিক সম্পর্ক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হয়। প্রতিটি ষষ্ঠ মিনিটে হাঁটার অংশগ্রহণকারীরা তাদের অভিজ্ঞতা ও অর্জনের মাধ্যমে নির্দেশ করে, এই প্রক্রিয়ায় অধ্যবসায় ও সদাশয়তার গুরুত্ব কেমন।
বন্ধুদের বা পরিবারকে যুক্ত করা
ওজন কমাতে হাঁটার ‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে কেন বন্ধুদের বা পরিবারের সদস্যদের যুক্ত করা উচিত, তা বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক সহযোগিতা এই চ্যালেঞ্জের মূল কাঠামো তৈরি করে এবং এটি বিশেষভাবে সহায়ক হতে পারে। প্রথমত, একসাথে হাঁটলে উপলব্ধি হয় যে মানবিক সম্পর্ক এবং রিলেশন্স তৈরি হয়, যা মানসিক উদ্বেগ ও চাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানো মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, এবং এটি হাঁটার অভ্যাসকে রক্ষণাবেক্ষণ করতে উৎসাহিত করে।
অন্যদিকে, পরিবারের বা বন্ধুদের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধকরণ ও পরিষ্কার লক্ষ্য নির্ধারণ করা সহজ হয়। একসাথে হাঁটার সময়, সবাই নিজেদের প্রতি দায়বদ্ধ হয়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার বন্ধু বা পরিবারের সদস্যরা একই লক্ষ্য নিয়ে হাঁটি, তবে একে অপরকে প্রেরণা দেয়ার সুযোগ বেশি থাকে। এটি সামাজিক সমর্থনের একটি শক্তিশালী অনুভূতি সৃষ্টি করে। প্রথমে, কঠিন মনে হলেও, একত্রে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলে সমস্যাগুলি আগের চেয়ে সহজ হয়ে যায়।
এছাড়াও, দলগত সাফল্য অনুভব করা একজনের ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য একটি বড় উৎসাহ সরবরাহ করে। যখন দেখা যায় যে অন্যরা লক্ষ্য অর্জন করছে অথবা চ্যালেঞ্জ সমাধান করছে, তখন এটি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একটি প্রতিযোগীতামূলক এবং একই সাথে সহযোগী আয়োজনে অনুপ্রেরণা যোগায়। এভাবে, হাঁটার ‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জে’ বন্ধুবান্ধব ও পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে ব্লগারদের ওজন কমানোর চেষ্টা সফল হতে পারে এবং এটি সহজেই আরও আনন্দময় ও ফলপ্রসূ হয়ে ওঠে।
শেষ কথাঃ চ্যালেঞ্জ ও হেপি হেলথ
‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ হল একটি ব্যায়াম পরিকল্পনা যা তিনটি অংশে বিভক্ত: প্রত্যেক দিন ৬ মিনিট হাঁটতে হবে, যা সপ্তাহে ৬ দিন ধরে চালিয়ে যেতে হবে। এ চ্যালেঞ্জটি ওজন কমাতে সহায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। আধুনিক জীবনযাত্রায়, যেখানে শারীরিক কার্যকলাপ কমছে এবং স্থূলতা একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠছে, এ ধরনের সহজ কিন্তু কার্যকরী চ্যালেঞ্জ আমাদের সুস্থ রাখতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত হাঁটলে শরীরের ক্যালোরি পোড়ানোর হার বৃদ্ধি পায়, যা পরোক্ষভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ সম্বন্ধে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এর সাদৃশ্যতা এবং সহজলভ্যতা। যে কেউ এই চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করতে পারে, কারণ এটি খুব কম সময়ে প্রাপ্তি এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ছাড়াই করা সম্ভব। সব বয়সের এবং শারীরিক অবস্থার মানুষরাও এই ব্যায়ামের মাধ্যমে নিজেদেরকে সুস্থ রাখতে পারবেন। এটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী, কারণ হাঁটাহাঁটি করলে এন্ডোরফিন উৎপন্ন হয়, যা মুড উন্নত করতে সহায়তা করে।
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগের সঙ্গে হাঁটার আয়োজন প্রয়োজন হলে এটি কৌশলি হয়ে উঠতে পারে। বন্ধুদের বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাঁটার মাধ্যমে শারীরিক পরিচর্যার পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে আলোচনা করা যায়। এইভাবে, ‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যারা নিয়মিত হাঁটছেন, তারা অনুভব করবেন যে তাদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে এবং জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে।
সর্বশেষে, হেপি হেলথ অর্জনে ‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ একটি কার্যকরী উদাহরণ হতে পারে, যা ফলপ্রসূ ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং ব্যক্তি পরিচালনায় স্বাস্থ্যবান জীবনের দিকে পরিচালিত করে।