প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন । সৃজনশীল ২০২৫-২০২৬

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন । সৃজনশীল ২০২৫-২০২৬
প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন । সৃজনশীল ২০২৫-২০২৬

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন । সৃজনশীল ২০২৫-২০২৬

প্রশ্ন ১

বিশাল প্রাণিজগতকে তাদের জীবনে পৃষ্ঠীয় নিরেট একটি বিশেষ গঠনের উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। ভার্টিব্রেটদের মধ্যে প্রথম উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট দলটি মেরু অঞ্চলসহ পৃথিবীর সমস্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে বিস্তৃত। DH22

ক. প্রজাতি কাকে বলে? 
খ. কেঁচোকে ইউসিলোমেট বলা হয় কেন? 
গ. উল্লিখিত উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট প্রাণীর পর্বগত বৈশিষ্ট্য লেখ। 
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ভিত্তি ব্যতীত প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাসে আরও ভিত্তি ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্লেষণ কর। 

১নং প্রশ্নের উত্তর : 

ক) প্রাণী শ্রেণিবিন্যাসের মূল বা ভিত্তি একক হচ্ছে প্রজাতি। Earnst Mayr (1969) এর মতে “প্রাকৃতিক পরিবেশে কোনো জীবগোষ্ঠী যদি নিজেদের মধ্যে যৌন মিলন ঘটিয়ে জননক্ষম সন্তান উৎপাদনে সক্ষম হয় কিন্তু অন্য কোনো গোষ্ঠীর সাথে প্রজননগতভাবে বিচ্ছিন্ন বা আলাদা থাকে তখন ঐ ধরনের জীবগোষ্ঠীকে প্রজাতি বলে।” যেমনপৃথিবীর সকল মানুষ, বানর, ব্যাঙ, আম, কাঁঠাল গাছ একেকটি প্রজাতির অন্তর্গত। 

খ) কেঁচো অ্যানেলিডা পর্বভুক্ত প্রাণী। এরা ইউসিলোমেট অর্থাৎ প্রকৃত সিলোমযুক্ত। কারণ এদের ভ্রূণীয় মেসোডার্মের অভ্যন্তর থেকে গহ্বররূপে সিলোম উদ্ভূত হয় এবং চাপা, মেসোডার্মাল, এপিথেলিয়াল কোষে গঠিত পেরিটোনিয়াম স্তরে সম্পূর্ণ বেষ্টিত থাকে। ইউসিলোমেটদের অপেক্ষাকৃত উন্নত প্রাণী মনে করা হয়। এ কারণেই কেঁচোকে ইউসিলোমেট বলা হয়। 

গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট প্রাণী হলো পাখি। এরা কর্ডাটা পর্বের অন্তর্ভুক্ত প্রাণী। নিচে কর্ডাটা পর্বের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো-

কর্ডাটা পর্বের প্রাণীদের জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে অথবা সারাজীবন চারটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে। যথা

১. পৃষ্ঠীয় ফাঁপা ও নলাকার স্নায়ুরজ্জু। 

২. স্নায়ুরজ্জুর নিচ দিয়ে প্রসারিত একটি দণ্ডাকৃতির ও স্থিতিস্থাপক নটোকর্ড 

৩. গলবিলীয় ফুলকা রন্দ্র এবং 

৪. পায়ু পশ্চাৎ লেজ। 

চারটি অনুপম বৈশিষ্ট্য ছাড়াও কর্ডাটাদের নিম্নলিখিত সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো বিদ্যমান

১. দেহ ত্রিস্তর বিশিষ্ট, দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম এবং প্রকৃত সিলোমযুক্ত।
২. দেহে অন্তঃখণ্ডায়ন বিদ্যমান। 

৩. রক্ত সংবহনতন্ত্র বদ্ধ প্রকৃতির, হৃৎপিণ্ড অঙ্কীয় এবং হেপাটিক পোর্টালতন্ত্র বিদ্যমান; লোহিতকণিকায় হিমোগ্লোবিন থাকে। 

৪. এন্ডোস্টাইল অথবা থাইরয়েড গ্রন্থি বিদ্যমান এবং পরিপাকতন্ত্রে পাকস্থলি ও অন্ত্র সুনির্দিষ্টভাবে পৃথক। 

ঘ) উদ্দীপকেউল্লিখিত পৃষ্ঠীয় নিরেট একটি বিশেষ গঠন বলতে নটোকর্ডকে বুঝানো হয়েছে। নটোকর্ডের উপস্থিতির ভিত্তিতে প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাসের কথা বলা হয়েছে। এটি ব্যতীত প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাসে আরো বিভিন্ন ধরনের ভিত্তি ব্যবহার করা হয়েছে। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো-

কিছু সুস্পষ্ট ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে প্রাণীদের শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। যেসব বৈশিষ্ট্যকে প্রাধান্য দিয়ে প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস করা হয় সেসব বৈশিষ্ট্যই প্রাণী শ্রেণিবিন্যাসের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত। প্রাণী শ্রেণিবিন্যাসের প্রধান ভিত্তিসমূহ হলো-

১. সংগঠন মাত্রা,
২. প্রতিসাম্য, 
৩. খণ্ডকায়ন, 
৪. অঞ্চলায়ন, 
৫. উপাঙ্গ, 
৬. প্রান্তিকতা, 
৭. দেহ অক্ষ ও তল, 
৮. সিলোম, 
৯. ক্লিভেজ ও পরিস্ফুটন, 
১০. ভূণীয় স্তর ও 
১১. মেরুদণ্ড। 

প্রাণীর বিভিন্নতা  শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন

প্রশ্ন ২

নিচের উদ্দীপকের আলোকে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

Nematoda, —– P —– Q —-Arthropoda (RJ22)

ক. জীববৈচিত্র্যের সংজ্ঞা দাও। 
খ. ভ্রূণীয় স্তর বলতে কী বুঝায়? 

