মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র): শিক্ষার্থীরা তোমাদের বাংলা গদ্য অংশ মানব-কল্যাণ সর্বশেষ বোর্ড প্রশ্ন উত্তরসহ এখানে দিয়েছি। আশাকরি তোমরা এখান থেকে প্রস্তুতি ও পরীক্ষার ধারণা নিতে পারবে।

মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)
মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন অনুশীলন

অন্য রকম বন্ধু ৭২ বছর বয়সী ভেলরি কর্মজীবনে লাভ করেছেন অনেক স্বীকৃতিসহ সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি। স্বেচ্ছাসেবা এবং সম্পূর্ণ আপন প্রচেষ্টায় সিআরপি প্রতিষ্ঠা করে তিনি বিশ্বে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণে পঙ্গুত্বের শিকার হাজার হাজার মানুষকে স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরিয়ে আনতে তার গড়া সিআরপি নজিরবিহীন ভূমিকা পালন করছে।

চিরকুমারী ভেলরির জন্ম ব্রিটেনে হলেও তার সব কিছুই যেন বাংলাদেশ। মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করে জীবনের বাকি সময়টা থেকে যান এই বাংলাদেশেই। প্রতিবন্ধী, পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে প্রতিষ্ঠা করেছেন হাসপাতাল, পুনর্বাসন কেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। [ তথ্যসূত্র : দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন– ২৪ মার্চ, ২০২১]

মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

ক. সত্যিকার মানবকল্যাণ কিসের ফসল?
খ. আমরা কোন উত্তরাধিকারকে জীবনে প্রয়োগ করতে পারিনি? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের সঙ্গে কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. “উদ্দীপকের ভেলরি টেইলরের কর্মকাণ্ড এবং ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশা একসূত্রে গাঁথা।”— মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

ক জ্ঞান

সত্যিকার মানবকল্যাণ মহৎ চিন্তা-ভাবনার ফসল।

খ অনুধাবন

আমরা মহৎ প্রতিভাবান ব্যক্তিদের মানবিক চিন্তা ও আদর্শের উত্তরাধিকারকে জীবনে প্রয়োগ করতে পারিনি। ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে লেখক মানবকল্যাণ বলতে আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারিক জীবনের কল্যাণকে বুঝিয়েছেন। মনুষ্যত্ববোধে আঘাত লাগে, মানব-মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কাজকে তিনি মানবকল্যাণ মনে করেননি। কাউকে দান করা বা এক মুষ্টি ভিক্ষা দেওয়াকেও তিনি মানবকল্যাণ হিসেবে ধরেননি।

মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

কারণ তাতে একজনকে করুণা করা হয়, প্রকৃত মানবকল্যাণ সাধিত হয় না। এজন্য তিনি মানুষকে আত্মস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের বৃহত্তর কল্যাণে এগিয়ে আসতে বলেছেন। মহৎ প্রতিভাবান ব্যক্তিরা আত্মস্বার্থের কথা ভুলে গিয়ে মানবতার আদর্শ নিয়ে কাজ করেছেন। তাদের মানবিক চিন্তা ও আদর্শ সত্যিকারের মানবকল্যাণ সাধনের জন্য যথার্থ। অথচ আমরা তা ধারণ বা অনুসরণ করতে পারিনি।

সারকথা : মানুষের মহৎ চিন্তা-ভাবনার মূল কথা হচ্ছে মানবতা, যা মহৎ প্রতিভাবান ব্যক্তিদের মধ্যে ছিল। অথচ আমরা তা জীবনে প্রয়োগ করতে পারিনি।

গ প্রয়োগ

উদ্দীপকটি ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের সত্যিকারের মানবসেবার আলোচনার দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ। আত্মস্বার্থে মগ্ন না থেকে নিজেকে পরোপকারে উৎসর্গ করার মধ্যেই জীবনের সার্থকতা নির্ভর করে। সংকীর্ণ স্বার্থে নিজেকে আবদ্ধ রাখলে জীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

উদ্দীপকে ভেলরি টেইলরের বাংলাদেশে সিআরপি প্রতিষ্ঠা করে মানবসেবায় আত্মনিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তিনি এদেশে । প্রতিবন্ধী  পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে হাসপাতাল, পুনর্বাসন কেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণে পঙ্গুত্বের শিকার হাজার হাজার মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে তার গড়া সিআরপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ভেলরি টেইলরের মানবসেবার এই মহৎ উদ্যোগ ও কর্মকাণ্ড ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের সত্যিকারের মানবসেবার বিষয়টির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এ প্রবন্ধে লেখক মানুষকে স্বার্থ ত্যাগ করে মানুষের বৃহত্তর কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান করেছেন । এর সঙ্গে উদ্দীপকের ভেলরি টেইলরের সেবাধর্মী কর্মকাণ্ডের মিল রয়েছে।

সারকথা : আত্মস্বার্থের কথা ভুলে গিয়ে মানবসেবায় আত্মনিয়োগের যে কথা লেখক এ প্রবন্ধে বলেছেন তার সঙ্গে উদ্দীপকের ভেলরি টেইলরের মানবসেবার মিল রয়েছে

মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

ঘ উচ্চতর দক্ষতা

“উদ্দীপকের ভেলরি টেইলরের কর্মকাণ্ড এবং ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশা একসূত্রে গাঁথা।”- মন্তব্যটি যথার্থ। যুগে যুগে মহৎ ব্যক্তিরা নিঃস্বার্থভাবে পরোপকার করে পৃথিবীতে মানবসেবার অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। আমরা যদি তাঁদেরকে অনুসরণ করে মানবসেবায় আত্মনিয়োগ করি, তাহলে জগতে যথার্থ মানবকল্যাণ সাধিত হবে।

উদ্দীপকে ৭২ বছর বয়সী ভেলরি টেইলরের বাংলাদেশে মানবসেবায় আত্মনিয়োগ করার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশে সিআরপি স্থাপন করে মানবসেবায় এগিয়ে এসে বিশ্বে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগের ক্ষেত্রে তার মহৎ কর্মপ্রচেষ্টার বিষয়টি ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এ প্রবন্ধে লেখক সবাইকে মানবসেবায় এগিয়ে আসতে বলেছেন। ধর্ম-বর্ণ-জাতির দোহাই দিয়ে বিভক্তিকরণ নীতি গ্রহণ না করে তিনি মানুষকে মানবিক হয়ে মানবসেবায় আত্মনিয়োগ করতে বলেছেন। এই চেতনা উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে।

মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে লেখক মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে মানবসেবায় এগিয়ে আসতে বলেছেন। উদ্দীপকের ভেলরি টেইলরের কর্মকাণ্ডে তার প্রতিফলন ঘটেছে। প্রতিবন্ধী ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে তিনি এদেশে হাসপাতাল, পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন করেছেন। মানবকল্যাণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সারকথা : মানবকল্যাণ মানুষের শুভ ও কল্যাণকর চিন্তার প্রতিফলন, এটি জাগতিক মানবধর্ম। উদ্দীপকের ভেলরি টেইলর এবং “মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের লেখক উভয়ই মানবের কল্যাণ প্রত্যাশা করেছেন। এ দিক থেকে তাঁদের প্রত্যাশা একসূত্রে গাঁথা।

প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ৫। উদ্দীপকের বিষয় : জীবন ও জগতের মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা-এর আলোকে প্রণীত।

‘ঐ যে সমস্ত পৃথিবীটা চুপ করে পড়ে রয়েছে ওটাকে এমন ভালোবাসি। ওর এই গাছপালা নদী মাঠ কোলাহল নিস্তব্ধতা প্রভাত সন্ধ্যা সমস্তটা সুদ্ধ দুহাতে আঁকড়ে ধরতে ইচ্ছে করে। মনে হয়, পৃথিবীর কাছ থেকে এমন কি কোনো স্বৰ্গ থেকে পেতুম। স্বর্গ আর কী দিত এই মানুষগুলির মতো আমরা যেসব পৃথিবীর ধন পেয়েছি জানি নে, কিন্তু এমন কোমলতা দুর্বলতাময় এমন সকরুণ আশঙ্কাভরা অপরিণত এমন আপনার ধন কোথা থেকে দিত।

ক. কালের বিবর্তনে আমরা এখন কিসের অংশ?
খ. স্রেফ সদিচ্ছা দ্বারা মানবকল্যাণ সাধিত হয় না কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটিতে ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের কোন ভাবের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. “উদ্দীপকে মানুষ ও মানবতার প্রতি কবির যে অনুরাগ ব্যক্ত হয়েছে তা ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের মানবতাবোধের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর ।

ক জ্ঞান

কালের বিবর্তনে আমরা এখন বৃহত্তর মানবতার অংশ।

খ অনুধাবন

আত্মস্বার্থের মোহে মানুষ অন্ধ থাকার কারণে মানবকল্যাণকে বড় করে দেখে না। তাই স্রেফ সদিচ্ছা দ্বারা মানবকল্যাণ সাধিত হয় না।

. ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে লেখক মানুষকে আত্মস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে, ধর্ম-উপদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে মানুষের বৃহত্তর কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। এখানে মানবকল্যাণের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করা হয়েছে। লেখকের মতে, ব্যক্তি থেকে শুরু করে পরিবার,সমাজ, রাষ্ট্র পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের মর্যাদা, সমৃদ্ধি ও মানবতার উন্নতির জন্য কাজ করাই মানবকল্যাণ। অথচ মানুষ ঐক্যবদ্ধ না হয়ে, একে অন্যের সহযোগী না হয়ে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে চলতে চায়। মানুষের এই দৃষ্টিভঙ্গি পালটাতে হবে। তাই বলা হয়েছে, কেবল সদিচ্ছা থাকলেই মানবকল্যাণ সাধিত হয় না।

সারকথা : মানবতার মুক্তি ও মানুষের উন্নতির জন্য কেবল ধর্ম নয়, ধর্মের সঙ্গে মানবিক বোধের জাগরণ ও বিকাশও প্রয়োজন।

গ প্রয়োগ

মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন  উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

