হাইড্রা নোট / Hydra Note
হাইড্রা নোট / Hydra Note
১ Hydra দ্বিন্তরী বা ডিপ্লোরাস্টিক প্রাণী অর্থাৎ ভ্রূণাবস্থায় এদের দেহপ্রাচীরের কোষগুলো এক্টোডার্স ও এন্ডোডার্ম নামক দুটি নির্দিষ্ট স্তরে বিন্যস্ত থাকে । পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে স্তরদুটি যথাক্রমে এপিডার্মিস ও গ্যাস্ট্রোডার্মিসে পরিণত হয় ।
২ Cnidaria পর্বের প্রাণিদের (যেমন-Hydra) এপিডার্মিস ও গ্যাস্ট্রোডার্মিসের মধ্যবর্তীস্থানে অবস্থিত জেলির মতো আঠালো, স্বচ্ছ, স্থিতিস্থাপক স্তরকে মেসোগ্লিয়া বা মেসোল্যামিলা বলে ।
৩. Hydra-র দেহের অগ্রপ্রান্তে (ওরাল অংশে) অবস্থিত মোচাকৃচির অংশটিকে হাইপোস্টোম বলে। এর কেন্দ্রভাগে মুখছিদ্র বিদ্যমান ।
৪ Hydra-র হাইপোস্টোমকে ঘিরে ৬-১০টি সরু, লম্বা, ফাঁপা ও সঙ্কোচনশীল কর্ষিকা থাকে যা শিকার ধরা ও চলনে সাহায্য করে।
৫. Hydra-র দেহের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত লম্বাকার একটি গহ্বরের নাম সিলেন্টেরন। এতে খাদ্যের বহিঃকোষীয় পরিপাক এবং খাদ্যসার, শ্বসন ও রেচন পদার্থ পরিবাহিত হয় বলে একে গ্যাস্ট্রোভাস্কুলার গহ্বর বলে ।
৬ সিলেন্টেরনকে অনেক সময় ব্লাইন্ড গাট বা ব্লাইন্ড স্যাক বলা হয় কারণ দেহের উপরিভাগে অবস্থিত একমাত্র মুখছিদ্র দিয়ে এটি খাদ্য গ্রহণ ও বর্জ্য পরিত্যাগ করে ।
৭ এপিডার্মিসের পেশি-আবরণী কোষ এবং গ্যাস্ট্রোডার্মিসের পুষ্টি পেশিকোষের অন্তর্বর্তী ফাঁকাস্থানে গোলাকার, ডিম্বাকার বা ত্রিকোণাকার যে সব কোষ গুচ্ছাকারে অবস্থান করে তাদের ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ বলে । প্রয়োজনে এরা যে কোন ধরনের কোষে পরিণত হতে পারে ।
৮ Cnidaria পর্বের সকল প্রাণীর এপিডার্মিসের পেশি-আবরণী কোষসমূহের মধ্যবর্তীস্থানে অথবা কোষের অভ্যন্তরে যেসব বিশেষায়িত কোষ থাকে তাদের নিডোসাইট বা নেমাটোসাইট বলে । Hydra-র কর্ষিকাতে এদের সংখ্যা সর্বাধিক এবং পাদ-চাকতিতে অনুপস্থিত । খাদ্যধরা, আত্মরক্ষা, চলন ইত্যাদি কাজে নিডোসাইট ব্যবহৃত হয় ।
৯. নিডোসাইটের স্ফীত মধ্যাংশে তরল পদার্থে পূর্ণ ও প্যঁচানো সূত্রক সম্বলিত ক্ষুদ্র থলির নাম নেমাটোসিস্ট ।
১০. নেমাটোসিস্টের ভিতরের তরল পদার্থকে হিপ্লোটক্সিন বলে । এটি বিষাক্ত এবং আমিষ ও ফেলন সমন্বয়ে গঠিত ।
১১. Hydra-র পরিপাক দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। কোষের বাইরে সিলেন্টেরনের মধ্যে খাদ্যবস্তুর পরিপাককে বহিঃকোষীয় পরিপাক এবং ক্ষণপদযুক্ত কোষের অভ্যন্তরে খাদ্য গহ্বরের মধ্যে খাদ্যবস্তুর পরিপাককে অন্তঃকোষীয় পরিপাক বলে ।
১২. Hydra-র বিভিন্ন ধরনের চলনের মধ্যে লুপিং, সমারসল্টিং ও গ্লাইন্ডিং উল্লেখযোগ্য। সমারসন্টিং প্রক্রিয়ায় এরা দ্রুত চলাচল করে ।
১৩. Hydra-তে অযৌন ও যৌন উভয় প্রক্রিয়ায় জনন ঘটে। অযৌন জননের মুকুলোদগম প্রক্রিয়াটি Hydra-র স্বাভাবিক জনন প্রক্রিয়া ।
১৪. কিছুসংখ্যক Hydra-উভলিঙ্গ হওয়ায় সত্ত্বেও স্বনিষেক ঘটাতে পারেনা, কারণ এদের শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয় একই সাথে পরিপক্কতা লাভ করেনা ।
১৫. Hydra-র নিরেট গ্যাস্ট্রেলাটি সিলিয়াযুক্ত বা মুক্তজীবী নয়। এটি মাতৃদেহের সাথে যুক্ত থাকে । এ ধরনের গ্যাস্টুলাকে স্টেরিওগ্যাস্টুলা বলে ।
১৬. Hydra-র স্বাভাবিক মৃত্যু নেই। কারণ Hydra-দেহের কোন অংশ বিনষ্ট হলে এর দেহপ্রাচীরে অবস্থিত ইন্টারস্টিশিয়াল কোষগুলো রূপান্তরিত হয়ে ঐ বিনষ্ট অংশ পুনরুদ্ধার করতে পারে ।
১৭. ১৭৪৪ সালে Trembley সর্বপ্রথম Hydra-র পুনরুৎপত্তি ক্ষমতার কথা উল্লেখ করেন । তিনিই Hydra-র আবিষ্কারক ।
১৮. দুটি ভিন্ন প্রজাতির জীবের মধ্যে যখন এমন সম্পর্ক স্থাপিত হয় যে তাদের ঘনিষ্টভাবে সহাবস্থানের ফলে একে অন্যের কাছ থেকে উপকৃত হয়, তখন এধরনের সম্পর্ককে মিথোজীবিতা বলে । জীব দুটিকে তখন মিথোজীবী বা সিমবায়োন্ট বলা হয় ।
১৯. Chlorohydra viridissima নামক সবুজ হাইড্রা ও Zoochlorella নামক এককোষী শৈবাল মিথোজীবিতার প্রকৃত উদাহরণ ।
২০. Hydra-তে শ্রমবন্টন দেখা যায়। দেহের বিভিন্ন কোষ বা অঙ্গ নির্দিষ্ট শ্রমবন্টন দ্বারা Hydra-র দেহের সামগ্রিক কাজ সম্পন্ন করে ।
আরো পড়ুনঃ
এই হাইড্রা নোট / Hydra Note ছাড়াও আরো দেখুন