গ. উদ্দীপকের ‘P’ চিহ্নিত পর্বের প্রাণীদের শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ কর। 

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত Q ও তার পরবর্তী পর্বের প্রাণীদের প্রধান বৈসাদৃশ্যগুলো পর্যালোচনা কর। 

২নং প্রশ্নের উত্তর : 

অসংখ্য প্রজাতি ও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত জীব নিয়ে আমাদের এ পৃথিবী । পৃথিবীর সকল জীবের বিভিন্নতাকে সম্মিলিতভাবে জীববৈচিত্র্য বা বায়ো-ডাইভারসিটি বলে। 

খ)  যেসব প্রাণীর যৌন প্রজনন ঘটে তাদের জাইগোট ক্লিভেজ পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে ব্লাস্টোমিয়ার নামক কোষস্তর সৃষ্টি করে, যা সজ্জিত হয়ে নিরেট মরুলা ও ফাঁপা ব্লাস্টুলাতে পরিণত হয়। ব্লাস্টুলা হতে পরবর্তীতে দ্বিস্তরী বা ত্রিস্ত্ররী গ্যাস্ট্রুলার সৃষ্টি হয়, যা সামগ্রিকভাবে ভ্রূণস্তর বলে বিবেচিত। 

গ) উদ্দীপকের ‘P’ চিহ্নিত পর্বটি হলো Mollusca । Mollusca পর্বের প্রাণীদের বৈশিষ্ট্যগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-

১. এ পর্বের প্রাণীদের দেহ অপ্রতিসম বা দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম। 
২. দেহ নরম ও অখণ্ডায়িত। 

৩. দেহ সাধারণত এক বা একাধিক খোলক দ্বারা আবৃত। 

৪. দেহের অঙ্কীয় দিকে পেশিযুক্ত পদ বিদ্যমান যা চলন, গর্ত করা বা সাঁতারের জন্য বিভিন্নভাবে অভিযোজিত। 

৫. রক্ত সংবহনতন্ত্র অর্ধযুক্ত ধরনের অর্থাৎ রক্তনালি ও হিমোসিল উভয়ই থাকে। 

৬. ফুলকা বা ম্যান্টল পর্দা দ্বারা শ্বসন সম্পন্ন হয়, স্থলচরদের ক্ষেত্রে পালমোনারি থলির বিকাশ ঘটে। 

৭. রক্তে হিমোসায়ানিন ও অ্যামিবোসাইট কণিকা থাকে। 

৮. মলাস্কাজাতীয় প্রাণী ভিন্ন লিঙ্গবিশিষ্ট এবং ডিম পাড়ে। 

ঘ) উদ্দীপকের ‘Q’ চিহ্নিত পর্বটি হবে Annelida ।  Annelida ও তার পরবর্তী পর্ব অর্থাৎ Arthropoda পর্বের প্রাণীদের প্রধান বৈসাদৃশ্যগুলো পর্যালোচনা করা হলো

Annelida 

১. নরম দেহ বিশিষ্ট প্রাণী। 

২. চলন অঙ্গ সিটা অথবা প্যারাপোডিয়া। 

৩. রেচন অঙ্গ নেফ্রিডিয়া। 

৪. রক্ত সংবহনতন্ত্র বন্ধ প্রকৃতির। 

৫. উদাহরণ : Metaphire posthuma (কেঁচো), Hirudinaria granulosa (জোঁক)। 

Arthropoda
১. দেহ কাইটিন নির্মিত শক্ত বহিঃকঙ্কাল বিশিষ্ট প্রাণী। ২. চলন অঙ্গ সন্ধিযুক্ত পা 

৩. রেচন অঙ্গ ম্যালপিজিয়ান নালি। সবুজ গ্রন্থি, কক্সাল গ্রন্থি অথবা সিলোম নালি। ৪. রক্ত সংবহনতন্ত্র যুক্ত প্রকৃতির। 

৫. উদাহরণ : Macrobrachium rosenbergii (চিংড়ি), Papilio demoleus (প্রজাপতি)। 

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন

প্রশ্ন ৩ 

পর্ব ‘x’ = সকল প্রাণী সামুদ্রিক 
ও পর্ব ‘Y’ = কৃমিজাতীয় এবং অধিকাংশ পরজীবী 
পর্ব ‘Z’ = কৃমিজাতীয়, কেউ কেউ মুক্তজীবী এবং কেউ কেউ পরজীবী। JS22

ক. প্রজাতি কী? 
খ. দ্বি-অরীয় প্রতিসাম্য বলতে কী বুঝ? 
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পর্ব ‘X’ এর বৈশিষ্ট্যগুলো লেখ। 
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘Y’ ও ‘Z’ পর্ব দুটির মধ্যে কোনটি উন্নত? বিশ্লেষণ কর। 

৩নং প্রশ্নের উত্তর : 

ক)  প্রাণী শ্রেণিবিন্যাসের মূল বা ভিত্তি একক হচ্ছে প্রজাতি। Earnst Mayr (1969) এর মতে “প্রাকৃতিক পরিবেশে কোনো জীবগোষ্ঠী যদি নিজেদের মধ্যে যৌন মিলন ঘটিয়ে জননক্ষম সন্তান উৎপাদনে সক্ষম হয় কিন্তু অন্য কোনো গোষ্ঠীর সাথে প্রজননগতভাবে বিচ্ছিন্ন বা আলাদা থাকে তখন ঐ ধরনের জীবগোষ্ঠীকে প্রজাতি বলে।” যেমনপৃথিবীর সকল মানুষ, বানর, ব্যাঙ, আম, কাঁঠাল গাছ একেকটি প্রজাতির অন্তর্গত। 

খ)  কোনো প্রাণিদেহে যখন কোনো অঙ্গের সংখ্যা একটি কিংবা একজোড়া হওয়ায় অনুদৈর্ঘ্য অক্ষ বরাবর শুধু দুটি তল পরস্পরের সমকোণে অতিক্রম করতে পারে। ফলে ঐ প্রাণিদেহ ৪টি সদৃশ ও অংশে বিভক্ত হতে পারে। এ ধরনের প্রতিসাম্য হচ্ছে দ্বি-অরীয় প্রতিসাম্য । Ctenophora জাতীয় প্রাণীর দেহ যেমন- Ceoloplana  মৌলিকভাবে অরীয় প্রতিসম হলেও ২টি কর্ষিকা থাকায় এরা দ্বিঅরীয় প্রতিসম প্রাণী 


গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত পর্ব ‘X’ হলো Echinodermata পর্ব। নিচে Echinodermata পর্বের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো-

১. পূর্ণাঙ্গ প্রাণী পণঅরীয় প্রতিসম, অখণ্ডকায়িত, তারকাকার, গোলাকার, চাকতির মতো অথবা লম্বাকৃতির, কিন্তু লার্ভা দশায় দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম 

২. দেহ কণ্টকময়, স্পাইন ও পেডিসিলারি নামক বহিঃকঙ্কালযুক্ত। 

৩. দেহ মৌখিক ও বিযৌখিক তলে বিন্যস্ত; যৌখিক তলে পাঁচটি অ্যাম্বুলাকাল খাদ (মুখছিদ্রের পাঁচটি কোণা থেকে প্রতিটি বাহুর অঙ্কীয় মধ্যরেখা বরাবর অগভীর খাঁজ) উপস্থিত। 

৪. দেহের ভিতরে সিলোম থেকে সৃষ্ট অনন্য গড়নের পানি সংবহনতন্ত্র রয়েছে। এর সংশ্লিষ্ট নালিকা পদ বা টিউব ফিট এদের চলন অঙ্গ। এ তন্ত্রটি চলন ছাড়াও শ্বসন, খাদ্য আহরণেও সাহায্য করে। 