উদ্দীপকটি ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসার ভাবটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। মানুষ মহৎ গুণাবলি অর্জনের মাধ্যমে তার জীবনকে মর্যাদাবান করে তোলে। মহৎ মানুষ মানে শ্রেষ্ঠ মানুষ। পরোপকার মানুষের মানবীয় গুণাবলির মধ্যে অন্যতম। মানুষ পরস্পরকে ভালোবাসার মাধ্যমে পৃথিবীতে শান্তি ও কল্যাণকর সমাজ গড়ে তোলে। উদ্দীপকে মানুষের প্রতি গভীর অনুরাগ ও ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। উদ্দীপকের লেখক পৃথিবীর প্রকৃতি ও পরিবেশকে নিজের জীবনের মতোই ভালোবাসেন। পৃথিবীতে বিদ্যমান গাছপালা, মাঠ-ঘাট, পৃথিবীকে ঘিরে মানুষের যে কোলাহল তা উদ্দীপকের লেখককে মুগ্ধ করেছে। তিনি পৃথিবীর এই অপূর্ব রূপকে স্বর্গের সুখ-ঐশ্বর্যের তুলনায় শ্রেষ্ঠ মনে করেন।

পৃথিবীর প্রতি তাঁর এই মায়া-মমতা, ভালোবাসা, মুগ্ধতা সবকিছুই মানুষকে কেন্দ্র করে। কোমল হৃদয়ের মানুষই তাঁর সবচেয়ে আপন। উদ্দীপকের লেখকের এই অনুভব ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে আলোচিত মানবকল্যাণে লেখকের উপলব্ধির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। লেখক এ প্রবন্ধে মানুষের প্রকৃত কল্যাণের জন্য নিজের মনের ব্যাকুলতা প্রকাশ করেছেন। কল্যাণ বলতে মানুষের সার্বিক উন্নতি ও শান্তিকে বুঝিয়েছেন। তাই আমরা বলতে পারি যে, উদ্দীপটি আলোচ্য প্রবন্ধের মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসার ভাবটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

সারকথা : মানুষের প্রতি মানুষের যে গভীর অনুরাগ ও ভালোবাসা আছে তা উদ্দীপক ও ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে অভিন্নভাবে প্রকাশ পেয়েছে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য অনুভবকারী মানুষ পরস্পরের কল্যাণে এগিয়ে এসে জগতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। উদ্দীপক ও প্রবন্ধ উভয় ক্ষেত্রে তা প্রকাশ পেয়েছে।

মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন  উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

ঘ উচ্চতর দক্ষতা

“উদ্দীপকে মানুষ ও মানবতার প্রতি কবির যে অনুরাগ ব্যক্ত হয়েছে তা ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের মানবতাবোধের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।” মন্তব্যটি যথার্থ। পরের কল্যাণ সাধনের মধ্যেই মানবজীবনের যথার্থ সার্থকতা নিহিত। নিজেকে আত্মস্বার্থে নিয়োজিত না রেখে পরোপকারে উৎসর্গ করার মধ্যেই জীবনের প্রকৃত সাফল্য নির্ভর করে। সংকীর্ণ স্বার্থে নিজেকে আবদ্ধ রেখে মানুষের জীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় । অথচ বিশ্বমানবতার কল্যাণের জন্যই মানুষের জন্ম।

উদ্দীপকে প্রকৃতির মুগ্ধতায় মানুষের কর্মকোলাহলের প্রতি গভীর অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে। উদ্দীপকের লেখক মনে করেন মানুষের জগতের সঙ্গে লেখকের যে সম্পর্ক তা স্বর্গের চেয়েও উত্তম। কারণ তিনি মর্তের মানুষ আর প্রকৃতিকেই বেশি জানেন। স্বর্গের সুখ সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা নেই। স্বর্গ সম্পর্কে মানুষের যে বিশ্বাস আছে তা তাঁর কাছে বাস্তব জগতে ব্যবহারিক জীবনের মতো নয়। বিষয়টি মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধেও অনুরূপভাবে প্রকাশ পেয়েছে। লেখক এখানে আমাদের প্রতিদিনকার ব্যবহারিক জীবনের প্রতিই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।

‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে লেখক সত্যিকার মানবকল্যাণের সংজ্ঞা এবং কীভাবে মানবকল্যাণ সাধিত হয় তা ব্যাখ্যা করেছেন। এখানে আত্মস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে, ধর্মীয় বিশ্বাস-উপদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে মানুষের বৃহত্তর কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান ধ্বনিত হয়েছে। এতে মানুষের প্রতি যে অনুরাগ ও ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে তা উদ্দীপকে প্রতিফলিত মানুষের প্রতি লেখকের ভালোবাসার সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সারকথা : উদ্দীপক ও ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই মানুষের প্রতি যথার্থ মর্যাদাদানের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। মানুষের মর্যাদাবোধ বৃদ্ধি ও মানবিক চেতনার বিকাশের মধ্যে মানবতার মুক্তি, উন্নতি ও কল্যাণ নিহিত থাকে।

এই মানব কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ছাড়াও আরো পড়ুন