৫. রক্ত সংবহনতন্ত্র অনুপস্থিত তবে হিমাল ও পেরিহিমালতন্ত্র সংবহনতন্ত্রের কাজ করে। 

৬. রেচনতন্ত্র নেই। 

৭. ত্বকীয় ফুলকা, নালিকা পা বা শ্বসনবৃক্ষ ইত্যাদি দিয়ে শ্বসন সম্পন্ন হয়। 

৮. একলিঙ্গ প্রাণী; নিষেক বাহ্যিক; জীবনচক্রে মুক্ত সাঁতারু বাইপিনারিয়া, অরিকুলারিয়া, অফিউকিটাস কিংবা একাইনোকিটাস ·লার্ভা বিদ্যমান । 

৯. সকল সদস্যই মুক্তজীবী সামুদ্রিক; এদের কোনো পরজীবী সদস্য নেই। 

ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘Y’ ও ‘Z’ পর্ব দুটি হলো যথাক্রমে Platyhelminthes , Nematoda । Platyhelminthes ও Nematoda  পর্বের মধ্যে কোনটি উন্নত তা নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
Platyhelminthes পর্বের বৈশিষ্ট্য : 

১. দেহ নরম, দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম ও পাতা বা ফিতার মতো পৃষ্ঠ অঙ্কীয়ভাবে চাপা। 

২. দেহত্বক সিলিয়াযুক্ত এপিডার্মিস অথবা কিউটিকল-এ আবৃত। 

৩. ত্রিস্তরী প্রাণী হলেও এরা অ্যাসিলোমেট। 

৪. পোষকদেহে সংযুক্তির জন্য অনেকক্ষেত্রে বাহ্যিক চোষক বা হুক অথবা উভয়ই উপস্থিত। 

৫. রক্ত সংবহন ও শ্বসনতন্ত্র অনুপস্থিত। রেচনতন্ত্র শাখা-প্রশাখাযুক্ত রেচননালি ও শিখা কোষ নিয়ে গঠিত। 

৬. অধিকাংশ পরজীবী। কিছুসংখ্যক মুক্তজীবী। 

৭. এই পর্বের প্রাণীরা উভলিঙ্গ 

Nematoda পর্বের বৈশিষ্ট্য : 

১. দেহ নলাকার, দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম ও দুদিক সুচালো। 

২. দেহ নমনীয়; ইলাস্টিন নির্মিত অকোষীয় কিউটিকলে আবৃত। 

৩. পৌষ্টিকনালি সোজা ও শাখাহীন এবং মুখ থেকে পায়ু পর্যন্ত 

প্রসারিত। এ কারণে এসব প্রাণীর দেহকে ‘নলের ভেতর নল’ ধরনের গঠনের মতো দেখায়। 

৪. মুখছিদ্র সাধারণত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ওষ্ঠে পরিবৃত । 

৫. শ্বসনতন্ত্র ও সংবহনতন্ত্র অনুপস্থিত। 

৬. অধিকাংশ প্রাণী একলিঙ্গ, যৌন দ্বিরূপতা দেখা যায় । 

৭. এরা স্থলচর বা জলচর, মুক্তজীবী বা পরজীবী প্রাণী । উপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, Nematoda পর্বের প্রাণীদের বৈশিষ্ট্য Platyhelminthes পর্বের প্রাণীদের বৈশিষ্ট্য অপেক্ষা উন্নত । 

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন

প্রশ্ন:৪


নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ কর : CU22

P Q R
ফিতা কৃমি   গোল কৃমি রুই মাছ

ক. প্রজাতি কী? 

খ. দ্বিস্তরী ও ত্রিস্তরী প্রাণীর পার্থক্য লিখ? 

গ. উদ্দীপকের P,Q ও R প্রাণীদের মধ্যে সিলোম-এর ভিন্নতা রয়েছে ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. উদ্দীপকের R প্রাণীটি Q অপেক্ষা উন্নত বিশ্লেষণ কর।

৪নং প্রশ্নের উত্তর : 

১. প্রাণীর ভূণীয় অবস্থায় এক্টোডার্ম ও এন্ডোডার্ম নামক দুটি কোষস্তর থাকে। 

ক)  প্রাণী শ্রেণিবিন্যাসের মূল বা ভিত্তি একক হচ্ছে প্রজাতি। Earnst Mayr (1969) এর মতে “প্রাকৃতিক পরিবেশে কোনো জীবগোষ্ঠী যদি নিজেদের মধ্যে যৌন মিলন ঘটিয়ে জননক্ষম সন্তান উৎপাদনে সক্ষম হয় কিন্তু অন্য কোনো গোষ্ঠীর সাথে প্রজননগতভাবে বিচ্ছিন্ন বা আলাদা থাকে তখন ঐ ধরনের জীবগোষ্ঠীকে প্রজাতি বলে।” যেমন— পৃথিবীর সকল মানুষ, বানর, ব্যাঙ, আম, কাঁঠাল গাছ একেকটি প্রজাতির অন্তর্গত।

খ) দ্বিস্তরী ও ত্রিস্তরী প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য নিচে উল্লেখ করা হলো-
দ্বিস্তরী প্রাণী ত্রিস্তরী প্রাণী
ভ্রূণীয় অবস্থায় এক্টোডার্ম ও এন্ডোডার্স নামক দুটি কোষস্তর থাকে। ভ্রূণীয় অবস্থায় এক্টোডার্ম, মেসোডার্ম ও এন্ডোডার্স নামক তিনটি কোষস্তর থাকে।
মেসোগ্লিয়া থাকে। মেসোগ্লিয়া থাকে না।
প্রাণীর দেহে নেমাটোসিস্ট থাকে ।  প্রাণীর দেহে কোনো নেমাটোসিস্ট থাকে না। 
দেহ গহ্বর সিলেন্টেরন বা গ্যাস্ট্রোভাস্কুলার গহ্বর।    দেহ গহ্বর সিলোম। 
ভ্রূণস্তরের কোষগুলো পরিণত প্রাণীতে কোন অঙ্গ বা তন্ত্র গঠন করে না।    ভ্রূণস্তরের কোষগুলো পরিণত প্রাণীতে সুনির্দিষ্ট অঙ্গ বা তন্ত্র গঠন করে।   

গ) উদ্দীপকে ছকের P, Q, R-এর প্রাণীগুলো হলো যথাক্রমে ফিতাকৃমি, গোলকৃমি ও রুই মাছ। সিলোমের উপস্থিতি ও গঠনের ভিত্তিতে প্রাণী তিনটি বিভিন্ন গোষ্ঠীতে ভাগ করা যায়। নিচে প্রাণী তিনটির মধ্যে সিলোম-এর ভিন্নতা রয়েছে ব্যাখ্যা করা হলো-
১. ফিতাকৃমি : এটি Platyhelminthes পর্বের প্রাণী। এরা ত্রিস্তরী প্রাণী। ত্রিস্তরী প্রাণীদের ভ্রূণীয় মেসোডার্ম থেকে উদ্ভূত যে ফাঁকা গহ্বরটি দেহ প্রাচীর ও পৌষ্টিকনালির মাঝখানে অবস্থান করে এবং পেরিটোনিয়াম নামক পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে তাকে সিলোম বা পেরিভিসেরাল গহ্বর বলে। পেরিভিসেরাল গহ্বরের উপর ভিত্তি করে ফিতাকৃমি সিলোমবিহীন প্রাণী কেননা সিলোমের পরিবর্তে এপিডার্মিস ও গ্যাস্ট্রোডার্মিসের মধ্যবর্তী স্থান মেসেনকাইমা টিস্যু দ্বারা পূর্ণ থাকে। 

২. গোলকৃমি : এটি Nematoda পর্বের প্রাণী এবং অপ্রকৃত সিলোমেট প্রাণী। অর্থাৎ এদের দেহপ্রাচীর ও পৌষ্টিকনালি মধ্যবর্তী স্থানে গহ্বর থাকে, কিন্তু তা মেসোডার্মাল পেরিটোনিয়াম দ্বারা আবৃত থাকে না বরং বাইরের দিক পেশিস্তর দ্বারা বেষ্টিত থাকে। 

৩. রুই মাছ (ইউসিলোমেট) : রুই মাছ Chordata পর্বের প্রাণী। এরা প্রকৃত সিলোমযুক্ত প্রাণী। কারণ এদের দেহগহ্বর মেসোডার্মাল এপিথেলিয়াল কোষে গঠিত পেরিটোনিয়াম স্তরে সম্পূর্ণ বেষ্টিত থাকে । উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উদ্দীপকের ছকের প্রাণীদের মধ্যে সিলোমের ভিন্নতা রয়েছে। 

ঘ) উদ্দীপকের ‘R’ হলো রুই মাছ, যা Chordata পর্বের Vertebrata উপপর্বের Actinopterygii শ্রেণির মেরুদণ্ডী প্রাণী এবং ‘Q’ হলো গোলকৃমি, যা Nematoda পর্বের অমেরুদণ্ডী প্রাণী। রুই মাছ এবং গোলকৃমির মধ্যে কোনটি উন্নত নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলোগোলকৃমির বৈশিষ্ট্য : গোলকৃমি Nematoda পর্বের অন্তর্ভূত অমেরুদণ্ডী প্রাণী। গোলকৃমির বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-

১. দেহ নলাকার, দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম ও দুদিক সুচালো।
২। দেহ নমনীয়, ইলাস্টিন নির্মিত অকোষীয় কিউটিকলে আবৃত ।
৩। পৌষ্টিক নালী সোজা ও শাখাহীন এবং মুখ থেকে পায়ু পর্যন্ত প্রসারিত। এ কারণে এসব প্রাণীর দেহকে “নলের ভেতর নল” ধরনের গঠনের মতো দেখায়। 

৪. মুখছিদ্র সাধারণত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ওষ্ঠে পরিবৃত।
৫। অধিকাংশ প্রাণী একলিঙ্গ, যৌনদ্বিরূপতা দেখা যায়। 


রুই মাছের বৈশিষ্ট্য : রুই মাছ Chordata পর্বের Vertebrata উপপর্বের Actinopterygii শ্রেণিভুক্ত মেরুদণ্ডী প্রাণী। 

১. এদের অন্তঃকঙ্কাল অস্থিময়।

২. দেহ সাইক্লয়েড আঁইশে আবৃত । 

৩. মাথার দু’পাশে একটি করে ফুলকারন্দ্র অবস্থিত, যা কানকো দিয়ে আবৃত। 

৪ পুচ্ছ পাখনা হোমোসাকাল ধরনের। 
৫. বায়ুথলি বা পটকা থাকে, যা দেহকে পানিতে ভেসে থাকতে সাহায্য করে ও অক্সিজেনের আধার হিসেবেও কাজ করে। 

সুতরাং উপরে আলোচিত গোলকৃমি এবং রুই মাছ উভয়ের বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায় রুই মাছে বিদ্যমান বৈশিষ্ট্যগুলো উন্নত শ্রেণির প্রাণীতে বিদ্যমান। কিন্তু গোলকৃমির বৈশিষ্ট্যগুলো উন্নত প্রাণীতে দেখা যায় না। তাই বলা যায়, গোলকৃমি এবং রুই মাছ উভয়ের মধ্যে রুই মাছ উন্নত। 

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন

প্রশ্ন ৫

নিচের চিত্র দুটি লক্ষ কর : CTG22

ক. ম্যান্টল কী? 

খ. উভচর প্রাণীদেরকে এক্টোথার্মিক প্রাণী বলা হয় কেন? 

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘A’ চিহ্নিত প্রাণী যে পর্বের অধীন ভার শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্যাবলি লেখ। 

ঘ. পোষক দেহে বসবাসের জন্য উদ্দীপকে বর্ণিত ‘B’ চিহ্নিত প্রাণীর মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ করা যায়- উক্তিটির মূল্যায়ন কর। 

৫নং প্রশ্নের উত্তর : 

ক) Mollusca পর্বের প্রাণীদের দেহ এক ধরনের পাতলা আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে, তাকে ম্যান্টল বলে। 

খ) উভচর বা Amphibia প্রাণীদেরকে এক্টোথার্মিক (বা শীতল রক্ত বিশিষ্ট) প্রাণী বলা হয়। কারণ উভচর প্রাণীদের দেহের তাপমাত্রা পরিবেশের তাপমাত্রার সাথে উঠানামা করে। আমরা জানি, উভচর প্রাণীরা লার্ভা দশায় পানিতে এবং পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় ডাঙ্গায় বাস করতে পারে। এজন্য এদের শরীরের তাপমাত্রা ও পরিবেশের তাপমাত্রার সাথে উঠানামা করে, যেমন- ব্যাঙ। 

গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘A’ চিহ্নিত প্রাণীটি হলো Chordata পর্বের  Cephalochordata উপপর্বের অন্তর্ভুক্ত প্রাণী। প্রাণীটি প্রাণীজগতের সবচেয়ে উন্নত পর্ব Chordata-এর বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত। নিচে Chordata পর্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করা হলো-

১. ভ্রূণাবস্থায় বা আজীবন কর্ডেটের পৃষ্ঠ-মধ্যরেখা বরাবর দণ্ডাকার ও স্থিতিস্থাপক নিরেট নটোকর্ড থাকে। উন্নত প্রাণীদের পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় এটি মেরুদণ্ড দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়। 

২. নটোকর্ডের ঠিক উপরে লম্ব অক্ষ বরাবর ফাঁপা নলাকার, স্নায়ুরজ্জু বা নার্ভকর্ড থাকে। মেরুদণ্ডী প্রাণীদের ক্ষেত্রে নার্ভকর্ডটি পরিবর্তিত হয়ে সম্মুখ প্রান্তে মস্তিষ্ক ও পশ্চাতে সুষুম্নাকাণ্ড গঠন করে। 

৩. জীবনের যে কোনো দশায় বা আজীবন কর্ডেট গলবিলের দুপাশে কয়েক জোড়া ফুলকারস্ত্র থাকে। (উন্নত কর্ডেটে ফুলকারন্ধ্রের বিলোপ ঘটে)। 

৪. গলবিলের নিচে এন্ডোস্টাইলি নামে একটি অঙ্গ থাকে যা পরে থাইরয়েড গ্রন্থিতে রূপান্তরিত হয়। 

৫. কর্ডেটে হৃৎপিণ্ড অঙ্কীয় দেশে অবস্থান করে। 

ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত “B” চিহ্নিত প্রাণিটি হলো গোলকৃমি, যা Nematoda পর্বের অন্তর্গত। পোষক দেহে বসবাসের জন্য গোলকৃমির অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় নিচে উক্তিটির মূল্যায়ন করা হলোAscaris বা গোলকৃমি Nematoda পর্বের অন্তর্ভুক্ত কৃমির একটি প্রজাতি যা “ক্ষুদ্রান্ত্রের গোলকৃমি” নামে পরিচিত, যা এক ধরনের পরজীবী কৃমি। এদের একটি প্রজাতি Ascaris lumbricoides মানুষকে আক্রমণ করে এবং অ্যাসকারিয়েসিস রোগের সৃষ্টি করে। গোলকৃমি সাধারণত পরজীবী হিসেবে মানুষের শরীরে বসবাস করে। গোলকৃমির ডিম প্রাণীর মলের সাথে বাহিরে প্রবেশ করে। এই কৃমি দিনে দুই লক্ষ (২,০০০০০) ডিম দেয়। পরিবেশের সংস্পর্শে অর্থাৎ মাটিতে থাকা অবস্থায় ডিম থেকে জাইগোটের তৈরি হয় এবং জাইগোটের ভিতরের ৩টি ধাপে লার্ভার জন্ম হয়। লার্ভা মিশ্রিত খাদ্য বা পানীয়র মাধ্যমে প্রাণী বা মানুষের পাকস্থলিতে আসে।

পাকস্থলি থেকে ক্ষুদ্রান্ত্রে আসে। ক্ষুদ্রান্ত্রে CO2 বেশি থাকার কারণে লার্ভা নিজেই বিভিন্ন এনজাইম যেমনকাইটিনেজ, এস্টারেজ ‘নামক এনজাইম ক্ষরণ করে জাইগোটের শক্ত আবরণটাকে (সিস্ট আবরণ) নষ্ট করে দেয় এবং বাইরে বের হয়ে আসে। গোলকৃমির লার্ভা ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে ক্ষুদ্রান্ত্রের মিউকোসা স্তর ভেদ করে প্রথমে হেপাটিক পোর্টাল সংবহনের মাধ্যমে যকৃতে তারপর পোস্ট ক্যান্ডাল শিরার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডের ডান অলিন্দে যায়। তারপর ডান নিলয় থেকে পালমোনারি ধমনির মাধ্যমে ফুসফুসে যায়। ফুসফুস থেকে অ্যালভিওলাসে প্রবেশ করে। তারপর ট্রাকিয়ায় চলে আসে। ট্রাকিয়ায় আসার ফলে হাঁচি, কাঁশি হয় এবং কফ ও থুথুর মাধ্যমে পুনরায় গিলে ফেললে পাকস্থলিতে প্রবেশ করে। পাকস্থলিতে লার্ভাগুলো পূর্ণাঙ্গ গোলকৃমিতে পরিণত হয় পরে ক্ষুদ্রান্তে আসে। এভাবেই শরীরের ভিতর জীবনচক্র চালায়। 

উপরের আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে, গোলকৃমি পোষক দেহে বসবাসের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে নিজেকে পরিবর্তন করে থাকে। 

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন

প্রশ্ন ৬

শিক্ষক ক্লাসে এমন কিছু প্রাণীর নাম বললেন, যাদের শিখাকোষ, নেফ্রিডিয়া ও মালপিজিয়ান নালিকা আছে। SYL22

ক. প্রজাতি কী? 

খ. অরীয় প্রতিসম প্রাণী বলতে কী বোঝায়? 

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম অঙ্গটি যে পর্বের তার শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ দাও। 

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শেষোক্ত অঙ্গ দুটি যে পর্বের তাদের মধ্যে তুলনা কর। 

৬নং প্রশ্নের উত্তর : 

ক)  প্রাণী শ্রেণিবিন্যাসের মূল বা ভিত্তি একক হচ্ছে প্রজাতি। Earnst Mayr (1969) এর মতে “প্রাকৃতিক পরিবেশে কোনো জীবগোষ্ঠী যদি Fজদের মধ্যে যৌন মিলন ঘটিয়ে জননক্ষম সন্তান উৎপাদনে সক্ষম হয় কিন্তু অন্য কোনো গোষ্ঠীর সাথে প্রজননগতভাবে বিচ্ছিন্ন বা আলাদা থাকে তখন ঐ ধরনের জীবগোষ্ঠীকে প্রজাতি বলে। যেমন পৃথিবীর সকল মানুষ, বানর, ব্যাঙ, আম, কাঁঠাল গাছ একেকটি প্রজাতির অন্তর্গত।

খ) যখন কোনো প্রাণিদেহকে কেন্দ্রীয় অক্ষ বরাবর যেকোনো তলে সমান অংশে বিভক্ত করা যায় তখন তাকে অরীয় প্রতিসাম্য বলে। এরূপ প্রতিসমতা যেসব প্রাণীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের অরীয় প্রতিসম প্রাণী বলে। যেমন- Cnidaria ও Echinodermata পর্বের অধিকাংশ প্রাণী। 

গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম অঙ্গটি হলো শিখাকোষ, যা Platyhelminthes পর্বের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। নিচে Platyhelminthes পর্বের বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ দেওয়া হলো-

বৈশিষ্ট্য : 

১. দেহ নরম, দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম ও পাতা বা ফিতার মতো পৃষ্ঠ অঙ্কীয়ভাবে চাপা। 

২. দেহত্বক সিলিয়াযুক্ত এপিডার্মিস অথবা কিউটিকল-এ আবৃত। ৩. ত্রিস্তরী প্রাণী হলেও এরা অ্যাসিলোমেট। 

৪. পোষকদেহে সংযুক্তির জন্য অনেকক্ষেত্রে বাহ্যিক চোষক বা হুক অথবা উভয়ই উপস্থিত। 

৫. রক্ত সংবহন ও শ্বসনতন্ত্র অনুপস্থিত। রেচনতন্ত্র শাখা-প্রশাখাযুক্ত রেচননালি ও শিখা কোষ নিয়ে গঠিত। 

৬. অধিকাংশ পরজীবী। কিছুসংখ্যক মুক্তজীবী। ৭. এই পর্বের প্রাণীরা উভলিঙ্গ। 

উদাহরণ : Taenia solium (ফিতাকৃমি), Fasciola hepatica (যকৃৎ কৃমি)

ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত শেষোক্ত অঙ্গ দুটি হলো নেফ্রিডিয়া ও মালপিজিয়ান নালিকা, এগুলো যথাক্রমে Annelida ও Arthropoda পর্বের অন্তর্গত। নিচে Annelida ও Arthropoda পর্বের মধ্যে তুলনা করা হলো-

Annelida 

১. নরম দেহ বিশিষ্ট প্রাণী। 

২. চলন অঙ্গ সিটা অথবা প্যারাপোডিয়া। 

৩. রেচন অঙ্গ নেফ্রিডিয়া। 

8. রক্ত সংবহনতন্ত্র বন্ধ প্রকৃতির। 

৫. উদাহরণ: Metaphire posthuma (কেঁচো), Hirudinaria granulosa (জোঁক)। 

Arthropoda

১. দেহ কাইটিন নির্মিত শক্ত বহিঃকঙ্কাল বিশিষ্ট প্রাণী।
২. চলন অঙ্গ সন্ধিযুক্ত পা 

৩. রেচন অঙ্গ ম্যালপিজিয়ান নালি। সবুজ গ্রন্থি, কক্সাল গ্রন্থি অথবা সিলোম নালি।
৪. রক্ত সংবহনতন্ত্র মুক্ত প্রকৃতির। 

৫. উদাহরণ : *(- 31 

Macrobrachium rosenbergii (চিংড়ি), 

Papilio demoleus (প্রজাপতি)। 

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন

প্রশ্ন ৭

চোয়ালের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে ভার্টিব্রাট উপপর্বকে Agnatha ও Gnathostormata অধিশ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। BS22

ক. সিলোম কী? 

খ. প্রতিসাম্যতা বলতে কী বুঝ? 

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম অধিশ্রেণিভুক্ত প্রাণীরা দুটি ভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দ্বিতীয় অধিশ্রেণিভুক্ত প্রাণীদের মধ্যে হূৎপিণ্ডের গঠন সংক্রান্ত ভিন্নতা দেখা যায় বিশ্লেষণ কর।

৭নং প্রশ্নের উত্তর : 

ক)  পৌষ্টিকনালি ও দেহ প্রাচীরের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান, য মেসোডার্মাল পেরিটোনিয়াম দ্বারা আবৃত থাকে তাকে সিলোম বলে। 

খ) প্রতিসাম্য প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাসকরণের অন্যতম একটি ভিত্তি। প্রতিসাম্য বলতে প্রাণিদেহকে কোনো অক্ষ বা তল বরাবর সদৃশ্য সমান অংশে বিভাজন করার নিয়মকে বুঝায়। প্রাণিদেহে বিভিন্ন ধরনের প্রতিসাম্য লক্ষ করা যায়। যেমন— ১. গোলীয় প্রতিসাম্য, ২. অরীয় প্রতিসাম্য, ৩. দ্বি-অরীয় প্রতিসাম্য, ৪. দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসাম্য এবং ৫. অপ্রতিসাম্য। 

গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত Vertebrata উপপর্বের প্রথম অধিশ্রেণিটি হলো Agnatha এবং Agnatha অধিশ্রেণিকে দুটি ভিন্ন গ্রুপ অর্থাৎ দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে হলো Myxini Cephalospidomorphi। এই দুটি শ্রেণির প্রাণীদের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-

শ্রেণি-১ : Myxini এই শ্রেণিভুক্ত মাছগুলো হ্যাগফিশ নামে পরিচিত। এরা সকলেই সামুদ্রিক, স্বাধীনজীবী, বাইন মাছের মত দেখতে।
বৈশিষ্ট্য : 

১. দেহ আঁইশবিহীন, পিচ্ছিল গ্রন্থিযুক্ত ত্বকে আবৃত, পৃষ্ঠীয় পাখনাবিহীন।
২. মুখ প্রান্তে অবস্থিত এবং চারজোড়া কর্ষিকায় পরিবৃত। 

৩. গলবিলের দুই পাশে মোট ৫-১৫ জোড়া ফুলকা রন্ধ্র অবস্থিত। 

৪. হ্যাগফিশের নাসিকা থলি মুখবিবরে উন্মুক্ত। 

৫. পরিপাকতন্ত্র পাকস্থলিবিহীন, অন্ত্রে সর্পিল কপাটিকা থাকে না। ৬. কোনো লার্ভা দশা নেই। 

শ্রেণি-২: Cephalaspidomorphi: এই শ্রেণিভুক্ত মাছগুলো ল্যামপ্রে নামে পরিচিত। 

বৈশিষ্ট্য : 

১. পরিণত ল্যামন্ত্রের দেহ সরু, দেখতে বাইন মাছের মতো, আঁইশবিহীন, একটি বা দুটি পৃষ্ঠীয় পাখনাযুক্ত। ২. মৌখিক চাকতিটি চোষকের ভূমিকা পালন করে। এর চারদিকে কেরাটিনময় দাঁত অবস্থান করে। 

৩. পৃথক ফুলকারন্য্রসহ সাতজোড়া ফুলকা রয়েছে। 

৪. ল্যামপ্লের নাসিকা থলি মুখবিবরে উন্মুক্ত নয়। 

৫. পরিপাকতন্ত্র পাকস্থলিবিহীন, অস্ত্রে সর্পিল কপাটিকা থাকে।
৬. অ্যামোসিট লার্ভা দশা আছে। 

ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত Vertebrata উপপর্বের দ্বিতীয় অধিশ্রেণিটি হলো Gnathostomata। এই অধিশ্রেণিভুক্ত প্রাণীদের মধ্যে হৃৎপিণ্ডের গঠন সংক্রান্ত ভিন্নতা দেখা যায়। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো— বিভিন্ন ধরনের মেরুদণ্ডী প্রাণীর (যেমন- মাছ, উভচর, সরীসৃপ, পাখি ও স্তন্যপায়ী) সমাবেশ দেখা যায় এই অধিশ্রেণিতে। এসব প্রাণীকে ৭টি class বা শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন মেরুদণ্ডী প্রাণীর হৎপিণ্ডের গঠনের তুলনামূলক পর্যবেক্ষণেদেখা যায়, মাছের হৃৎপিণ্ড  দুই প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট ১টি অ্যাট্রিয়াস ও ১টি ভেন্ট্রিকল, উভচরের হৃৎপিণ্ড 

তিন প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট ২টি অ্যাট্রিয়াম ও ১টি ভেট্রিকস, সরীসৃপের। হূৎপিণ্ডে ২টি অ্যাট্রিয়াম এবং অসম্পূর্ণ দ্বিধাবিভক্ত ২টি ভেন্ট্রিকল থাকে। পাখি ও স্তন্যপায়ী হৃৎপিণ্ড ৪ প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট ২টি অ্যাটিয়াম ও ২টি ভেন্ট্রিকল মেরুদণ্ডী প্রাণিদের হূৎপিণ্ডের এ তুলনা থেকে বুঝা যায় যে, বাসস্থান পরিবর্তনের ফলে বিবর্তনের ধারায় মাছের ১ প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট হৃৎপিণ্ড, উভচরের ক্ষেত্রে ৩ প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট এবং স্তন্যপায়ীর ক্ষেত্রে ৪ প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট হৃৎপিণ্ডে পরিবর্তিত হয়েছে। 

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন

প্রশ্ন ৮

গ্রামের পুকুরে গোসল করতে গিয়ে তারেক একটি প্রাণী দেখেছিল। প্রাণীটি আঁইশ এবং পাখনাযুক্ত, কানকো উপস্থিত। বিজ্ঞানের ছাত্র হওয়ায় এ প্রাণীর পাশাপাশি সে আঁইশবিহীন এবং পিচ্ছিল গন্ধিময়। ত্বকবিশিষ্ট, পালকযুক্ত, লোমযুক্ত প্রাণীদের কথাও ভাবছিল। DJ22

ক. শ্রেণিবিন্যাস কী? 

খ. ‘সিউডোসিলোম’ বলতে কী বুঝ? 

গ. তারেকের দেখা প্রাণীটিকে তরুণাস্কিময় মাছের সাথে তুলনা কর।  

ঘ. তারেকের ভাবনার অন্য প্রাণীগুলো ভিন্ন শ্রেণিভুক্ত— যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। 

৮নং প্রশ্নের উত্তর : 

ক)  পারস্পরিক সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে যে পদ্ধতিতে জীবজগতকে গোষ্ঠী বা দলে’ বিন্যস্ত করা হয় তাই শ্রেণিবিন্যাস। – 

খ)  যেসব প্রাণী সিলোমবিহীন তবে ভ্রূণীয় পরিস্ফুটনের সময় অন্তঃস্থ ফাঁকা স্থানটিকে ঘিরে কখনও কখনও যে েজিনাল কোষস্তর অবস্থান করে তাদের সিউডোসিলোমেট প্রাণী বলে। কিন্তু কোষগুলো কখনও পূর্ণ কোষস্তর বা পেরিটোনিয়াম সৃষ্টি করে ব্লাস্টোসিনকে সম্পূর্ণ বেষ্টন করে না। উদাহরণ : Nematoda, Rotifera, Kinorhyncha প্রভৃতি পর্বভুক্ত প্রাণীরা সিউডোসিলোমেট। 

গ) উদ্দীপকে তারেকের দেখা প্রাণীটি হলো অস্থিময় মাছ, যা Actinopterygii শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত এবং তরুণাস্থিময় মাছ হলো Chondrichthyes শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। নিচে তরুণাস্থিময় মাছের সাথে অস্থিময় মাছের তুলনা দেয়া হলো

তরুণাস্থিময় মাছ (Chondrichthyes) ১. দেহ অসংখ্য ক্ষুদ্র প্ল্যাকয়েড ১. নামক সূক্ষ্ম কাঁটার মতো আঁইশে আবৃত । ২. অন্তঃকঙ্কাল তরুণাস্থিময়। 

৩. ৫ – ৭ জোড়া ফুলকারম্ভ অবস্থিত । ৪. ফুলকারন্তু দেহের বাইরে উন্মুক্ত। ৫. পুচ্ছ পাখনা হেটারোসার্কাল। 

অস্থিময় মাছ (Actinopterygii) ত্বক গ্রন্থিময় এবং সাইক্লয়েড বা টিনয়েড ধরনের আঁইশে আবৃত। ২. অন্তঃকঙ্কাল অস্থিময়। ৩. মাথার দু’পাশে একটি করে ফুলকারন্দ্র অবস্থিত। ৪. ফুলকারন্দ্র কানকো দিয়ে আবৃত । 

৫. পুচ্ছ পাখনা হোমোসাকাল বা ডাইফিসার্কাল। ৬. চোয়ালে দাঁত থাকে না। 

৬. চোয়ালে অসংখ্য সারিবদ্ধ দাঁত তাকে । ৭. এদের পটকা অনুপস্থিত। [৭. এদের পটকা উপস্থিত। ৮. এদের অন্তঃনিষেক ঘটে। ৮. এদের বহিঃনিষেক ঘটে। ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত তারেকের ভাবনায় অন্য প্রাণীগুলো হলো যথাক্রমে Amphibia (আঁইশবিহীন ও পিচ্ছিল গ্রন্ধিময় ত্বকবিশিষ্ট), Aves (পালকযুক্ত) এবং Mammalia(লোমযুক্ত) শ্রেণিভুক্ত প্রাণী। 

Amphibia শ্রেণির বৈশিষ্ট্য : 

১. গ্রন্থিময় ত্বকবিশিষ্ট, এক্টোথার্মিক চতুষ্পদী মেরুদণ্ডী প্রাণী। লার্ভা অবস্থায় জলচর, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় জলচর বা স্থলচর। ২. ত্বক মসৃণ, আর্দ্র, গ্রন্থিময়; শ্বসনেও সাহায্য করে। 

৩. অগ্রপদে চারটি ও পশ্চাৎপদে পাঁচটি করে নখরবিহীন আঙ্গুল থাকে। 

৪. লার্ভা দশায় ফুলকা ও পরিণত অবস্থায় ফুসফুস, ত্বক ও মুখবিবরীয় মিউকাস ঝিল্পির মাধ্যমে শ্বসন ঘটে। 

৫. হৃৎপিণ্ড তিন প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট-দুটি অ্যাট্রিয়া এবং একটি ভেন্ট্রিকল । Aves-শ্রেণির বৈশিষ্ট্য : 

১. দেহ পালকে আবৃত । 

২. উড্ডয়ন অঙ্গ হিসেবে অগ্রপদ দুটি ডানায় রূপান্তরিত হয়েছে। 

৩. চোয়াল দাঁতবিহীন চঞুতে পরিণত হয়েছে। 

৪. অস্থিগুলো বায়ুগহ্বরযুক্ত ও হালকা; অনেক হাড় একীভূত হয়েছে । 

৫. ফুসফুসের সঙ্গে পাতলা বায়ুথলি যুক্ত হয়েছে। 

৬. শক্তিদায়ক খাদ্যের দ্রুত বিপাকের জন্য রয়েছে কার্যকর 

পরিপাকতন্ত্র । 

Mammalia-শ্রেণির বৈশিষ্ট্য : 

১. দেহতুক বিভিন্ন গ্রন্থিযুক্ত (ঘর্মগ্রন্থি, সেবাসিয়াস ইত্যাদি) এবং লোম-এ আবৃত । 

২. পরিণত স্ত্রী প্রাণীর কার্যকরী স্তনগ্রন্থি থেকে ক্ষরিত মাতৃদুগ্ধে নবজাতক লালিত হয়। 

৩. বহিঃকর্ণে পিনা ও মধ্যকর্ণে তিনটি ক্ষুদ্রাস্থি থাকে। চোয়াল বিভিন্ন ধরনের দাঁতযুক্ত। 

৪. মাংসল ডায়াফ্রাম বা মধ্যচ্ছদা দিয়ে বক্ষ ও উদর গহ্বর পৃথক থাকে। 

৫. এদের হৃৎপিণ্ড মসৃণ চার প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট এবং এরা সমোষ্ণ শোণিত। 

৬. পরিণত লোহিত রক্তকণিকা নিউক্লিয়াসবিহীন। 

উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যের আলোকে প্রতীয়মান হয় যে, প্রাণীগুলো ভিন্ন শ্রেণিতে অবস্থিত। 

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন

প্রশ্ন ৯

নিচের উদ্দীপকের আলোকে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও-  MN22

ক. সিলোম কী? 

খ. দ্বি-পদ নামকরণ বলতে কী বুঝ? 

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘A’ -এর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর। 

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত C, A এবং B থেকে ভিন্ন বিশ্লেষণ কর।

৯নং প্রশ্নের উত্তর : 

ক) পৌষ্টিকনালি ও দেহ প্রাচীরের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান, যা মেসোডার্মাল পেরিটোনিয়াম দ্বারা আবৃত থাকে তাকে সিলোম বলে। 

খ) নামকরণের আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে কোনো জীবের নামকরণে প্রথমে গণের নাম এবং পরে প্রজাতির নাম ব্যবহার করে, দুই শব্দের সমন্বয়ে যে নামকরণ করা হয় তাকে দ্বিপদ নামকরণ বলে। সুইডিস বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস ১৭৫৮ সালে দ্বিপদ নামকরণের নীতিমালা প্রবর্তন করেন। যেমন মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo sapiens। এক্ষেত্রে Homo হলো মানুষের গণ-এর নাম এবং sapiens হলো মানুষের প্রজাতি নামের নির্দেশক। 

গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘A’ হলো Chordata পর্বের Urochordata উপপর্ব। নিচে Urochordata উপপর্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করা হলো-

১. পরিণত প্রাণীতে নটোকর্ড থাকে না, কিন্তু লার্ভা দশায় কেবল লেজে নটোকর্ড অবস্থিত। 

২. দেহ টিউনিক বা টেস্ট নামক আচ্ছাদনে আবৃত ।

৩. পরিণত প্রাণী নিশ্চল; নিমজ্জিত বস্তুর সঙ্গে আটকে থাকে কিন্তু লার্ভা মুক্ত সাঁতারু। 

৪ গলবিল বৃহৎ থলির মতো, এর প্রাচীরে অসংখ্য ফুলকা ছিদ্র বিদ্যমান থাকে । 

৫. উভলিঙ্গী, জীবনচক্রে ট্যাডপোল নামক লার্ভা দশা বিদ্যমান।

৬. লার্ভার প্রতীপ রূপান্তর ঘটে অর্থাৎ উন্নত বৈশিষ্ট্য হারিয়ে সুন্নত বৈশিষ্ট্য অর্জন করে। 

৭. রক্তসংবহনতন্ত্র মুক্ত ধরনের। হৃৎচক্রের রিভার্স পেরিস্ট্যালসিস দেখা যায় অর্থাৎ রক্তপ্রবাহ প্রতিবার উল্টোদিকে গতিপথ পরিবর্তন করে। 

ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘A’, ‘B’ ও ‘C’ হলো যথাক্রমে Chordata পর্বের তিনটি উপপর্ব Urochordata, Cephalochordata এবং Vertebrata । Vertebrata উপপর্বটি Urochordata এবং Cephalochordata উপপর্ব থেকে উন্নত এবং এরা যে ভিন্ন উপপর্বের অন্তর্ভুক্ত তা এদের বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য থেকে বুঝা যায়। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো-

Urochordata উপপর্ব : 

১. পরিণত প্রাণীতে নটোকর্ড থাকে না, কিন্তু লার্ভা দশায় কেবল লেজে নটোকর্ড অবস্থিত। 
২. দেহ টিউনিক বা টেস্ট নামক আচ্ছাদনে আবৃত। 
৩। ‘পরিণত প্রাণী নিশ্চল; নিমজ্জিত বস্তুর সঙ্গে আটকে থাকে কিন্তু লার্ভা মুক্ত সাঁতারু। 

৪. গলবিল বৃহৎ থলির মতো, এর প্রাচীর-এ অসংখ্য ফুলকা ছিদ্র বিদ্যমান থাকে। 

৫. উভলিঙ্গ জীবনচক্রে ট্যাডপোল নামক লার্ভা দশা বিদ্যমান।

Cephalochordata উপপর্ব : 

১. এদের লার্ভা ও পরিণত প্রাণীতে নটোকর্ড দেহের সম্মুখ থেকে পশ্চাৎ পর্যন্ত প্রসারিত। 

২. এদের সারাজীবন নটোকর্ড বিদ্যমান থাকে। 

৩. গলবিলে ফুলকারন্দ্র থাকে। 

Vertebrata উপপর্ব : 

১. নটোকর্ড কোমলাস্থি বা অস্থি নির্মিত মেরুদণ্ড দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় ।
২. পৃষ্ঠীয় স্নায়ুরজ্জুর সম্মুখপ্রান্ত রূপান্তরিত হয়ে মস্তিষ্ক গঠন করে এবং বাকি অংশ সুষুম্নাকাণ্ডে পরিণত হয়। কঙ্কাল সম্মুখপ্রান্তে পরিবর্তিত হয়ে করোটি গঠনের মাধ্যমে মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখে।
৩.মাছ ও অ্যামফিবিয়ান লার্ভাতে গলবিলীয় ফুলকারন্দ্র থাকলেও পূর্ণাঙ্গ স্থলচর প্রাণীতে এগুলো ইউস্টেসিয়ান নালি, মধ্যকর্ণের গহ্বর, টনসিল, প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি ইত্যাদিতে পরিণত হয়। 

প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সাজেশন